খুনের মামলায় দুই অভিযুক্তকে আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। —নিজস্ব চিত্র।
বছর ছয় আগে এক খুনের মামলায় দুই অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করল বাঁকুড়া জেলা আদালত। শুক্রবার তাঁদের যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণা করলেন বিচারক। জেঠুকে খুনের অভিযোগে জেল হল দুই ভাইপোর।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ২০১৮ সালের ২ জুলাই বাঁকুড়া জেলার ওন্দা ব্লকের চূড়ামণিপুর গ্রামে খুন হন রবীন্দ্রনাথ মণ্ডল। তাঁকে কোদাল দিয়ে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ উঠেছিল। সেই ঘটনায় তাঁর দুই ভাইপোকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। বিচারপ্রক্রিয়া চলার সময় তাঁদের বিরুদ্ধে ২৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছিল। পাশাপাশি অন্যান্য তথ্যপ্রমাণও দাখিল করা হয়েছিল আদালতে। সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পর বিচারক দুই অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করেন। অভিযুক্তদের নাম রঘুনাথ মণ্ডল ও সোমনাথ মণ্ডল।
পুলিশ এবং আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, বাঁকুড়ার ওন্দা ব্লকের চূড়ামণিপুর গ্রামের দুই ভাই রবীন্দ্রনাথ এবং গোপালের মধ্যে দীর্ঘ দিন পারিবারিক বিবাদ চলছিল। সেই বিবাদের জেরে রবীন্দ্রনাথের পরিবারকে এক সময় বাড়ি ছাড়তে হয়েছিল। একাই থাকতেন রবীন্দ্রনাথ। অভিযোগ, ২০১৮ সালের ২ জুলাই সকালে গোপাল তাঁর দুই ছেলে রঘুনাথ এবং সোমনাথকে সঙ্গে নিয়ে তাঁর উপর চড়াও হন। প্রথমে তিন জন মিলে রবীন্দ্রনাথকে মারধর করেন। তার পর কোদাল দিয়ে কোপাতে শুরু করেন। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে ঘটনাস্থলে ফেলে রেখেই পালিয়ে যান অভিযুক্তেরা। পরে স্থানীয়েরা ওই অবস্থায় তাঁকে দেখতে পেয়ে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু চিকিৎসকেরা রবীন্দ্রনাথকে পরীক্ষা করে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এই ঘটনায় গোপাল এবং তাঁর দুই ছেলের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ করেছিলেন মৃতের স্ত্রী করুণাময়ী মণ্ডল। তদন্তে নেমে দিন কয়েকের মধ্যেই তিন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছিল ওন্দা থানার পুলিশ। ওই বছরই সেপ্টেম্বর মাসে আদালতে চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ। এর পর থেকে বাঁকুড়া জেলা আদালতে বিচার চলছিল। বিচার চলাকালীন ২০২০ সালে জেলেই মৃত্যু হয় গোপালের। বাকি দুই অভিযুক্তকে বৃহস্পতিবার দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। শুক্রবার ওই দুই ভাইকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন বিচারক।
বাঁকুড়া জেলা আদালতের সহকারী সরকারি আইনজীবী অরুণকুমার চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আদালত এই ঘটনায় ২৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও অন্যান্য তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে দুই অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করেছে। দোষীদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন বিচারক। যদি জরিমানার টাকা না দেন তাঁরা তবে আরও ছ’মাস কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন।’’ মৃতের আত্মীয় প্রবীর মণ্ডল বলেন, ‘‘নৃশংস এই ঘটনায় আমরা দোষীদের সর্বোচ্চ সাজা চেয়েছিলাম। কিন্তু তা হয়নি। আদালতকে যথাযথ সম্মান জানিয়েই বলছি এই রায়ে আমরা খুশি নই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy