দূষণের জেরে গত তিন দিন ধরে মিছরি বাঁধে পুকুরে মাছ মরে ভেসে উঠেছে। —নিজস্ব চিত্র।
দুর্গাপ্রতিমার কাঠামো থেকে দূষণের জেরে ভেসে উঠছে একের পর এক মরা মাছ। বাঁকুড়ার বাইপাস লাগোয়া মিছরি বাঁধের পুকুরের আয়তন মেরেকেটে সাড়ে তিন বিঘা। তবে সে পুকুরেই বিসর্জন করা হয়েছে প্রায় তিরিশটি দুর্গাপ্রতিমা। যার জেরে পুকুরের জলে অবাধে মিশেছে প্রতিমার রাসায়নিক রং এবং সাজের প্লাস্টিক। অভিযোগ, কাঠামো থেকে দূষণের জেরেই মাছ মরে যাচ্ছে। এই ঘটনায় মাথায় হাত এলাকার মাছ চাষি থেকে স্থানীয় পরিবেশকর্মীদের।
মিছরি বাঁধের পুকুরে দূষণের মাত্রা সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে সোমবার সেখানে যান বাঁকুড়া পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের সদস্য গৌতম দাস। কাঠামোগুলি জলাশয় থেকে দ্রুত তোলার আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি।
স্থানীয়েরা জানিয়েছেন, প্রোমোটারের থাবা বাঁচিয়ে বাঁকুড়া শহর-সহ লাগোয়া এলাকায় যে ক’টি জলাশয় রয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম মিছরি বাঁধ। এ জলাশয়ে মাছ চাষ করে একাধিক পরিবারের সংসার চলে। রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজে আসা শ্রমিকেরা মূলত এখানেই স্নান করেন। পাশাপাশি, গবাদি পশুরাও এ জলাশয়ের জল পান করে। দীর্ঘদিন ধরেই বাইপাস লাগোয়া মণ্ডপগুলির প্রতিমা বিসর্জন করা হয় এ জলাশয়ে।
বছর পাঁচেক আগেও মিছরি বাঁধে মোটে চার-পাঁচটি দুর্গাপ্রতিমা বিসর্জন হত। কিন্তু সম্প্রতি জনবসতি বৃদ্ধির পাশাপাশি পুজোর সংখ্যাও বেড়েছে। স্থানীয়দের দাবি, চলতি বছরে তিরিশটির বেশি দুর্গাপ্রতিমা বিসর্জন করা হয়েছে মিছরি বাঁধে। যার জেরেই দূষিত হয়ে পড়েছে মিছরি বাঁধের জল। মাছ চাষি সমর বাউড়ি বলেন, ‘‘পুকুরে প্রতিমা বিসর্জনের পর পুরসভার তরফে কাঠামো তোলার ব্যবস্থা নেই। ফলে প্রতিমায় রাসায়নিক রং, প্লাস্টিক সবই মিশছে জলাশয়ে। জলে পচছে কাঠামোয় ব্যবহৃত খড়ও। তাতেই বাঁধের জলে দূষণ ছড়াচ্ছে।’’
পুকুরে মাছ চাষ করে সংসার চলে সুমিত্রা গ়ড়াইয়ের। তাঁর দাবি, ‘‘দূষণের জেরে গত তিন দিন ধরে পুকুরে প্রায় ৪০-৫০ হাজার টাকার মাছ মরে ভেসে উঠেছে। মাছ চাষের খরচ উঠবে কি না, তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছি। প্রতিমা বিসর্জনে বাধা দিতে গেলেও সুরাহা হয়নি। বাঁকুড়া পুরসভা পদক্ষেপ না করলে আমার রোজগার বন্ধ হয়ে যাবে।’’
ঘটনার কথা শুনে সোমবার মিছরি বাঁধের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন বাঁকুড়া পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য গৌতম দাস। তিনি বলেন, ‘‘আগে থেকে অভিযোগ এলে এ পুকুরে প্রতিমা বিসর্জন বন্ধ করার ব্যবস্থা করতাম। মঙ্গলবারের মধ্যে পুকুর থেকে সব কাঠামো তুলে দেব আমরা। ভবিষ্যতে যাতে এ পুকুরে বিসর্জন বন্ধ রাখা হয়, সে বিষয়েও প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy