প্রায় ছয় সপ্তাহ পরে আজ, বুধবার থেকে বীরভূম স্বাস্থ্যজেলায় শিশু ও গর্ভবতীদের রুটিন টিকাকরণ কর্মসূচি আবার শুরু হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং নিরাপদ পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রেখে প্রতিটি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে ওই কর্মসূচি শুরু হবে।

মা ও শিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষিত করতে গর্ভবতীদের টিকাকরণও অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ভয়ে মার্চের তৃতীয় সপ্তাহ থেকেই জেলায় শিশু ও গর্ভবতীদের রুটিন টিকাকরণ কর্মসূচি বন্ধ ছিল। তা ফের চালু হওয়া খুবই ইতিবাচক। কিন্তু, সতর্কতা বিষয়ে একাধিক পরামর্শ থাকলেও মা ও শিশুদের সুরক্ষার প্রশ্ন যেখানে জড়িয়ে, সেখানে ‘অরেঞ্জ জোন’-এ থাকা বীরভূমে টিকাকরণ কতটা কার্যকর ভাবে পালন করা সম্ভব হবে, সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ টিকা দেবেন সেই এএনএম বা সেকেন্ড এএনএম-রা, যাঁদের নিজেদেরই প্রকৃত সুরক্ষাকবচ নেই।

বীরভূম স্বাস্থ্যজেলার সিএমওএইচ হিমাদ্রি আড়ি যদিও বলছেন, “নির্দেশ মেনেই কর্মসূচি পালন করতে হবে। উপায় নেই।“ তাঁর সংযোজন, “শিশুস্বাস্থ্যে টিকাকরণের গুরুত্ব অপরিসীম। একাধিক রোগ থেকে আজীবন শিশুদের শরীরে টিকার মাধ্যমেই প্রতিরোধ তৈরি হয়। কাজেই শিশুদের রুটিন টিকা বন্ধ রাখা যাবে না।“ তিনি জানান, গত সপ্তাহে প্রতিটি ব্লক হাসপাতালের সঙ্গে জুড়ে থাকা উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে কর্মসূচি শুরু হয়েছে। এ বার সবকটি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র সেটা চালু হবে।

নিখরচায় বিভিন্ন ব্লকের উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে মাসে কম পক্ষে চার দিন টিকাকরণ কর্মসূচি চলে। জনসংখ্যার নিরিখে ওই টিকাকরণের দিনের সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়। আশা কর্মীরা বাড়ি-বাড়ি গিয়ে টিকাকরণের খবর দিয়ে থাকেন।

করোনার প্রাদুর্ভাবের জেরে স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশ মেনে টিকাকরণ থেকে বিরত ছিলেন উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের এএনএম এবং সেকেন্ড এএনএমেরা। তা ছাড়া, এই সময়টায় এএনএম ও আশাকর্মীরা ব্যস্ত ছিলেন বাড়ি বাড়ি ঘুরে জ্বর-সর্দি-কাশি বা শ্বাকষ্টজনিত সমস্যায় থাকা রোগীদের খোঁজ করতে।

বীরভূমে উপযুক্ত সুরক্ষা উপকরণ ছাড়া টিকাকরণে সংক্রমণ ছড়াবে না তো, এই নিয়ে দোলাচল রয়েছে স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, প্রতিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে একবারে নয়, ধাপে ধাপে মা ও শিশুদের ডাকতে হবে। প্রয়োজনে টিকাকরণের দিন সংখ্যা বাড়াতে হবে। সঙ্গে নেওয়া হবে সুরক্ষা ব্যবস্থা।