Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus

হবে আরও এক কোভিড হাসপাতাল

কোভিড লেভেল ২ হাসপাতালের তকমা থাকলেও ওই হাসপাতালে কোভিড-১৯ পজ়িটিভ কোনও রোগীর চিকিৎসা হচ্ছিল না।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

দয়াল সেনগুপ্ত
সিউড়ি শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০২০ ০৫:৪৩
Share: Save:

করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় নতুন করে রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলায় স্বয়ং সম্পূর্ণ কোভিড হাসপাতাল গড়ার সিদ্ধান্ত নিল জেলা প্রশাসন। বুধবার বিকেলে জেলা প্রশাসনের একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। বৈঠকে জেলাশাসক, জেলা পুলিশ সুপার, জেলা পরিষদের মেন্টর এবং দু’টি স্বাস্থ্য জেলার কর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এত দিন পর্যন্ত রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ২০০ মিটারের মধ্যে থাকা একটি নার্সিংহোমে সম্ভাব্য করোনা রোগীদের রাখার ব্যবস্থা হয়েছিল। কোভিড লেভেল ২ হাসপাতালের তকমা থাকলেও ওই হাসপাতালে কোভিড-১৯ পজ়িটিভ কোনও রোগীর চিকিৎসা হচ্ছিল না। এ দিনের বৈঠকে ঠিক হয়েছে, করোনা-আক্রান্তদের চিকিৎসার স্বার্থে রামপুরহাটের সেই নার্সিংহোমকেই দ্রুত ৪০ থেকে ৫০ শয্যার কোভিড হাসপাতালে রূপান্তরিত করা হবে। জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু বলেন, ‘‘রামপুরহাটে কোভিড হাসপাতাল গড়ার আবেদন জানাচ্ছি। এ বার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশের অপেক্ষা।’’

জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, এপ্রিলের গোড়াতেই জেলার তিনটি মহকুমায় একটি করে মোট তিনটি কোভিড হাসপাতাল তৈরির ভাবনা নেওয়া হয়েছিল। যেখানে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা হবে। সেই মতো এপ্রিলে বোলপুর ও সিউড়ির দু’টি নার্সিংহোম এবং তারাপীঠের কাছে একটি বেসরকারি হোটেলকে চিহ্নিত করা হয়। সেগুলি পরিদর্শনও করেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা। কিন্তু, একমাত্র বোলপুর ছাড়া স্বয়ংসম্পূর্ণ ভাবে লেভেল ওয়ান কোভিড হাসপাতাল সিউড়ি বা রামপুরহাটে করা যায়নি। সিউড়ির নার্সিংহোমটি ঘনজনবসতিপূর্ণ এলাকায় হওয়ায় সেখানে কোভিড হাসপাতাল গড়া যায়নি। তারাপীঠের কাছে যে হোটেলটি দেখা হয়েছিল, সেটিকেও করোনা আইসোলেশন সেন্টারের বেশি করা যায়নি। পরে রামপুরহাট মেডিক্যালের কাছে অন্য একটি নার্সিংহোমে সম্ভাব্য করোনা রোগী রাখার ব্যবস্থা হয়।

এত দিন জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা নগণ্য হওয়ায় অসুবিধা ছিল না। কিন্তু, পরিযায়ী শ্রমিকদের জেলায় ফেরা শুরু হতেই চিত্রটা দ্রুত বদলাতে শুরু করেছে। মঙ্গলবার এক দিনে ২৪ জন পরিযায়ীর শরীরে করোনা সংক্রমণ ছড়াতেই ভিন্ন ভাবনা শুরু করতে বাধ্য হয়েছে প্রশাসন। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা আড়ালে বলছেন, ‘‘এ ভাবে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লে দুর্গাপুর ও বোলপুরে কোভিড হাসপাতাল সকলের চিকিৎসা সম্ভব নয়। তাই করোনা রোগীদের চিকিৎসার পরিকাঠামো গড়ে না তুলে উপায় কী!’’

তার পরেও জেলায় সংক্রমণ রোখা যাবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় থাকছে। কারণ পরিযায়ী শ্রমিকদের বিপুল সংখ্যায় আগমন। জেলা প্রশাসনের তথ্যই বলছে, এ পর্যন্ত যাঁদের শরীরে করোনা ধরা পড়ছে তাঁদের ৯৫ শতাংশই ভিন্ রাজ্য থেকে আসা শ্রমিক। এই অবস্থায় গ্রামাঞ্চলে নজরদারি বাড়াতে জেলার প্রতিটি ব্লকে কমিটি গঠন করল জেলা প্রশাসন। বুধবার বিকেলের বৈঠকেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, নজরদারির জন্য প্রতিটি পঞ্চায়েত এলাকায় দু’টি মোটরবাইকে চার জন সিভিক ভলান্টিয়ার এলাকায় ঘুরবেন। সঙ্গে থাকবেন আশাকর্মীরা। প্রয়োজনীয় তথ্য সিভিককর্মীরা সংশ্লিষ্ট থানা এবং আশাকর্মীরা স্বাস্থ্য দফতরকে জানাবেন।

করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার প্রথম থেকেই গ্রামাঞ্চলের খবর সংগ্রহ করার জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে সিভিক ভলান্টিয়ার এবং স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে আশাকর্মীদের ব্যবহার করা হয়েছিল। এ বার সেই প্রক্রিয়া আরও মজবুত করার জন্য ব্লক স্তরের কমিটি গঠন করা হল বলে প্রশাসনিক কর্তাদের দাবি। সূত্রের খবর, প্রতিটি ব্লকের বিডিও, বিএমওএইচ, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি এবং সংশ্লিষ্ট থানার ওসি কিংবা আইসি-দের নিয়ে ওই চার সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। আজ, বৃহস্পতিবার সিউড়ির ডিআরডিসি হলে এই নিয়ে বৈঠকও হওয়ার কথা। বৈঠকে হাজির জেলা পরিষদের মেন্টর অভিজিৎ সিংহ বলেন, ‘‘নজরদারি বৃদ্ধির জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্লক স্তরের কমিটি গঠন করা হয়েছে। ব্লক কমিটির সদস্যদের প্রতিদিন বৈঠকে বসে সিভিক ও আশা কর্মীদের কাছে থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।’’

সহ প্রতিবেদন: শুভদীপ পাল

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy