Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus

ট্রেন থেকে নেমে ফের পালানোর চেষ্টায় শ্রমিকেরা

রেল সূত্রে খবর, কয়েক দিন আগেই সাঁইথিয়ায় চলন্ত ট্রেন থেকে নেমে পড়েছিলেন মুম্বই ফেরত ২০ জন পরিযায়ী শ্রমিক।

পিটিআই-এর প্রতীকী ছবি।

পিটিআই-এর প্রতীকী ছবি।

অর্ঘ্য ঘোষ
সাঁইথিয়া শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০২০ ০৩:৫৫
Share: Save:

ট্রেনের গন্তব্য এক স্টেশন। কিন্তু, যত দিন যাচ্ছে, ততই পরিযায়ী শ্রমিকদের মাঝপথে নেমে পালানোর প্রবণতা বাড়ছে। তা সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে স্থানীয় থানার পুলিশ এবং রেলপুলিশকে।

মঙ্গলবার ফের এমন ঘটনার সাক্ষী থাকল সাঁইথিয়া স্টেশন। তামিলনাড়ু থেকে এ দিন বেলা ১১টা নাগাদ একটি শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেন আসে সাঁইথিয়ায়। ট্রেনটি থামার কথা রামপুরহাটে৷ কিন্তু সিগন্যাল না পেয়ে দাঁড়িয়ে যায় সাঁইথিয়ায়। সেই সুযোগে ১৪ জন পরিযায়ী শ্রমিক ট্রেন থেকে নেমে বাড়ি অভিমুখে হাঁটা দেন। শ্রমিকদের মধ্যে ২ জন মুর্শিদাবাদ, ২ জন সাঁইথিয়া এবং বাকিদের বাড়ি ময়ূরেশ্বর থানা এলাকায়৷ পুলিশ ও রেলপুলিশ যৌথ ভাবে তাঁদের ধরে স্বাস্থ্য পরীক্ষার করানোর পরে বাড়ি অভিমুখে রওনা করিয়ে দেয়।

সাঁইথিয়ার বাসিন্দা ওই দুই পরিযায়ী শ্রমিক সুমন দাস, উজ্বল বাগদি বলেন, ‘‘আমাদের কোথায় নামানো হবে, কী ভাবে বাড়ি ফেরানো হবে, রেলের তরফে কিছুই জানানো হয়নি। রাস্তায় খাবারও কম দেওয়া হয়েছে। তাই বাড়ির কাছাকাছি স্টেশনে ট্রেন থামতেই নেমে পড়ি।’’

রেল সূত্রে খবর, কয়েক দিন আগেই সাঁইথিয়ায় চলন্ত ট্রেন থেকে নেমে পড়েছিলেন মুম্বই ফেরত ২০ জন পরিযায়ী শ্রমিক। তাঁদের তাঁদের বাড়ি ময়ূরেশ্বর, রাজনগর, দুবরাজপুর এবং খয়রাশোল থানা এলাকায়। সেই ট্রেনটিরও রামপুরহাটে থামার কথা ছিল। সেখান থেকেই সরকারি ব্যবস্থাপনায় বাড়ি ফেরার কথা। কিন্তু তার আগেই সাঁইথিয়া স্টেশনের কাছে ট্রেনের গতি একটু কমতেই নেমে পডেন ২০ জন। খবর পেয়ে রেলপুলিশ এবং সাঁইথিয়া থানার পুলিশ ছোটাছুটি করে তাঁদের স্টেশনে ফিরিয়ে আনে। গত শনিবার আবার রামপুরহাট স্টেশন চত্বর থেকে পুলিশকে ধাক্কা মেরে পালিয়ে যান মুর্শিদাবাদের শ'দেড়েক পরিযায়ী শ্রমিক। রবিবার সিউড়ির হাটজনবাজার লেভেল ক্রসিংয়ের কাছে চেন টেনে ট্রেন নেমে পড়েন জনা সাতেক পরিযায়ী শ্রমিক। ওই দিনই সাঁইথিয়ার বাতাসপুরে ট্রেনের গতি কমতেই ১৭ জন পরিযায়ী শ্রমিক নেমে হাঁটতে শুরু করেন। এ বারও পুলিশ-রেলপুলিশ দৌড়ঝাঁপ করেও সকলকে ফিরিয়ে আনতে পারেনি।

শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেনগুলির নিদিষ্ট কোনও স্টেশনে দাঁড়ানোর কথা। সেখানে প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার পরে সরকারি উদ্যোগে বাসে করে বাড়ি ফিরিয়ে দেওয়ার কথা স্থানীয় প্রশাসনের। কিন্তু তার আগেই বাড়ির কাছাকাছি স্টেশনে কোথাও চেন টেনে, কোথাও সিগন্যাল না পেয়ে দাঁড়িয়ে যাওয়া কিম্বা গতি কমে আসা ট্রেন থেকে নেমে পালানোর চেষ্টা করছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা।তাঁদের অভিযোগ, তাঁদের অন্ধকারে রেখে অহেতুক বিভিন্ন জায়গায় ঘোরানো হচ্ছে৷ অথচ খাবারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে না। '

প্রশাসনের একটি সূত্রেই জানা যাচ্ছে, পুলিশ-রেলপুলিশের নাগাল এড়িয়ে যাঁরা পালিয়ে যেতে পারছেন, তাঁরা বহু ক্ষেত্রেই স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করে বাড়ি ফেরার পথে বিভিন্ন দোকানে কেনাকাটা, খাওয়াদাওয়া সেরে ফিরছেন। সে ক্ষেত্রে তাঁদের মাধ্যমে সংক্রমণ ছড়ানোর একটা আশঙ্কা থেকেই যায়। পূর্ব রেলের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন বাইরে আটকে থাকায় বাড়ি ফেরার তাগিদটা খুবই বেশি এই পরিযায়ী শ্রমিকদের। তাই কাছাকাছি স্টেশনে ট্রেন থামলেই তাঁদের একাংশ নেমে পড়ছেন। এক মুহুর্তও দেরি সইছে না। কিন্তু এ ভাবে পালানোটা বিপজ্জনক। এ জন্য সর্বস্তরে সচেতনতা বৃদ্ধির পদক্ষেপ করা প্রয়োজন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy