বিষ্ণুপুর থেকে ‘দাদার অনুগামী’দের বাস গেল মেদিনীপুরে। নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূলে ইস্তফা দিয়ে রাতারাতি অবস্থান বদল করলেন বিষ্ণুপুর পুরসভার দুই বিদায়ী কাউন্সিলর। মমতা কুণ্ডু ও সিদ্ধেশ্বর ধীবর নামের ওই দুই বিদায়ী কাউন্সিলর শনিবার বিষ্ণুপুর পুরভবনের সামনে জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত থেকে দাবি করলেন, তাঁদের ভুল বুঝিয়ে ওই চিঠিতে সই করানো হয়েছিল।
বৃহস্পতিবার তৃণমূল ত্যাগ করেন বিষ্ণুপুরের প্রাক্তন পুরপ্রধান শ্যাম মুখোপাধ্যায়। পরের দিন আরও ১১ জন বিদায়ী কাউন্সিলর ইস্তফাপত্রে সই করে তা শ্যামবাবুর হাতে তুলে দেন। তাতে ওই দু’জনেরও সই ছিল। তবে বাকি ন’জন তৃণমূলত্যাগী বিদায়ী কাউন্সিলরকে সঙ্গে নিয়ে শনিবার সকালে শ্যামবাবু মেদিনীপুরে গিয়ে বিজেপিতে যোগদান করেন।
এ দিন ওই দুই কাউন্সিলর তৃণমূল নেতৃত্বের সামনে দাবি করেন, ‘‘আমাদের ভুল বুঝিয়ে দলত্যাগের চিঠিতে সই করানো হয়েছিল। পরে যখন বিষয়টি জানতে পারি, তখনই নেতৃত্বকে জানাই, আমরা তৃণমূলেই থাকছি।” ওই সাংবাদিক বৈঠকে ছিলেন জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান শুভাশিস বটব্যাল, বিষ্ণুপুর পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান দিব্যেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ।
শুভাশিসবাবু দাবি করেন, “শ্যামবাবু প্ররোচনা দিয়ে মমতাদেবী ও সিদ্ধেশ্বরবাবুকে দলত্যাগের চিঠিতে সই করিয়েছিলেন। ওঁরা আমাদের দলেই রয়েছেন।” দুই বিদায়ী কাউন্সিলরের অবস্থান বদল নিয়ে শ্যামবাবু দাবি করেন, “আমি কাউকে দল ছাড়তে বলিনি। সবাই সিদ্ধান্ত নিজের ইচ্ছেয় নিয়েছিলেন। কে যাবেন, কে যাবেন না— সেটা তাঁদের ব্যক্তিগত ব্যাপার।”
শ্যামবাবু অবশ্য বিষ্ণুপুর থেকে বেশ কিছু বাসে অনুগামীদের নিয়ে মেদিনীপুর রওনা হন। এ দিন সকাল থেকে বিষ্ণুপুরের রসিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড থেকে মেদিনীপুরে বিজেপির সভার উদ্দেশে একে একে বাস রওনা হয়। বাসগুলিতে ‘দাদার অনুগামী’ পোস্টার সাঁটা ছিল।
শ্যামবাবু আগের দিন দাবি করেছিলেন, ওই সভার জন্য তিনি ৫২টি বাস ‘বুকিং’ করেছেন। যদিও বাস মালিকদের দাবি, সভায় গিয়েছে ২৭টি বাস। তা নিয়ে শুভাশিসবাবুর কটাক্ষ, “আমরা খবর পেয়েছি, ওঁর বেশির ভাগ বাসেই দু’-পাঁচ জন লোক ছিলেন। উনি জনভিত্তি আগেই হারিয়েছেন। এই ঘটনা প্রমাণ করল, এ বার তিনি রাজনৈতিক ভাবেও অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছেন।” শ্যামবাবুর অবশ্য দাবি, “জেলার বাইরে থেকে বহু বাস নিয়েছিলাম। বিষ্ণুপুর বিধানসভা কেন্দ্রের নানা জায়গা থেকে অন্তত ছ’হাজার মানুষকে বিজেপির সভায় নিয়ে গিয়েছিলাম।’’
শ্যামবাবুরা বিজেপিতে গেলেও স্থানীয় বিজেপি কর্মীরা তাঁকে দলে নিতে আগেই আপত্তি জানিয়েছেন। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে বিষ্ণুপুরে বিজেপির জেলা অফিসের বাইরে তাঁরা বিক্ষোভও দেখান। এ দিকে, শ্যামবাবু ও তাঁর অনুগামী বিদায়ী কাউন্সিলরেরা ইস্তফা দেওয়ায় আনন্দে শহর তৃণমূলের কর্মীদের একাংশ শুক্রবার রাতে সবুজ আবির নিয়ে পথে নেমেছিলেন। দিব্যেন্দুবাবু বলেন, “দলের তৃণমূল স্তরের কর্মীরা শ্যামবাবুকে মেনে নিতে পারছিলেন না। তাই তিনি দল ছাড়তেই প্রকাশ্যে উচ্ছ্বাস করেছেন।”
এ দিকে শনিবার শ্যামবাবু দলে যোগ দেওয়ার পরও অস্বস্তি লুকোতে পারেননি বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি হরকালী প্রতিহার। তিনি বলেন, “শ্যামবাবুকে দলের কর্মীরা কোনও ভাবেই মেনে নিতে রাজি নন। তাঁদের ক্ষোভ কমছে না।” শ্যামবাবু অবশ্য দাবি করছেন, “কাজ করার উদ্দেশ্যেই বিজেপিতে এসেছি। কাজটাই করব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy