অনুব্রত মণ্ডল।— ফাইল চিত্র
আবাস যোজনার বাড়ি নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ নতুন নয়। তবে, সেই অভিযোগ তুলেছে মূলত বিরোধী শিবিরের। কিন্তু শুক্রবার দলের প্রকাশ্য সভায় গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান, অঞ্চল সভাপতি ও পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যদের বিরুদ্ধে আবাস যোজনা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে শোরগোল ফেলে দিলেন তৃণমূলের এক বুথ সভাপতি। তা-ও জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের সামনেই!
শুক্রবার সিউড়ি ১ ব্লকের তিনটি অঞ্চলের বুথ-ভিত্তিক কর্মী সম্মলেনে এমন অভিযোগ তোলেন তিলপাড়া পঞ্চায়েত এলাকার হুসনাবাদ সংসদের শেখ জসিমউদ্দিন নামে ওই বুথ সভাপতি। অনুব্রত বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই অঞ্চল সভাপতির ক্ষমতা খর্ব করে ওই অঞ্চলে পাঁচ জনের কমিটি গড়ার নির্দেশ দিয়েছেন অনুব্রত। সম্প্রতি বুথ-ভিত্তিক কর্মী সম্মেলনে নানা বিষয় নিয়ে অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে জেলা নেতৃত্বকে। এ দিনও দলীয় নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে বুথ সভাপতির তোলা অভিযোগ দলকে বিড়ম্বনায় ফেলেছে।
এ দিনের সভাতেই অনুব্রতকে অস্বস্তিতে ফেলেন আলুন্দা পঞ্চায়েত এলাকার এক মহিলা তৃণমূল কর্মীও। ভোটের ফল কেন খারাপ জানতে চাইলে, পাঁচপাকুরিয়া গ্রামের ওই মহিলা জেলা সভাপতির মুখের উপরে বলে দেন, গ্রামের রাস্তা অত্যন্ত খারাপ, টোটো পর্যন্ত যেতে চায় না। পানীয় জলের কল খারাপ। তাই তৃণমূলকে আর ভোট দেবেন না।
তবে, এ দিনের সভায় জসিমউদ্দিনের অভিযোগ ঘিরে দলে ভালই শোরগোল পড়েছে। ওই বুথ সভাপতি বলতে উঠে দাবি করেন, প্রধান নিজে আবাস যোজনায় ঘর পেয়ে দোতলা বাড়িতে বাস করছেন। এমনকী, লোককে ঘর ভাড়াও দিয়েছেন। অথচ, এলাকার অনেক গারিব মানুষ আবাস যোজনায় বাড়ি পায়নি। প্রধানের বাড়ির পাশের চার পাঁচটি গরিব পরিবার চেয়ে ত্রিপল পর্যন্ত পায়নি!
জসিমউদ্দিনের আরও অভিযোগ, অঞ্চল সভাপতি ঘর পেয়ে সেখানে দোকান করেছেন। সিউড়ি ১ পঞ্চায়েত সমিতির এক সদস্য আবাস যোজনায় ঘর পেয়ে সেখানে সিমেন্টের গুদাম বানিয়েছেন।
তিলপাড়া পঞ্চায়েতের প্রধান সন্ধ্যা দাই ফোন ধরেননি। বহু চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি অঞ্চল সভাপতি বনোজ সাহার সঙ্গেও।
তবে সিউড়ি বিধানসভার পর্যবেক্ষক বিকাশ রায়চৌধুরী বলেছেন, ‘‘আমি এ দিনই অভিযোগ শুনলাম। সত্য মিথ্যা যাচাই না করে কিছু বলা সম্ভব নয়। তবে, অভিযোগ সত্যি হলে নিশ্চয়ই পদক্ষেপ করা হবে দলের তরফে। দলে থেকে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করবেন, এমন নেতাকর্মীকে দল বরদাস্ত করবে না।’’
তবে তৃণমূলের একটা সূত্র বলছে, সিউড়ি শহর লাগোয়া তিলপাড়া পঞ্চায়েত এলাকার হুসনাবাদ সংসদে দলের নিজেদের মধ্যে ঝামেলা লেগেই আছে। নির্বাচনের আগে অঞ্চল সভাপতি বনোজ সাহার উপর হামলার ঘটনা ঘটেছিল। সেখানে নাম জড়িয়েছিল বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর।
আবার লোকসভা নির্বাচনের আগেই অঞ্চল ভিত্তিক নির্বাচনী সভায় গিয়ে দলের কর্মীদের কাছ থেকে স্থানীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ নালিশ শুনতে হয়েছিল বিধায়ক ও সভাধিপতিকে। তৃণমূল সূত্রের খবর, তখনও অভিযোগ ছিল পঞ্চায়েত প্রধান, তাঁর ছেলে এবং অঞ্চল সভাপতির বিরুদ্ধেই। এ দিনের সভাতেও ওই তিন জনের বিরুদ্ধেই অভিযোগ উঠেছে।
‘‘এ দিনের অভিযোগের পিছনেও দলের অন্তর্কলহ আছে কিনা, তা তদন্ত করে দেখা হবে। অভিযোগ অত্যন্ত গুরুতর।’’— মন্তব্য এক জেলা তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy