মোলকারীতে। নিজস্ব চিত্র
মিড-ডে মিল প্রকল্পে বরাদ্দের তুলনায় কম পরিমাণ চাল ও আলু দেওয়ার অভিযোগে বৃহস্পতিবার বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর ব্লকের দ্বারিকা গোঁসাইপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত মোলকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ দেখালেন পড়ুয়াদের অভিভাবকেরা। তাঁদের দাবি, পড়ুয়া পিছু তিন কেজি করে চাল ও আলু বরাদ্দ থাকলেও পড়ুয়ারা পেয়েছে অনেক কম। অভিযোগ স্বীকার করে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জানিয়েছেন, পর্যাপ্ত পরিমাণ আলু জোগাড় করতে না পারায় ওজনে কম দেওয়া হয়েছে। তাঁকে শো-কজ় করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ব্লক প্রশাসন।
মোলকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়ুয়া সংখ্যা ৪৩। এ দিন বিলি বণ্টন শুরু হতেই বিক্ষোভ দেখানো শুরু করেন পড়ুয়াদের অভিভাবক ও এলাকাবাসীর একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, স্কুল কর্তৃপক্ষ তাদের কম পরিমাণ আলু ও চাল দেওয়া হয়েছে। স্কুলে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামবাসীরা ঘিরে ধরেছেন স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জয়ন্ত মান্নাকে।
মোলকারী গ্রামের বাসিন্দা রিঙ্কু লোহার, বুদ্ধদেব লোহার, নেপাল লোহারেরা বলেন, ‘‘লকডাউন-এ অসহনীয় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। খাবার পাব কোথায়, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। এখন ছেলেমেয়েদের মিড-ডে মিলের খাবারও কম দিলে আমরা যাই কোথায়?’’
বিষ্ণুপুর বিডিও স্নেহাশিস দত্ত বলেন, ‘‘স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষককে শো-কজ় করা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সন্তোষজনক উত্তর না পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
জঙ্গল থেকে সংগ্রহ করা জ্বালানি এবং শালপাতা বিক্রি করে সংসার চলে মোলকারী গ্রামের বাসিন্দাদের অনেকের। কেউ ইটভাটায় কাজ করেন। ‘লকডাউন’ চলায় সব থমকে গিয়েছে। গ্রামবাসীদের আক্ষেপ, ‘‘এখন রেশন থেকে পাওয়া মাল আর মিড-ডে মিলের চাল-আলুই পরিবারের ভরসা। সেটাও কম পেলাম!’’ স্থানীয় বাসিন্দা কার্তিক লোহারের অভিযোগ, ‘‘নিজেদের ইচ্ছামতো চাল-আলু বিলি করেছে স্কুল। কাউকে কিছু জানানো হয়নি।’’
কী বলছেন ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক?
জয়ন্তবাবুর বক্তব্য, ‘‘এটা ঠিক যে, এক কেজি করে আলু কম দেওয়া হয়েছে। কারণ, আলু জোগাড় করতে পারিনি। অভিভাবকেরা তাড়াহুড়ো করায় জানাতে ভুলে গিয়েছি। চালও কম দেওয়া হয়েছিল। এ দিন বাড়তি দিয়ে সেটা পুষিয়ে দেব ভেবেছিলাম। সে জন্যই আজ স্কুলে এসেছিলাম। অভিভাবকেরা তবু বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন।’’ তাঁর মতে, ‘‘মগে করে চাল-আলু দেওয়ায় ওজনে একটু এ দিক-ও দিক হয়েছে। বিষয়টি আলোচনা করে আপসেও মেটানো যেতে পারত।’’
ঘটনায় ক্ষুব্ধ স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান তৃণমূলের সঞ্জয় নন্দী। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘সরকারি নির্দেশ অগ্রাহ্য করার পরেও আপসের কথা ওঠে কী করে? সমস্যা থাকতেই পারে। কিন্তু কেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অন্যদের তা জানাননি?’’ তাঁর সংযোজন: ‘‘গ্রামবাসীকে লিখিত অভিযোগ দায়েরের পরামর্শ দিয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy