ভূপতিত: এ সব গাছই কাটা হয়েছে। নিজস্ব চিত্র
ক’দিন আগেই শান্তিনিকেতনের শ্যামবাটি ক্যানালের পাশে পরের পর গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে বিতর্ক দানা বেঁধেছিল। সরব হয়েছিলেন পরিবেশপ্রেমীরা। এ বার ‘অন্যায় ভাবে’ কয়েকশো গাছ কেটে ফেলার অভিযোগ উঠল নলহাটি ২ ব্লকের ভদ্রপুর ১ ও ২ গ্রাম পঞ্চায়েত মহেশপুর ক্যানালের পাড়ে। প্রতিবাদে মঙ্গলবার গাছ কাটা বন্ধও করে দিলেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা। তাঁদের ক্ষোভ, তাঁদের লাগানো গাছ না-জানিয়ে এ ভাবে কেন কেটে ফেলা হচ্ছে। ব্লক প্রশাসন গাছগুলি নিয়মবিরুদ্ধ ভাবে কাটার জন্য অনুমতি দিয়েছে বলে অভিযোগ স্বনির্ভর গোষ্ঠী এবং এলাকার মানুষের। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিডিও। বন দফতর অবশ্য জানিয়েছে, গাছ কাটার কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, মহেশপুর ক্যানালের পাড় বরাবর ভদ্রপুর ২ পঞ্চায়েতের মহেশপুর এবং ভদ্রপুর ১ পঞ্চয়েতের গোপালপুর থেকে মনিপুর পর্যন্ত গাছ কাটা হয়েছে। গত পাঁচ দিন ধরে ক্যানাল লাগোয়া সমস্ত গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। গ্রামবাসীরা বাধা দিতে গেলে বলা হয় বিডিও-র নির্দেশে গাছগুলি কাটা হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ভদ্রপুরে ওই ক্যানাল পাড়ে বছর দশেক আগে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা শিশু, সোনাঝুরি, ইউক্যালিপ্টাস গাছ লাগিয়েছিলেন। এ ছাড়াও অনেক পুরনো গাছ আগে থেকেই ছিল। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের দাহি, এখন ক্যানাল সংস্কারের নামে অবৈধ ভাবে গাছ গুলি কাটা হচ্ছে। এরই মধ্যে দু’শোর বেশি গাছ পাঁচ দিন কেটে ফেলা হয়েছে। শুধু দিনের বেলায় নয় রাতেও গাছ কাটা চলছে।
স্বনির্ভর দলের মহিলা পার্থনা কোনাই, সাবিত্রী মাল, আলোক দাস বলেন, ‘‘আমরা প্রশাসনকে মৌখিক ভাবে জানিয়ে কোনও সাড়া না মেলায় বাধ্য হয়ে এ দিন গাছ কাটা বন্ধ করে দিয়েছি। অন্যায় ভাবে এতগুলো গাছ কেন কেটে ফেলা হল? আমরা এই বিষয়ের তদন্ত চেয়ে ডিএম এবং এসডিও অফিসে লিখিত অভিযোগ করব।’’ তাঁদের আরও বক্তব্য, ‘‘আমরা ক্যানালের পাড়ে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লাগিয়ে ছিলাম। গাছগুলোকে বড় করে তুলতে আমাদের অক্লান্ত পরিশ্রম করতে হয়েছে। সেই সব গাছে কোপ পড়তে দেখে মাথা ঠিক রাখতে পারিনি। বাধা দিয়েছি। কার অনুমতিতে গাছগুলি কাটা হল তার তদন্ত হওয়া দরকার।’’
একই সুরে নলহাটি ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সেলিমা খাতুন বলছেন, ‘‘এই বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। সত্যিই এত সংখ্যক গাছ কাটা হয়ে থাকলে এর তদন্ত হওয়া দরকার।’’
বিডিও (নলহাটি ২) হুমায়ুন চৌধুরীর দাবি, ‘‘আইন মেনে বন দফতরকে মৌখিক ভাবে জানিয়ে ক্যানালের দুশো মিটারের মধ্যে কিছু গাছ কাটা হয়। ক্যানেলের দুই দিক সংস্কারের জন্য সেচ দফতর থেকে আমাকে চিঠি করা হয়েছিল। আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি কিছু গাছের জন্য কাজে অসুবিধে হচ্ছে। তাই কিছু ইউক্যালিপ্টাস গাছ কাটার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।’’ প্রসঙ্গত, শ্যামবাটি ক্যানালের ধারের গাছ কাটার ক্ষেত্রেও ক্যানাল সংস্কার ও চওড়া করার যুক্তি দেওয়া হয়েছিল প্রশাসন এবং সেচ দফতরের পক্ষ থেকে।
বন দফতরের রামপুরহাটের রেঞ্জার সুষেন কর্মকার অবশ্য জানিয়ে দিয়েছেন, ভদ্রপুরের ক্যানাল পাড়ের গাছ কাটার জন্য কোনও দফতর তাঁদের থেকে অনুমতি নেয়নি। তাঁর কথায়, ‘‘ঘটনাস্থলে আমাদের আধিকারিক ও কর্মীরা গিয়েছেন। দুশোর বেশি গাছ কাটা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy