দূরত্ব-বিধি মেনে কাজ। পাত্রসায়রের বেলুট-রসুলপুরে। নিজস্ব চিত্র
কাজ চলাকালীন চলবে না ধূমপান। গুটখা বা কোনও ধরনের নেশার জিনিস মুখে দেওয়াও বন্ধ। কাজ শুরুর আগে ও শেষ করার পরে, ভাল করে সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে একশো দিনের কাজ করার সময়ে এমনই নানা নিয়ম মেনে চলতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি, এই পরিস্থিতিতে কম শ্রমিক লাগে এমন কাজেই বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে।
বাঁকুড়ার জেলাশাসক এস অরুণ প্রসাদ বলেন, ‘‘১০০ দিনের কাজের গতি আগামীদিনে আরও বাড়বে। করোনা-পরিস্থিতিতে যাতে সমস্ত মানুষকে কাজ দেওয়া যায়, সে দিকে আমাদের নজর রয়েছে। স্বাস্থ্যসম্মত যে সব নিয়মকানুন রয়েছে, তা মেনেই কাজ করা হচ্ছে।’’
বাঁকুড়া জেলায় একশো দিনের প্রকল্পের দফতর সূত্রে জানা যাচ্ছে, চলতি অর্থবর্ষের প্রথম কুড়ি দিনেই জেলা জুড়ে ১ লক্ষ ৪২ হাজার ৪১৫ কর্মদিবস তৈরি করা হয়েছে। যার মধ্যে বাঁকুড়া সদর মহকুমায় ৫৫,৫৯৭, বিষ্ণুপুর মহকুমায় ৫৩,০৯৪ ও খাতড়া মহকুমায় ৩৩,৭২৪ কর্মদিবস সৃষ্টি হয়েছে। জেলা জুড়ে ১২,০৪৭ জন শ্রমিক একশো দিনের কাজ পেয়েছেন। যার মধ্যে ৫৫ শতাংশই মহিলা। চলতি ২০২০-’২১ অর্থবর্ষে জেলায় কর্মদিবস সৃষ্টির লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে ১ কোটি ১৩ হাজার।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, গত অর্থবর্ষে জেলায় কর্মদিবস সৃষ্টির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। গত বছর এই প্রকল্পে কর্মদিবস সৃষ্টির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ কোটি ৪৯ লক্ষ। শেষ পর্যন্ত কর্মদিবস সৃষ্টি করা গিয়েছিল প্রায় ১ কোটি ৩৮ লক্ষ। প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশের দাবি, গত অর্থবর্ষের শুরুর দিক থেকে একশো দিনের কাজের গতি বেশ ভাল থাকলেও শেষের দিকে করোনা পরিস্থিতির জেরেই গতি কমে যায়। লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি পৌঁছনো গেলেও তাই তা পূরণ করা যায়নি। চলতি অর্থবর্ষের শুরুতেও একশো দিনের কাজ করতে গিয়ে সেই করোনা পরিস্থিতির সঙ্গেই যুঝতে হচ্ছে।
করোনা-সংক্রমণ এড়াতে বেশি সংখ্যক শ্রমিক নিয়োগেও সরকারি নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তাই আপাতত যে কাজে শ্রমিক কম লাগে ও দূরত্ব বজায় রাখা সহজ, এমন কাজই করা হচ্ছে। জেলা জুড়ে ১০ লক্ষ বৃক্ষরোপণ ও এক হাজার ‘হাপা’ (ছোট পুকুর) কাটার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে একশো দিনের কাজে। আপাতত জেলা জুড়ে এই দু’টি কাজই চলছে।
প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশের মতে, বনসৃজন বা ‘হাপা’ কাটার কাজে তুলনায় কম শ্রমিক লাগে। শ্রমিকদের মধ্যে দুরত্বও বজায় রাখা সম্ভব। করোনা-সংক্রমণ রুখতে শ্রমিকেরা কাজ চলাকালীন কোনও ভাবেই যাতে ধূমপান, গুটখা সেবন বা কোনও ধরনের নেশা না করেন, সে জন্য কড়া নজর রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পঞ্চায়েতগুলিকে। এ ছাড়া, কাজ শুরুর আগে ও শেষের পরে সাবান দিয়ে হাত ভাল করে ধোয়াও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কাজে আসা শ্রমিকদের ‘মাস্ক’ পরা বা মুখে ঢাকা নিয়ে কাজ করাও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
বাঁকুড়ায় একশো দিনের কাজের জেলা প্রকল্প আধিকারিক জীবনকৃষ্ণ বিশ্বাস বলেন, “শ্রমিকেরা কাজ চলাকালীন ধূমপান, গুটখা খাওয়া বা কোনও ধরনের নেশা করতে পারবেন না। পাশাপাশি, সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, ‘মাস্ক’ বা মুখ ঢেকে রাখাও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।” তিনি জানান, ‘ভিডিও কনফারেন্স’-এর মাধ্যমে বিডিওদের এ নিয়ে সচেতন করা হয়েছে। বিডিও-রা ইতিমধ্যেই পঞ্চায়েত প্রধানদের সতর্ক করেছেন। প্রধানদের তরফে একশো দিনের কাজের সুপারভাইজ়ারদেরও এ নিয়ে নজরদারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy