কপালে চিন্তার ভাঁজ চওড়া হয়েছে শাসক-বিরোধী দুই শিবিরেরই। ফাইল চিত্র।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন পর্ব শেষ হয়েছে বৃহস্পতিবার। স্ক্রুটিনি ও মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য হাতে রয়েছে আরও বেশ কয়েকটা দিন। কিন্তু পঞ্চায়েতের তিন স্তরেই যে ভাবে নির্দল প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন, তাতে কপালে চিন্তার ভাঁজ চওড়া হয়েছে শাসক-বিরোধী দুই শিবিরেরই। এত সংখ্যক নির্দল কোন দলের, তা খুঁজে বের করার চেষ্টা চালাচ্ছে উভয় শিবিরই।
বাঁকুড়া জেলায় ১৯০টি গ্রাম পঞ্চায়েতে আসন সংখ্যা ৩১২৯টি। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে মনোনয়ন জমা পড়েছে মোট ৮৮৫৫ টি। যার মধ্যে নির্দল হিসাবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন ৪৫২ জন। পঞ্চায়েত সমিতি স্তরেও নির্দল প্রার্থীর সংখ্যা কম নয়। বাঁকুড়া জেলার ২২টি পঞ্চায়েত সমিতির ৫৬১টি আসনের জন্য যে ১৯২০টি মনোনয়ন জমা পড়েছে, তার মধ্যে নির্দল প্রার্থীর সংখ্যা ১১৩ জন। জেলা পরিষদের ৫৬টি আসনের জন্য যে ২৮৩ টি মনোনয়ন জমা পড়েছে, তার মধ্যে নির্দল প্রার্থীর সংখ্যা ১৮। শুক্রবার বাঁকুড়া জেলা প্রশাসনের তরফে মনোনয়নের পরিসংখ্যান প্রকাশিত হতেই এই বিপুল সংখ্যক নির্দল প্রার্থী নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ শুরু করেছে প্রতিটি রাজনৈতিক দল। তবে সব থেকে বেশি মাথাব্যথা হওয়ার কথা শাসক দল তৃণমূলের। অনেকের মতে, এই নির্দল প্রার্থীদের সিংহভাগই তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ অংশ। নির্দল প্রার্থীরা শেষ পর্যন্ত লড়াইয়ের ময়দানে থেকে গেলে সব থেকে বেশি বেগ যে শাসক দলের প্রার্থীদেরই পেতে হবে, তা আড়ালে আবডালেও মেনে নিচ্ছেন জেলার তৃণমূল নেতারা। তবে প্রকাশ্যে কেউই সে কথা স্বীকার করছেন না। তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তথা বড়জোড়ার বিধায়ক অলোক মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সকলেই উন্নয়নের এই কর্মযজ্ঞে সামিল হওয়ার বাসনায় দলীয় টিকিটের দাবিদার ছিলেন। কিন্তু দল এক জনকেই টিকিট দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে কিছু অতিউৎসাহী মানুষ নির্দল হিসাবে মনোনয়ন করেছেন। নির্বাচনের আগেই আমরা তাঁদের সঙ্গে বসে আলোচনা করে সমস্যা মিটিয়ে নেব। আশা করি তাঁরা মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেবেন। কিছু ক্ষেত্রে কৌশলগত কারণে দলীয় নির্দেশেই কর্মীরা নির্দল হিসাবে মনোনয়ন করে রেখেছেন। স্ক্রুটিনিতে দলীয় প্রার্থীর প্রার্থিপদ নিশ্চিত হয়ে গেলেই তাঁরা মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেবেন।’’
নির্দল হিসাবে মনোনয়ন জমা দেওয়া প্রার্থীদের একটা অংশ যে গেরুয়া শিবিরেরও, তা মেনে নিচ্ছেন বিজেপি নেতৃত্বও। তবে তাঁদের দাবি, জেলার কোথাও দলের টিকিট না পেয়ে দলীয় কর্মীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে নির্দল হিসাবে মনোনয়ন করেননি। বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুনীল রুদ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘বিজেপি শৃঙ্খলাবদ্ধ দল। এখানে দলীয় প্রার্থীদের জেতানোর জন্যই আপামর কর্মী মরণপণ লড়াই করছেন। বিজেপির যে সমস্ত কর্মী নির্দল হিসাবে মনোনয়ন করেছেন, তাঁরা দলের নির্দেশেই করেছেন। আবার দলের নির্দেশে ঠিক সময়ে তাঁরা মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy