Advertisement
১০ জানুয়ারি ২০২৫
Pollution

লকডাউনে উধাও পথের ধুলো

হোক না সাময়িক। তবু তো স্বস্তি! 

দূষণমুক্তি:  লকডাউনের আগে অরবিন্দপল্লি সংলগ্ন জাতীয় সড়ক ধুলোয় ঢাকা (বাঁদিকে)। লকডাউন গাড়ি চলাচল কম। ধুলোহীন ওই রাস্তা।  ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়, ফাইল চিত্র

দূষণমুক্তি: লকডাউনের আগে অরবিন্দপল্লি সংলগ্ন জাতীয় সড়ক ধুলোয় ঢাকা (বাঁদিকে)। লকডাউন গাড়ি চলাচল কম। ধুলোহীন ওই রাস্তা। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়, ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০২০ ০৩:১৭
Share: Save:

লকডাউনের সৌজন্যে ধুলোময় জীবন থেকে মুক্তি পেয়েছেন সিউড়ির অরবিন্দপল্লির বাসিন্দারা।

প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পর থেকে ২১ দিনের লক-ডাউন চলছে। যার জেরে কলকারখানা বন্ধ। রাস্তাঘাটে নেই যানবাহন। এর জেরে দেশের বিভিন্ন ব্যস্ত শহরে বায়ুদূষণের পরিমাণ এক ধাক্কায় কমে গিয়েছে অনেকটাই। করোনা-আতঙ্কের মধ্যেই এমন ইতিবাচক দিকের সাক্ষী অরবিন্দপল্লির বাসিন্দারা। তাঁরা বলছেন, একজোট হয়ে বারবার প্রতিবাদ করে, প্রশাসনের শীর্ষকর্তাদের দরজায় কড়া নেড়ে যে সমস্যা মেটেনি, লকডাউনের জেরে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের সেই ধুলো-দূষণের সমস্যা থেকে তাঁরা রেহাই পেয়েছেন। হোক না সাময়িক। তবু তো স্বস্তি!

এমনিতে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক নিয়ে অরবিন্দপল্লির বাসিন্দাদের অভিযোগের অন্ত নেই। কারণ, সিউড়ি শহরকে বাইপাস করে ওই জনপদের ঠিক পাশ দিয়েই গিয়েছে ওই রাস্তা। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বেহাল সড়কে দুর্ঘটনা লেগে আছেই। তবে তাঁদের সবচেয়ে বেশি সমস্যায় ফেলেছিল রাস্তা থেকে উড়তে থাকা ধুলো। খানাখন্দে ভরা রাস্তার উপর দিয়ে দিনরাত শয়ে শয়ে ভারী যান চলাচল করায় সব সময়ই উড়ত ধুলো। ধুলো-দূষণে তাঁদের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল। ধুলোয় ঢাকা পড়েছিল বাড়ি-ঘর। গাছের সবুজ পাতা ধূসর হয়ে যাচ্ছিল। দরজা, জানলা খোলার উপায় ছিল না। বাইরে কাপড় শুকোতে দেওয়া যেত না। শ্বাসকষ্ট সহ নানা শারীরিক সমস্যা শুরু হয়েছিল বাচ্চা ও বয়স্কদের।

কারণ, রাস্তায় যান চলাচলই সীমিত হয়ে গিয়েছে। অরবিন্দপল্লির বাসিন্দা প্রভাতকুমার পাল, রাজদীপ রায়, স্নেহাশিস দাস, মৌমিতা ঘোষ, অপরাজিতা মুখোপাধ্যায়, প্রতিমা বাগদি, সুশীলা কেশরীরা বলছেন, ‘‘কী করিনি আমরা? রাস্তা সংস্কারের দাবিতে পথ অবরোধ। জাতীয় সড়ক ডিভিশন ১২-এর এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার, জেলাশাসক, জেলা পুলিশ সুপারকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে একাধিক বার। কথা ছিল, যত দিন না রাস্তা সংস্কার হয় তত দিন ধুলো ওড়া রুখতে জল দেবে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। জেলা প্রশাসনও আশ্বাস দিয়েছিল বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে দেখার। কিন্তু, সেটা আশ্বাসেই আটকে থেকেছে।’’ তাঁদের বক্তব্য, লকডাউন তাঁদের প্রতিদিনের এই সমস্যা থেকে মুক্তি দিয়েছে।

মাত্রাতিরিক্ত ভারী যান চলাচল এবং সংস্কারের অভাবে দীর্ঘদিন ধরেই বেহাল রানিগঞ্জ-মোরগ্রাম ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের বীরভূমের অংশ। বিভিন্ন জায়গায় পিচ উঠে গিয়েছে জাতীয় সড়ক থেকে। তার উপরে ভারী গাড়ির চাপে দিনদিন আরও শোচনীয় হচ্ছে রাস্তার হাল। ধুলোর দাপটে নাজেহাল ওই রাস্তা দিয়ে নিত্য যাতায়াতকারী এবং রাস্তার ধারে থাকা মানুষজন।

একাধিক বার জাতীয় সড়ক সারানোর দাবিতে জেলায় বিক্ষোভ-অবরোধ হয়েছে। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, মাস দুই হল রাস্তা সংস্কারে হাত পড়েছে। রাস্তা যাতে সহজে বেহাল না হয় তার জন্য ভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার হচ্ছে। সংস্কার করা হচ্ছে দুর্বল সেতু। আপাতত সে কাজ বন্ধ থাকলেও লক-ডাউন উঠতেই পুরোদমে শুরু হবে। পুজোর আগেই রাস্তা ভাল হবে।

অরবিন্দপল্লির বাসিন্দারা বলছেন, ‘‘কবে কী হবে সেটা সময় বলবে। এখন তো প্রাণভরে শ্বাস নিই!’’

অন্য বিষয়গুলি:

Pollution West Bengal Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy