বাজারেও পড়েছে আঁচ। প্রতীকী ছবি।
ব্যাঙ্ক থেকে কৃষিঋণ নিয়ে খরিফ মরসুমে বিক্রির জন্য জমিতে টমেটো, বেগুন, পালং চাষ করেছিলেন বীরভূমের নলহাটির গোবিন্দ মণ্ডল। ষাটোর্দ্ধ গোবিন্দবাবুর এখন মাথায় হাত। কারণ, গত তিন দিন ধরে টানা বৃষ্টিতে আনাজ নষ্ট হতে শুরু করেছে। উদ্বিগ্ন গোবিন্দবাবুর কথায়, ‘‘ভেবেছিলাম ফসল বিক্রি করে ভাল লাভ হবে। ব্যাঙ্কের ঋণও শোধ করতে পারব। এখন জানি না কী হবে?’’
শুধু গোবিন্দবাবুই নন, বীরভূমের বেশিরভাগ চাষিরই কপালে ভাঁজ ফেলেছে গত বুধবার থেকে শুরু হওয়া এই বৃষ্টি। বৃষ্টিতে কালীপুজোর আনন্দ ইতিমধ্যেই ম্লান। তার উপর আবহাওয়া দফতরের আরও বৃষ্টির পূর্বাভাসে আনাজ বাজারের বেহাল অবস্থার সিঁদুরে মেঘ দেখছেন চাষি থেকে বিক্রেতা সকলেই।
বুধবার বিকেল থেকে শুক্রবার পর্যন্ত টানা বৃষ্টিতে বৃষ্টিতে আনাজ খেতে জল জমে থাকায় পচে গিয়েছে পটল, ঝিঙে-সহ অন্যান্য ফসল। ফুলকপি, মুলোর ক্ষেত্রেও জমিতে জল জমে থাকায় ফলন্ত আনাজ নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা আছে। আর্থিক দিক থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি বৃষ্টি না থামলে বা ফের নিম্নচাপ এলে নতুন কিছু চাষ করলে তাতেও ক্ষতির আশঙ্কা করছেন চাষিরা।
রামপুরহাট ১ ব্লকের আয়াষ অঞ্চলে ব্রাহ্মণী নদীর তীরবর্তী বসুইপাড়া, দেবগ্রাম, নাছিয়া, রাণীনগর, বেলেবাড়ি এবং আয়াষ গ্রামে শীতকালীন আনাজ চাষ ও ফুল চাষের রেওয়াজ রয়েছে। আয়াষ গ্রামের এক চাষি জানান, পটল আর ঝিঙে চাষ করেছিলেন অনেকেই।
আয়াষ গ্রাম-সহ নলহাটি ১ ব্লকের পানিটা, ধলাসিন, পোধরা, চামটিবাগান, ইন্দ্রডাঙার চাষিরা বিঘে প্রতি ৮ থেকে ৯ হাজার টাকা খরচ করে ফুলকপি চাষ করেছিলেন। চাষিরা জানান প্রায় ফুলকপি ধরার মরশুমে বৃষ্টিতে গাছের গোড়ায় ৬ ইঞ্চি, ৪ ইঞ্চি করে জল জমে গিয়েছে। এর ফলে গাছ মরে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। সপ্তাহ খানেক পরেই ফুলকপি বাজারে ওঠার কথা পুরোদমে। এক বিঘে জমিতে প্রায় আড়াই হাজার থেকে তিন হাজার ফুলকপি ফলাতেন চাষিরা। সেক্ষেত্রে প্রায় এক মাস ধরে ২০ থেকে ২৫ টাকা দরে প্রতিটি ফুল কপি বিক্রি করতে পারতেন চাষিরা। কিন্তু টানা বৃষ্টিতে ফুলকপি আর বিক্রিযোগ্য নেই বলেই চাষিদের আক্ষেপ। মুলো গাছেও গোড়াপচা রোগ ধরেছে।
এ দিকে এক টানা বৃষ্টিতে জেলার বিভিন্ন আনাজ বাজারে মালের জোগানে ঘাটতি পড়েছে। এর
ফলে দাম উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। কালীপুজো এবং ভাইফোঁটার বাজারেও তার প্রভাব পড়বে বলে আনাজ বিক্রেতারা জানান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy