বড়পর্দায়: দলনেত্রী, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তৃতা শুনছেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। মঙ্গলবার সিউড়িতে দলের জেলা কার্যালয়ে। নিজস্ব চিত্র
খয়রাশোলের দ্বীতেন মণ্ডল, রাজনগরের চঞ্চল মণ্ডল, সিউড়ির অমিত দত্ত রায় কিংবা মুরারইয়ের পার্থ মণ্ডল। এঁদের কেউ যুব কংগ্রেসের কর্মী হিসেবে ১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই কলকাতায় উপস্থিত ছিলেন। তার পর থেকে এক বারের জন্যও কলকাতায় একুশে জুলাইয়ের সভায় অনুপস্থিত থেকেছেন—এমনটা হয়নি। কেউ আবার এ রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর থেকে দলের একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে একুশে জুলাইয়ের সভায় কলকাতায় যেতে অভ্যস্ত ছিলেন।
করোনা-পরিস্থিতি সেই রুটিনে ছেদ টেনে দিল এ বার। তাতেই কোথাও একটা অপূর্ণতা রয়ে গেল—বলছেন অমিত, পার্থরা।
ভার্চুয়াল সভা থেকে তৃমমূল নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তৃতা শোনার পরে তাঁদের প্রতিক্রিয়া, ‘‘দলের সৈনিক হিসেবে ‘দিদি’-র নির্দেশ মেনে এগোনোর চেষ্টা করব। কিন্তু, এ বার কলকাতা গিয়ে সভায় শামিল না হওয়ার আক্ষেপ রয়েই গেল। তবে কিছু করারও নেই। পরিস্থিতিকে তো মানতেই হবে।’’
চঞ্চল মণ্ডল রাজনগরের কুশমাশোল গ্রামের বাসিন্দা। বছর তিপ্পান্নর ওই তৃণমূল কর্মী ’৯৩-এর ২১ জুলাই কলকাতায় ছিলেন যুব কংগ্রেসের কর্মী হিসেবে। বলছিলেন, ‘‘সে দিনের সেই স্মৃতি এখনও টাটকা। তার পর থেকে প্রতি বছর এই দিনটায় কলকাতায় গিয়ে দলনেত্রীর বক্তব্য শুনেছি। আমার মতো হাজার হাজার কর্মীর এই দিনের সঙ্গে আবেগ জড়িয়ে আছে। আজ চন্দ্রপুরে দলীয় কর্যালয়ে দিদির ভার্চুয়াল ভাষণ শুনেছি ঠিকই। কিন্তু, না যেতে পারার আফসোস থেকে গেল।’’ একই বক্তব্য খয়রাশোলের বাবুইজোড় গ্রামের, ষাটোর্ধ্ব তৃণমূল কর্মী দ্বীতেন মণ্ডলের। তিনিও ১৯৯৩ থেকে বিরামহীন ভাবে প্রতি বছর কলকাতায় শহিদ সমাবেশ যোগদিয়েছেন। দলনেত্রীর ভাষণ শুনেছেন। তিনিও শুনলেন বাবুইজোড় দলীয় কার্যালয়। তাঁর কথায়, ‘‘দিদির কথা মেনেই কাজ করব। তবে এ বার এই দিনটায় কলকাতায় না থাকতে পারায় মন ভাল নেই।’’
সিউড়ি ৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল সভাপতি অমিত দত্তরায়ও ১৯৯৩ সালের সেই দিনে কলকাতায় ছিলেন। বললেন, ‘‘ সেদিন যুব কংগ্রেসের কর্মী হিসেবে কলকাতায় গিয়েছিলাম। ময়ূরাক্ষী প্যাসেঞ্জারে হাওড়ায় নেমে যখন টি-বোর্ডের কাছে পৌঁছই, দেখি বাস জ্বলছে। পরে সব শুনি। সেই শুরু, তার পর দলকে ভালবেসে একবারের জন্যও এই দিনটিতে কলকাতায় যাওয়া বাদ যায়নি। ব্যাতিক্রম এ বার। তাই মন খারাপ। তবে বাস্তবকে মানতে হবে, কোভিড সংক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য ভার্চুয়াল সভা ছাড়া উপায় ছিল না।’’ অন্য দিকে, মুরারইয়ের বছর আঠাশের যুবক পার্থ মণ্ডল বলছেন, ‘‘মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার পরে ২০১০ সাল থেকে একুশে জুলাইয়ের সভায় যাই। এ বার যেতে না পেরে খুব খারাপ লাগছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy