রক্ত দিলেন দৃষ্টিহীন ভৈরব ঘোষ। বড়জোড়ার দুবরাজপুরে। নিজস্ব চিত্র
গ্রামে রয়েছে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত এক বালিকা। তাকে সাহায্য করতেই মঙ্গলবার গ্রামের ৫১ জন রক্তদান করলেন। বাঁকুড়ার বড়জোড়ার দুবরাজপুর গ্রামে ওই শিবিরের উদ্বোধন করে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত বছর দশেকের ওই মেয়েটি।
ওই গ্রামের বেশির ভাগ মানুষ কৃষিজীবী ও দিনমজুর। ‘লকডাউন’-এ সবাই কষ্টের মধ্যে সংসার চালাচ্ছেন। তৃতীয় শ্রেণির পড়ুয়া ওই মেয়েটির বাবাও দিনমজুর। বালিকার মা জানান, রক্তের জন্য ‘বড়জোড়া ব্লক ব্লাড ডোনার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর স্বেচ্ছাসেবকেরা নিয়মিত মেয়েটিকে বড়জোড়া ব্লাড ব্যাঙ্কে নিয়ে যান। এক দিন ওই সংস্থার সম্পাদক কাঞ্চন বিদ এলাকার মানুষের কাছে আবেদন করেন, মেয়েটির জন্য তাঁরা যদি একটি রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেন, তা হলে সুবিধা হয়। দু’-এক জন প্রতিবেশীকে নিয়ে পাড়ায়-পাড়ায় সেই আর্জি নিয়ে ঘোরেন মেয়েটির মা ও কাঞ্চনবাবু। এগিয়ে আসেন অনেকে।
স্থানীয় বাসিন্দা বিদ্যুৎ বাগদি বলেন, ‘‘আমরা সবাই গরিব। বাচ্চা মেয়েটার জন্য রক্ত দান করতেই পারি। স্ত্রীকে নিয়ে তাই রক্ত দিতে গিয়েছিলাম।’’ রক্ত দেন দৃষ্টিহীন ভৈরব ঘোষও। তিনি বলেন, ‘‘গ্রামের একটি ছোট্ট মেয়ে অসুস্থ। ওর মা-বাবার কষ্ট বুঝি। বাড়ির সবাইকে বলেছিলাম, আমি রক্ত দিতে যাব।’’ ওই গ্রামের বাসিন্দা তাপস বাগদি জানান, ‘লকডাউন’-এ সবাই সমস্যায়। টাকা-পয়সা দিয়ে বাচ্চা মেয়েটি বা তার পরিবারকে সাহায্য করার ক্ষমতা নেই। কিন্তু রক্ত দিতে আপত্তি নেই।
‘বড়জোড়া ব্লক ব্লাড ডোনার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর ওই উদ্যোগে পাশে দাঁড়ায় স্থানীয় ক্লাব ‘সবুজ সঙ্ঘ’। বাঁকুড়া ব্লাড ব্যাঙ্কের এক আধিকারিক জানান, রক্ত দিয়েছেন ৫১ জন। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ও সমস্ত সচেতনতা মূলক ব্যবস্থা নিয়ে শিবির হয়। কাঞ্চনবাবু বলেন, ‘‘যে ৫১ জন রক্ত দিলেন, তাঁদের কারও কারও গ্রুপের সঙ্গে বাচ্চা মেয়েটির গ্রুপের মিল রয়েছে। বাকি রক্ত তারই মতো থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত বা মুমূর্ষু রোগীদেরও কাজে লাগবে।’’ তাঁর আহ্বান, দুবরাজপুরের মানুষেরা এ দিন যা করে দেখালেন, তা থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত অন্য শিশুদের গ্রামের মানুষেরা করলে, রক্তের সঙ্কট অনেকটাই কাটবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy