এক আহতকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কোতুলপুরের রামডিহায়। নিজস্ব চিত্র
দলীয় কার্যালয়ের সামনেই দুই তৃণমূল নেতাকে মারধরের অভিযোগ উঠল কোতুলপুরের রামডিহায়। তৃণমূলে ‘অন্তর্দ্বন্দ্বের’ জেরেই এই ঘটনা, দাবি দলের একাংশের। আক্রান্ত গোপীনাথপুর পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য বসিরউদ্দিন শেখ এবং নারায়ণপুরের বুথ সভাপতি বাসুদেব ঘোষের চিকিৎসা হয় স্থানীয় ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। ঘটনার তদন্ত হবে বলে জানিয়েছেন তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অলোক মুখোপাধ্যায়।
তৃণমূলের অন্দরের খবর, চোরকোলা রামডিহা আশ্বিনকোটা গ্রামসভা সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির ‘বোর্ড অব ডিরেক্টরস’ পদে নির্বাচন ঘিরে কয়েকদিন ধরেই ক্রমশ তপ্ত হচ্ছিল রামডিহা। বৃহস্পতিবার সমিতির কার্যালয়ে নির্বাচিত ন’জন মনোনয়নপত্র জমা দিতে যান। সেগুলি তাঁদের থেকে কেড়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এর প্রতিবাদে তৃণমূলের আট জন বুথ সভাপতি পদত্যাগের ইচ্ছাপ্রকাশ করে চিঠি পাঠান বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি ও রাজ্য নেতৃত্বের কাছে।
রবিবার সকালে তৃণমূলের রামডিহা বুথ কার্যালয়ে বিষয়টি নিয়ে সংবাদমাধ্যমে বিবৃতি দিচ্ছিলেন বসিরউদ্দিন এবং বাসুদেব। অভিযোগ, হঠাৎ তাঁদের উপরে হামলা চালায় কয়েক জন। হামলাকারীরা সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদেরও তৃণমূল কার্যালয় থেকে ধাক্কা দিয়ে বার করে দেয়। কিছু ক্ষণ পরে পুলিশ এলে পালিয়ে যায় তারা।
বসিরুদ্দিনেক দাবি, ঘটনার নেপথ্যে রয়েছেন খোদ কোতুলপুরের ব্লক তৃণমূল সভাপতি তরুণ নন্দীগ্রামী। তাঁর অভিযোগ, “সমবায়কে শেষ করে দিতে চায় তরুণ। বুথ সভাপতিদের মতামতকে গুরুত্ব না দিয়ে নিজের পছন্দের লোক বসানো হচ্ছে বোর্ডে। সমবায়ের এত বড় ক্ষতি দেখতে পারব না বলেই আমরা বুথ সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিতে চাই। আমাদের মেরে ফেলার জন্য দুষ্কৃতীদের পাঠানো হয়েছিল। অশান্তির আঁচ পেয়ে কোতুলপুর থানায় আগেই জানিয়ে রেখেছিলাম।”
দলে ‘গোষ্ঠীকেন্দলের’ কথা স্বীকার করেছেন তৃণমূলের গোপীনাথপুর অঞ্চল সভাপতি নিতাই শাল। তরুণকে নিশানা করে তিনি বলেন, “ব্লক সভাপতি যেন মালিক, আর বাকি তৃণমূলকর্মীরা যেন ওর চাকর। আমরা শুধু নির্দেশ পালন করে চলেছি। যাদের সমিতির বোর্ডে বসানো হচ্ছে, তাদের অধিকাংশই ঋণখেলাপে অভিযুক্ত। প্রতিবাদ করলেই যদি মার খেতে হয়, তবে দলে থেকে লাভ কী।”
যাঁর দিকে অভিযোগের আঙুল উঠেছে, বারবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি সেই ব্লক সভাপতি তরুণের সঙ্গে। একাধিক বার তাঁর মোবাইলে ফোন করলেও তা বেজে গিয়েছে। উত্তর দেননি টেক্সট মেসেজেরও। তবে দলে তাঁর ‘অনুগামী’ বলে পরিচিত গোপীনাথপুর অঞ্চলের তৃণমূল সহ-সভাপতি মলয় বাগ প্রশ্ন তোলেন, ‘‘পদত্যাগ করতে হলে দলের অন্দরে জানাতে হবে। সেখানে না জানিয়ে কেন সাংবাদিকদের ডেকে জানানো হচ্ছিল?’’ তাঁর দাবি, ‘‘সমবায় সমিতির নির্বাচন নিয়ে যা হওয়ার, তা সর্বসম্মতিতেই হচ্ছে।”
তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংঠনিক জেলা সভাপতি বলেন, “কয়েকজন পদত্যাগ করতে চেয়েছেন বলে শুনেছি। মারধরের খবরও এসেছে। অঞ্চল এবং বুথ সভাপতিদের সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে বলা হয়েছে ব্লক সভাপতিকে। কী ঘটেছে তা দলীয়স্তরে অনুসন্ধান করা হবে। প্রয়োজনে রাজ্য নেতৃত্বকেও জানানো হবে। দোষীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কৃষিসমিতি কারও একার সম্পত্তি নয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy