ময়ূরেশ্বরের গ্রামে পুলিশের টহলদারি। — নিজস্ব চিত্র।
ডাইনি অপবাদে দুই আদিবাসী মহিলা পিটিয়ে খুনের অভিযোগ বীরভূমে। এই ঘটনায় ছ’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযোগ, শুক্রবার রাতে ওই দুই মহিলাকে বাড়ি থেকে টেনে নিয়ে যাওয়া হয়। খুঁটির সঙ্গে দড়ি দিয়ে বেঁধে তাঁদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। তার পর এলাকার সেচ নালা থেকে দু’জনের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
বীরভূমের ময়ূরেশ্বর থানার হরিসরা গ্রামের আদিবাসী পাড়ার ঘটনা। মৃত দুই মহিলার নাম লোদগি কিসকো এবং ডলি সোরেন। অভিযোগ, শুক্রবার রাতে গ্রামের লোকজন তাঁদের বাড়ির সামনে জড়ো হন। তাঁদের বাড়ি থেকে টেনে বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়। দড়ি দিয়ে ওই দুই মহিলাকে বাঁধা হয় খুঁটির সঙ্গে। তার পর গ্রামের সকলে মিলে তাঁদের মারধর করেন। লাঠি দিয়ে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।
গোটা ঘটনাটি জানাজানি হতে সেখানে পৌঁছয় ময়ূরেশ্বর থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। গ্রাম সংলগ্ন সেচ নালা থেকে দুই মহিলার দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ময়নাতদন্তের জন্য দেহ দু’টি রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে যুক্ত সন্দেহে ছ’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এই ঘটনার পর গ্রামে আতঙ্ক রয়েছে। টহল দিচ্ছে পুলিশ।
মৃতের পরিবারের অভিযোগ, ঘটনার কথা পুলিশকে না জানানো এবং অভিযোগ না দায়ের করার জন্য চাপ দেওয়া হয় তাদের। গ্রামের অনেকে তাদের এসে ভয় দেখিয়ে যান বলেও অভিযোগ। মৃত মহিলার কন্যা জবা কিস্কু বলেন, ‘‘আমার মাকে যাঁরা নিয়ে গিয়েছেন, যাঁরা মেরেছেন, আমি তাঁদের শাস্তি চাই। আমাদের ভয় দেখানো হচ্ছে। বলছে, ‘থানায় যাস না। না হলে পরে বুঝবি।’ আমাদের বিষয়টি চেপে যেতে বলা হচ্ছে। কী করে চেপে যাব? আমার তো মা! ওদের সঙ্গে এমন হলে চেপে যেত? আমরা দুই বোন, দুই ভাই। আমরা ওদের শাস্তি চাই।’’
মৃতের অপর কন্যা রানি কিস্কু বলেন, ‘‘আমাদের মাকে যাঁরা এ ভাবে কষ্ট দিয়ে মারল, আমরা তাঁদের ফাঁসি চাই। বাড়ি থেকে মাকে টেনে নিয়ে গিয়েছিল। আমার ভাইরা বাড়িতে ছিল না। এখন ওরা যাতে আমাদের ক্ষতি করতে না পারে, সেই নিরাপত্তা চাইছি।’’
এই ঘটনায় ধৃত লক্ষীরামের স্ত্রী সুরমিলা মাড্ডি বলেন, ‘‘আমার স্বামী ঘুমোচ্ছিলেন। তিনি কিছু জানতেন না। ওরা তুকতাক করত। আমার ছেলেকে নিয়ে গিয়েছিল। বলছিল, ‘তোর ছেলেকে খাব, তোর স্বামীকে খাব।’ আমার ছেলে অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিল। আমরা গিয়ে দুই চড় মেরেছি। গ্রামের সবাই মিলে মেরেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy