—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
জেলার বেহাল স্বাস্থ্য-পরিকাঠামো নিয়ে বারবার নানা অভিযোগ উঠেছে। এরই মধ্যে বরাদ্দের প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা পড়ে থাকা নিয়ে প্রশ্নে পুরুলিয়া জেলা স্বাস্থ্য দফতর। তৈরি হয়েছে সময়ের মধ্যে বরাদ্দ খরচ না করা গেলে টাকা ফেরত যাওয়ার আশঙ্কাও। সময়ের মধ্যে বরাদ্দ খরচের দাবি তোলার পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের নজরে বিষয়টি আনা হয়েছে।
সূত্রের খবর, জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্মী জেলা প্রশাসনে চিঠি দিয়েছেন। চিঠিতে উল্লেখ রয়েছে, ‘ফিনান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট রিপোর্ট’ বা ‘এফএমআর’ অনুযায়ী, অক্টোবরের হিসেবে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের বিভিন্ন খাতে খরচের জন্য যে অর্থ বরাদ্দ হয়েছিল, তার মধ্যে পড়ে থাকা টাকার পরিমাণ ৪ কোটি ৪৭ লক্ষ। বিগত বছরগুলিতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন খাতে বরাদ্দ অর্থ খরচ করতে না পারায় তা ফেরত চলে গিয়েছে। এ বারও সেই পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হয়েছে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের একটি সূত্রের দাবি, ‘ইন্টিগ্রেটেড ডিজিজ সার্ভিলেন্স প্রোগ্রাম’ বা ‘আইডিএসপি’ খাতে জেলার জন্য ৯০.৭৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। অক্টোবরের শেষ পর্যন্ত এই খাতে মাত্র ১৮.৭২ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। ওই বরাদ্দ সাপে কাটা, কুকুর কামড়ানো রোগীদের চিকিৎসা-সহ ডেঙ্গি, ফাইলেরিয়া, ম্যালেরিয়া দূরীকরণের মতো কর্মসূচিতে ব্যয় করা হয়। খরচ করা হয় চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ, সচেতনতা প্রচার ও পরিকাঠামোগত ক্ষেত্রেও।
এর পাশাপাশি, ‘ন্যাশন্যাল প্রোগ্রাম অন ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড হিউম্যান হেলথ’ বা ‘এনপিসিসিএইচএইচ’ খাতেও বরাদ্দের ৭১ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ২৫.৯৭ লক্ষ টাকা অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে বলে দাবি। আবহাওয়া পরিবর্তনজনিত রোগ ও তা নিয়ে সচেতন করার কাজে নিচুতলায় পঞ্চায়েতের সঙ্গে সমন্বয় রেখে ওই বরাদ্দ ব্যবহার করা যায়। অভয় মাহাতো নামে এক স্বাস্থ্যকর্মীর কথায়, “আমন চাষের মরসুমে বা কালবৈশাখীর সময়ে বাজ পড়ে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে অনেকের মৃত্যু হয়। তা নিয়ে সচেতনতা প্রচারে ওই তহবিলের অর্থ খরচ করা হয়। এ ছাড়া, জেলায় তীব্র গরমে ‘সানস্ট্রোক’ এড়াতে নিচুতলায় নানা সচেতনতামূলক কর্মসূচি নেওয়া হয়। সে ক্ষেত্রেও ওই তহবিলের অর্থ ব্যয় করা হয়।” এ ছাড়া, ‘ন্যাশন্যাল টোব্যাকো কন্ট্রোল প্রোগ্রাম’, ‘ন্যাশন্যাল ভেক্টরবর্ন ডিজিজ় কন্ট্রোল প্রোগ্রাম’-সহ বিভিন্ন খাতে অনেক অর্থ পড়ে রয়েছে বলে দাবি।
অভয় বলেন, “বিভিন্ন খাতে অব্যবহৃত বরাদ্দ যাতে খরচ করা হয়, তা জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। সভাধিপতির নজরেও বিষয়টি আনা হয়েছে। নিচুতলায় যক্ষ্মা আক্রান্তদের বিভিন্ন পরীক্ষার দাবিও রয়েছে। সেই পরিকাঠামো তৈরিতেও নির্দিষ্ট তহবিলের অর্থ খরচ করা যেতে পারে।”
সভাধিপতি নিবেদিতা মাহাতো বলেন, “বিভিন্ন খাতে বরাদ্দ খরচের ক্ষেত্রে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কিছু বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এক খাতের অর্থ অন্য খাতে খরচ করা যায় না। কোনও সমস্যা হচ্ছে কি না, তা নিয়ে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলব।” মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অশোক বিশ্বাস বলেন, “কিছু কর্মসূচি মাঝপথে রয়েছে। তা শেষ হলে ওই খাতের বরাদ্দও খরচ হবে। তা ছাড়া, ওই রিপোর্ট অক্টোবরের। তার পরে কাজ আরও এগিয়েছে। বরাদ্দও খরচ হয়েছে।”
কোন খাতে কত বরাদ্দ পড়ে
ইন্টিগ্রেটেড ডিজিজ় সার্ভিলেন্স প্রোগ্রাম: ৭৯ শতাংশ
ন্যাশন্যাল প্রোগ্রাম অন ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড হিউম্যান হেল্থ: ৭১ শতাংশ
ন্যাশন্যাল টোব্যাকো কন্ট্রোল প্রোগ্রাম: ৩৬ শতাংশ
ন্যাশন্যাল ভেক্টরবর্ন ডিজিজ় কন্ট্রোল প্রোগ্রাম: ৩৭ শতাংশ
ন্যাশনাল টিউবারকুলোসিস ইরাডিক্যাল প্রোগ্রাম: ২৪ শতাংশ
ন্যাশনাল প্রোগ্রাম ফর প্রিভেনশন অ্যান্ড কন্ট্রোল অফ ডিফ্নেস: ২১ শতাংশ
হেল্থ সিস্টেম সায়েন্স (আর্বান): ২৮ শতাংশ
হেল্থ সিস্টেম সায়েন্স (রুর্যাল): ১৮ শতাংশ
সূত্র: ফিনান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট রিপোর্ট, অক্টোবর, ২০২৪
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy