Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
TMC

TMC: অনুব্রত নেই বলে কি ছন্দ নেই তৃণমূলে

তৃণমূলে সূত্রে খবর, চেয়ারম্যান পদ দেওয়া হলেও তাঁকে সে পদের দায়িত্ব সে ভাবে কখনওই পালন করতে দেওয়া হয়নি বলে ঘনিষ্ঠ মহলে আক্ষেপ ছিল।

প্রত্যাশিত ভিড় নেই বোলপুরের পাড়ুইয়ের কসবা অঞ্চলে তৃণমূলের কর্মী সম্মেলনে। রবিবার।

প্রত্যাশিত ভিড় নেই বোলপুরের পাড়ুইয়ের কসবা অঞ্চলে তৃণমূলের কর্মী সম্মেলনে। রবিবার। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিউড়ি শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০২২ ০৮:১৬
Share: Save:

অনুব্রত মণ্ডল অসুস্থ। প্রায় দেড় মাস তিনি জেলার বাইরে। সক্রিয় রাজনীতির আঙিনা থেকে এতটা সময় বাইরে থাকতে তাঁকে কেউ দেখেননি। এমনকী মায়ের মৃত্যু বা প্রয়াত স্ত্রীর অসুস্থতার সময়েও না। জেলা তৃণমূলের সভাপতির না থাকার প্রভাব যে পড়ছে না জানা যাচ্ছে জেলা তৃণমূলের অন্দরে উঁকি দিলেই। এক কর্মীর কথায়, ‘‘কেষ্টদা না থাকায় সবই যেন কেমন অগোছালো ছন্নছাড়া হয়েছে পড়েছে। সেই বাঁধুনিটাই আর নেই।’’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতা বলছেন, ‘‘কেষ্টর কোনও বিকল্প নেই।’’

গত মাসের ৫ তারিখ তিনি বীরভূম থেকে কলকাতায় গিয়েছিলেন। গরু পাচার মামলায় পর দিন সিবিআই দফতরে তাঁকে তলব করেছিল সিবিআই। কিন্তু ৬ এপ্রিল বুকে ব্যথা এবং শ্বাসকষ্ট নিয়ে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি হন অনুব্রত। তারপর থেকে টানা ২৩ তারিখ পর্যন্ত উডবার্ন ব্লকে ভর্তি ছিলেন তিনি। ২৩ তারিখ এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেতেই অনুব্রত মণ্ডলকে ডেকে পাঠায় সিবিআই। যদিও তিনি শারীরিক অসুস্থতা ও চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে যান নি। বৃহস্পতিবার ফের একটি সল্টলেকের বাইপাসের একটি হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে তাঁকে। এই সব কারণে সক্রিয় রাজনীতি থেকে দূরে অনুব্রত।

এই ‘দূরত্বের’ জেরেই সমস্যা তৈরি হয়েছে বলে দলীয় সূত্রে খবর। জেলা তৃণমূলের এক নেতার কথায়, ‘‘যে যাঁর মতো চলছেন। দলের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড মুখ থুবড়ে পড়েছে। মিছিল মিটিং করা, প্রত্যেক নেতা-কর্মীর সম্পর্কে খবরাখবর নেওয়া, প্রতিটি পদক্ষেপে কেষ্টদার অভাব ভীষণ ভাবে অনুভূত হচ্ছে।’’ তৃণমূল সূত্রে খবর, এই পরিস্থিতিতে দলের অনেক নেতার মধ্যেই কোনও যোগাযোগ নেই। কোনও বৈঠক নেই।

দলের এমন অবস্থার প্রভাব নিচুতলাতেও পড়ছে বলে জানাচ্ছেন অনেকে। জল্পনা চলছে, দীর্ঘদিন তো এমন চলতে পারে না। কাউকে না কাউকে তো দলের হাল ধরতে হবে। জেলায় অনুব্রতর পরের ধাপে রয়েছেন জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, বিধায়ক তথা জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি অভিজিৎ সিংহ, জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী। এত জন নেতা থাকলেও সমন্বয়হীনতার কথা উঠছে কেন? মন্তব্য এড়িয়ে গিয়েছেন বিকাশ ও অভিজিৎ। জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় প্রসঙ্গ এড়িয়ে বলছেন, ‘‘আমি শুধু আমার বিধানসভা এলাকায় কর্মকাণ্ডে যোগ দিচ্ছি। বাইরে কোথাও নয়।’’

তৃণমূলে সূত্রে খবর, চেয়ারম্যান পদ দেওয়া হলেও তাঁকে সে পদের দায়িত্ব সে ভাবে কখনওই পালন করতে দেওয়া হয়নি বলে ঘনিষ্ঠ মহলে আক্ষেপ ছিল। তার পরে সম্প্রতি বগটুই কাণ্ডের পরে যে ভাবে নানা বিতর্কে তাঁর নাম জড়িয়েছে তাতে আশিসবাবু ‘বিরক্ত’ বলে অন্দরের গুঞ্জন। সেই কারণেই নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন তিনি। বিকাশ বা অভিজিৎ রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যোগ দিলেও বাহ্যিক ভাবে নিজেদের ‘ছায়া’ বাড়াতে চাইছেন না।

তবে এক মাত্র ব্যতিক্রম মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ। অনুব্রতর অবর্তমানে তাঁকেই সবচেয়ে সক্রিয় হিসেবে দেখা যাচ্ছে। বিভিন্ন সরকারি কর্মসূচিতে যোগ দেওয়া থেকে সাংগঠনিক দিক ধরে রাখার চেষ্টা চালাচ্ছেন চন্দ্রনাথ। তিনি অবশ্য অনুব্রত মণ্ডলের না থাকাকে সমস্যা বলে মনে করছেন না। চন্দ্রনাথ বলেন, ‘‘কেউ অসুস্থ হতেই পারেন । সেখানে কারও হাত নেই। আমাদের টিম খুব মজবুত, সজাগ। তাই আমাদের খুব একটা সমস্যা কিছু হচ্ছে না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Anubrata Mondal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy