ভাঙল পটলের মাচা। নিজস্ব চিত্র
আশঙ্কাই সত্যি হল। জঙ্গল থেকে বেরিয়ে ছ’টি শাবক-সহ ২৩টি হাতির দল বুধবার রাতে দুই ভাগে কার্যত তাণ্ডব চালাল সোনামুখী রেঞ্জের ভুলা ও বড়নারায়ণপুর গ্রামে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, বেশ কয়েকবিঘা জমির আনাজ ও আশপাশের এলাকার আম ও কাঁঠালের বাগানে হানা দেয় তারা। শেষে হাতির দলটি সোনামুখী রেঞ্জ ছেড়ে বৃহস্পতিবার ভোরের দিকে বেলিয়াতোড় রেঞ্জের নিত্যানন্দপুর গ্রামের কাছে জঙ্গলে ঢুকে পড়ে।
সোনামুখীর রেঞ্জ অফিসার দয়াল চক্রবর্তী জানান, বৃহস্পতিবার সকালে বিট অফিসারকে গ্রামে পাঠানো হয়েছিল। যাঁদের খেত ও বাগান নষ্ট হয়েছে, তাঁদের আবেদন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সরকারি নিয়মেই তাঁদের ক্ষতিপূরণ করা হবে। এ দিন বিকেল পর্যন্ত হাতির দলটি বেলিয়াতোড় রেঞ্জের নিত্যানন্দপুর গ্রামের পাশে লাদুনিয়ার জঙ্গলে রয়েছে বলে খবর।
বন দফতর ও স্থানীয় সূত্রে খবর, ক’দিন আগে ওই হাতির দলটি সোনামুখীর জঙ্গলে ঢোকে। তখন থেকেই বাসিন্দারা লোকালয়ে হাতিগুলি যদি ঢুকে পড়ে, সে আশঙ্কা করছিলেন। বুধবার সন্ধ্যায় ৭টা নাগাদ টিউরিয়া ও ভুলার মাঝের জঙ্গল দিয়ে হাতির দলটি দু’ভাগ হয়ে ভুলা ও বড়নারায়ণপুরে ঢুকে পড়ে।
ভুলা গ্রামের বাসিন্দা মনোজ কুণ্ডু, মন্টু রায় প্রমুখের দাবি, ‘‘জমিতে এই সময়ে পটল, লাউ, ঝিঙের মতো আনাজ রয়েছে। হাতির দল ঢুকে সে সব ফসলের মাচা ভেঙে দেয়।’’
বড়নারায়ণপুরের বাসিন্দা তপন কুণ্ডু ও নিমাই কুণ্ডুর অভিযোগ, হাতির দল তাঁদের বাগানের আম ও কাঁঠাল নষ্ট করে দিয়েছে। পরে ভুলাতে হাতির দলটি মিশে যায়।
এ দিকে, হাতির দলটিকে বাগে আনতে নাজেহাল হন হুলাপার্টির সদস্যেরাও। তাঁদের মধ্যে আশিস মণ্ডল, রামেশ্বর হাঁসদা, মঙ্গল হাঁসদারা বলেন, ‘‘আগে হাতি এলেই হুলা ব্যবহার করা হত। তাতে ভয় পেয়ে ফিরে যেত হাতির দল। এখন আমাদের হাতে লাঠির তোয়াক্কা করে না হাতিরা।’’ তাঁরা জানান, গ্রামবাসীকে নিয়ে হইহল্লা করে দলটিকে বনের দিকে ফেরানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু দলটি আনাজের জমিতে নেমে সব তছনছ
করে দেয়।
এ দিকে, জঙ্গলের মধ্যে হাতিদের আটকে রাখার জন্য একশো দিনের প্রকল্পে গভীর নালা (পরিখা) কাটা হলেও লাগোয়া গ্রামে কেন হাতিদের ঢোকা বন্ধ করা যাচ্ছে না? প্রশ্ন তুলেছেন বাসিন্দারা। সোনামুখীর রেঞ্জ অফিসারের দাবি, ভুলা গ্রামের পিছনে নালা কাটা আছে। সে কারণে ভুলা গ্রাম থেকে হাতির দলটি বেরোতে পারছিল না। শাবকদের নিয়ে নালার সামনে গিয়েও তিন বার ফিরে এসেছে ভুলা গ্রামেই। শেষে ভোরে নালার পাশে সরু পথ দিয়ে শাবকদের নিয়ে বেরোয় হাতিরা।
হাতি সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য গঠিত ‘সংগ্রামী গণমঞ্চ’-এর সম্পাদক শুভ্রাংশু মুখোপাধ্যায় বলেন, “হাতিদের অবিলম্বে ময়ূরঝর্না এলাকায় পাঠাতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ১৫ দিনের মধ্যে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছি বন দফতরের কাছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy