আটক বালির গাড়ি। নিজস্ব চিত্র
নদীর ঘাট থেকে বালিপাচার রুখলেন গ্রামবাসী। বাসিন্দাদের দাবি, আটক করা হয় ২৪টি গাড়ি।
মঙ্গলবার ভোরে পুরুলিয়া ১ ব্লকের গাড়াফুসড় পঞ্চায়েতের গাড়াফুসড় ও কাঁটাবেড়া গ্রামের মাঝামাঝি কংসাবতী নদীর ঘাট থেকে বালি পাচার করা হচ্ছিল বলে অভিযোগ। ভোরে বেশ কয়েকটি বালি বোঝাই ট্রাক্টর আটক করেন এলাকাবাসী। পরে পুলিশ সেগুলি বাজেয়াপ্ত করে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই গাড়িগুলির চালকদের কাছে বালি তোলার ছাড়পত্র ছিল না।
কংসাবতী নদীর যে ঘাট থেকে বালি তুলে পাচার হচ্ছিল বলে অভিযোগ, সেখানে পানীয় জলের একটি প্রকল্প রয়েছে। ওই প্রকল্প থেকে জল যায় পুরুলিয়া-১ ব্লকের কাঁটাবেড়া, গাড়াফুসড়, চিড়কা, রানিবাঁধ, সিন্দরি এবং আড়শা ব্লকের বামুনডিহা, জুরাডি, কাঞ্চনপুর, কুদাগাড়া ও মানপুর-সহ বহু গ্রামে। এলাকাবাসীর একাংশের দাবি, যে ঘাটে পানীয় জলের প্রকল্প রয়েছে, সেই ঘাট থেকে বালি তোলা যায় না। তবুও বেশ কিছুদিন ধরে রাত বাড়লেই ঘাট থেকে বালি তুলে ট্রাক্টরে চাপিয়ে পাচার হচ্ছিল। তাঁদের অভিযোগ, ‘‘এই ঘটনার কথা প্রশাসনকে জানিয়েও কাজ হয়নি।’’
গাড়াফুসড় গ্রামের বাসিন্দা ইন্দ্রজিৎ মাহাতোর অভিযোগ, ‘‘রাত বাড়লেই বালি বোঝাই ট্রাক্টরের দাপাদাপি শুরু হয়।’’ এলাকার আর এক বাসিন্দা বাদলচন্দ্র মাহাতোর প্রশ্ন, ‘‘এ ভাবে বালি পাচার হলে, পানীয় জল মানুষ পাবে কোথা থেকে!’’
বালিপাচার নিয়ে এলাকায় ক্ষোভের পারদ চড়ছিল অনেকদিন ধরেই। এ দিন পাচারকারীদের ধরবেন বলে ওঁত পেতে ছিলেন এলাকাবাসী। ভোরে কয়েকটি বালি বোঝাই ট্রাক্টর নদীঘাট থেকে রাস্তায় উঠতেই তাঁরা সেগুলি ঘিরে ফেলেন। বালি তোলার বৈধ অনুমতি রয়েছে কিনা, তা জানতে চান চালকদের থেকে। তাঁরা কেউই নথি দেখাতে পারেননি বলে দাবি এলাকাবাসীর একাংশের। নদীর ঘাটে থাকা অন্য গাড়িগুলিও আটক করেন গ্রামবাসী। পুলিশ সেখানে যায়। পৌছন জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের প্রতিনিধিরাও। ততক্ষণে অবশ্য এলাকা ছেড়ে চম্পট দিয়েছিল গাড়ি চালকেরা। পুলিশ ট্রাক্টরগুলি আটক করে।
বিডিও (পুরুলিয়া-১) দিব্যজ্যোতি দাস বলেন, ‘‘বালি বোঝাই ট্রাক্টরগুলির মালিকদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, পাচারের ঘটনা প্রশাসনের নজরে আনার পরেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ ব্যাপারে বিডিও বলেন, ‘‘নিয়মিত অভিযান চালানো হয় বলেই রাতের অন্ধকারে বালি তোলা হচ্ছিল।’’
অতিরিক্ত জেলাশাসক তথা জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক সুপ্রিয় দাস বলেন, ‘‘ট্রাক্টরগুলিকে আটক করা হয়েছে। সবক’টি ট্রাক্টরের চালকই পলাতক। বিধি মোতাবেক জরিমানা করা হবে। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, কিছু ট্রাক্টরের বৈধ কাগজপত্র নেই। বিষয়টি খতিয়ে দেখে পুলিশকে জানাব।’’
জেলা পরিষদের সভাধিপতি তৃণমূলের সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রাতের অন্ধকারে কোথাও কোথাও বালি পাচার হচ্ছে। কারা এর সঙ্গে যুক্ত, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বালিপাচার হচ্ছে, অথচ, প্রশাসনের নিচুতলায় যাঁরা রয়েছেন, তারা কিছু জানেন না, এটা হয় না।’’ বালিপাচার রোধে স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy