সিউড়ি বাসস্ট্যান্ডের সামনে মোবাইলের দোকানে। নিজস্ব চিত্র
চাহিদা আছে কিন্তু জোগান নেই। দোকান খুলতেই মোবাইলেও কিছু জায়গায় কালোবাজারি হচ্ছে বলে অভিযোগ। মোবাইল, ল্যাপটপ, ট্যাবের দাম বেড়ে গিয়েছে এক লাফে অনেকটাই। করোনাভাইরাসের আক্রমণ বদলে দিয়েছে পঠনপাঠনের চিরাচরিত ব্যবস্থাকে। পিঠে ব্যাগ ঝুলিয়ে স্কুলে যাওয়া ছাত্র বা ছাত্রীকে এখন অভ্যস্ত হতে হচ্ছে অনলাইন শিক্ষা ব্যবস্থায়। তার জন্য চাই নিদেনপক্ষে একটি স্মার্টফোন। অথচ এতদিন শহরতলি বা গ্রামের স্কুল পড়ুয়াদের অধিকাংশের নিজস্ব মোবাইল ফোন ছিল না। কেউ বার্ষিক পরীক্ষায় ভাল রেজাল্ট করলে বা জন্মদিনে একটি ফোন চেয়ে বসলে লেখাপড়া গোল্লায় যাওয়ার আশঙ্কায় ঘুম ছুটত অভিভাবকদের। এবার সেই অভিভাবকেরাই ছুটছেন মোবাইল বা ল্যাপটপ কিনতে। বেশি দাম দিতে চাইলেও মিলছে না বহু ব্র্যাণ্ড। কারণ, অধিকাংশ মোবাইল বা ল্যাপটপের যন্ত্রাংশ আসে চিন থেকে। এই মুহূর্তে সেই সব যন্ত্রাংশ আসারও কোনও সম্ভাবনা নেই বলে বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম আমদানিকারীদের দাবি। তার উপরে লকডাউনের মাঝেই এপ্রিল মাস থেকে জিএসটি বেড়েছে।
সিউড়ি, বোলপুরের মোবাইল বিক্রেতারা জানান, ১২ শতাংশ জিএসটি এক লাফে ১৮ শতাংশ হয়েছে। ফলে দাম বেড়েছে। অনেক বিক্রেতাই দোকান বন্ধ থাকায় লোকসানের বোঝা বয়েছেন আড়াই মাস ধরে। এবার দোকান খুললেও মোবাইল বা ল্যাপটপের যা স্টক আছে তা ফুরোলে ফের কবে সেই ব্র্যাণ্ড দোকানে আসবে তা অনিশ্চিত। তাই কেউ কেউ এমআরপি (ম্যাক্সিমাম রিটেল প্রাইস)-এর উপরেও বেশি দাম চাইছেন বলে অভিযোগ। বোলপুরের মোবাইল বিক্রেতা সুজিত ভকত, অশোক সাউরা বলেন, ‘‘যে ভাবে এখন স্কুল, কলেজে ক্লাস চলছে তাতে একটু ভাল স্মার্টফোন না হলে অসুবিধা। গত মার্চের আগে ১০ হাজারের নীচে যে ফোনগুলির দাম ছিল এখন সেগুলিই তিন-চার হাজার টাকা বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে আমাদের।’’
সিউড়ির বৈদ্যুতিন সামগ্রীর ব্যাবসায়ী অনির্বাণ দীক্ষিত বলেন, ‘‘অন্যান্য সময় যা বিক্রি হয় এখন তার দ্বিগুন বিক্রি হচ্ছে।’’ একই কথা বলেছেন সিউড়ি শহরের দুই মোবাইল দোকানের মালিক সঞ্জয় অধিকারী এবং সঞ্জীব অধিকারী। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির কর্মকর্তাদের অনেকেই অনলাইন পঠনপাঠন প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, পড়ুয়াদের সুরক্ষার কথা ভেবে এই প্রক্রিয়াতেই এখন ক্লাস চলবে এবং পরীক্ষাও নেওয়া হবে। অনেক অভিভাবক বলেন, কিছু বেসরকারি স্কুল ও কোচিং সেন্টারের তরফ থেকে দামি মোবাইল কেনারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যাতে বেশি তথ্য রাখার জায়গা থাকে মোবাইলে। অভিভাবক সন্তোষ বিশ্বাস, পরিমল দাসরা বলেন, ‘‘এই পরিস্থিতিতে কবে স্কুল কলেজ খুলবে কে জানে? অনলাইন ক্লাস না করতে পারলে বাচ্চারা পিছিয়ে পড়বে। ল্যাপটপের যা দাম তার তুলনায় মোবাইলের দাম কম। এখন এত টাকা খরচ করা খুবই কঠিন। তবু পেলে তো!। দোকানে তো বেশিরভাগ ব্র্যাণ্ডের ফোনই নেই।’’
বেঙ্গল অফলাইন মোবাইল রিটেলার অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তা সঞ্জীব পাল বলেন, ‘‘অনলাইনে ক্লাস চালু হওয়ায় মোবাইলের চাহিদা প্রবল। এই সুযোগে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী মোবাইল নিয়ে কালোবাজারি করছে। কয়েকটি কোম্পানি ভারতে তাদের যন্ত্রাংশ জোড়া ও প্যাকেজিং এর কাজ করলেও অধিকাংশ কোম্পানির যন্ত্রাংশ আসে চিন থেকে। তাই এখন একটু সমস্যা হবে। আমরাও চেষ্টা করছি যাতে দ্রুত বাজারকে স্বাভাবিক করা যায়।’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy