Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
elephant attack

উত্তরবঙ্গে আবার মারকুটে হাতি পাঠাবে বন দফতর

পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে বিষ্ণুপুর পাঞ্চেৎ হয়ে বাঁকুড়া উত্তর বন বিভাগের জঙ্গলে এসেছে ২৭টি হাতির পাল। মঙ্গলবারে ওই দলের সাতটি হাতি সোনামুখী থেকে বড়জোড়া রেঞ্জের জঙ্গলে ঢোকে।

দধিমুখা গ্রামে তাণ্ডব। নিজস্ব চিত্র

দধিমুখা গ্রামে তাণ্ডব। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বড়জোড়া, বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২৩ ০৮:১৬
Share: Save:

‘মারকুটে’ হাতিটিকে দল থেকে সরিয়ে উত্তরবঙ্গে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিল বন দফতর। মঙ্গলবার এক রাতেই বড়জোড়ার দু’টি জায়গায় হাতির হানায় মৃত্যু হয় এক বৃদ্ধা-সহ দু’জনের। বৃহস্পতিবার বন দফতর জানিয়েছে, বৃদ্ধাকে তুলে আছড়ে মারা হাতিটিকে তারা চিহ্নিত করছে। ওই হাতিটিকে দল থেকে সরিয়ে উত্তরবঙ্গে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তার প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে।

সদ্য পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে বিষ্ণুপুর পাঞ্চেৎ হয়ে বাঁকুড়া উত্তর বন বিভাগের জঙ্গলে এসেছে ২৭টি হাতির পাল। মঙ্গলবারে ওই দলের সাতটি হাতি সোনামুখী থেকে বড়জোড়া রেঞ্জের জঙ্গলে ঢোকে। সে রাতেই বড়জোড়ার সংগ্রামপুর লাগোয়া এলাকায় মঙ্গল বাউরি ও ঝরিয়া গ্রামের বৃদ্ধা তুলসি বটব্যালের মৃত্যু হয় হাতির হানায়। এই ঘটনার পরে বুধবার রাতে বড়জোড়া রেঞ্জের দধিমুখা গ্রামে ঢুকে ফের হামলা চালায় একটি হাতি। একটি ঘর ভাঙে। একাধিক খড় পালুই, আলুর খেত পায়ে মাড়িয়ে নষ্ট করে।

ওই গ্রামের বাসিন্দা সুরজিৎ বাউরি বলেন, ‘‘সবে শুতে গিয়েছি। হঠাৎ ঘরের বাইরে রাখা গেরস্থালি সরঞ্জাম পড়ার শব্দ শুনে ভয় পাই। ভাবি হাতি ঢুকেছে না তো? দরজা ফাঁক করে দেখি, উঠোনে হাতি। সাত-পাঁচ না ভেবে স্ত্রীর হাতে হ্যাঁচকা টান মেরে দু’জনে মিলে দরজা দিয়ে দৌড়ে পাশের বাড়িতে চলে যাই। তারপরেই হাতিটা আমাদের টিনের দরজা ভেঙে দেয়। ভিতরে শুঁড় ঢুকিয়ে কিছু খোঁজাখুঁজিও করে। নাগালে পেলে আমাদের হয়তো পিষেই মেরে দিত।’’ বাসিন্দাদের সঙ্গে সিপিএম নেতৃত্ব এ দিন বড়জোড়া রেঞ্জ অফিসে গিয়ে দ্রুত হাতিদের সরানোর দাবিতে বিক্ষোভ দেখান।

নতুন করে জেলায় ঢোকা হাতির দলটি কেন এতটা আক্রমণাত্মক হয়ে উঠল তা খতিয়ে দেখছেন বনকর্তারা। তবে ক্ষয়ক্ষতি ও জীবনহানি এড়াতে অবিলম্বে কিছু পদক্ষেপ জরুরি বলে মনে করছেন বন-কর্তারা।

রাজ্যের মুখ্যবনপাল (কেন্দ্রীয়) এস কুলান ডেইভাল জানান, ঝরিয়া গ্রামের বৃদ্ধাকে যে হাতিটি আক্রমণ করেছিল, তাকে চিহ্নিত করা গিয়েছে। ওই হাতিটি খাবারের খোঁজেই গ্রামে গিয়ে বাড়িতে ঢুকছে। অন্য হাতিরাও তাকে অনুসরণ করতে পারে। এই পরিস্থিতিতে চিহ্নিত হাতিটিকে দল থেকে সরিয়ে অন্যত্র পাঠিয়ে দেওয়া হলে দলের প্রতিটি হাতি সংযত হবে।

তিনি বলেন, “হাতিরা প্রচণ্ড বুদ্ধিমান ও দলের সদস্যদের মধ্যে সম্পর্ক বজায় রেখে চলা প্রাণী। পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে জেলায় এসেই ওরা হন্যে হয়ে খাবারের খোঁজ শুরু করেছে। সে জন্য তারা গ্রামে ঢুকে আক্রমণাত্মক হয়ে পড়ছে। এ ক্ষেত্রে বড়জোড়ার বৃদ্ধার বাড়িতে হানা দেওয়া হাতিটিই অন্য হাতিদের মধ্যে গ্রামে ঢুকে খাবারের সন্ধানের চেতনা জাগাচ্ছে। ওই হাতিটিকে দল থেকে অন্যত্র সরিয়ে দিলে বাকি হাতিগুলির কাছে শান্ত হওয়ার বার্তাপৌঁছনো যাবে।”

এর আগেও বাঁকুড়া থেকে কয়েকবার গোলমেেল প্রকৃতির হাতিদের উত্তরবঙ্গে পাঠানো হয়েছে। তিনি জানান, এর আগেও এমন পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছে হাতির দলকে শান্ত করতে। কবে এ নিয়ে পদক্ষেপ করবে বন দফতর? মুখ্যবনপাল জানান, দলটি সবে বড়জোড়ার জঙ্গলে এসেছে। হাতিগুলি এলাকার পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে একটু শান্ত হলেই ওই হাতিটিকে ঘুমপাড়ানি গুলিতে কাবু করে তাকে উত্তরবঙ্গের জঙ্গলে নিয়ে যাওয়া হবে।

বাঁকুড়া উত্তর বন বিভাগের ডিএফও উমর ইমাম বলেন, “ওই হাতিটিকে হাতিটিকে আমরা চিহ্নিতকরণের কাজ করছি। হাতিগুলির গতিবিধির উপর নজর রাখা হচ্ছে।”

অন্য বিষয়গুলি:

elephant attack bankura wildlife
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy