সুনসান: এমনই অবস্থা সোনাঝুরি হাটের। নিজস্ব চিত্র
উঠেছে লকডাউন, ধীরে ধীরে সমস্ত কিছু স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই। কিন্তু পর্যটন ব্যবসার মতোই অনিশ্চিত শান্তিনিকেতনের সোনাঝুরি বা খোয়াই হাট। যদিও শান্তিনিকেতন রোডের ধারে হস্তশিল্পের দোকানগুলি খুলেছে ইতিমধ্যেই, কিন্তু খোয়াই হাট খোলা নিয়ে সংশয়ে আছে স্থানীয় প্রশাসন। প্রথমত, ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত পর্যটকদের আসা ও বেচাকেনা, দ্বিতীয়ত, স্বাস্থ্যবিধির বিষয়টি।
বোলপুর শ্রীনিকেতনের বিডিও শেখর সাঁই বলেন, ‘‘পর্যটক আসার ব্যবস্থা স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত হাট খুলবে না।’’ কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে পর্যটক এলেও হাট কীভাবে খোলা যাবে? পারস্পরিক দূরত্ববিধি মানা হবে কেমন করে তা নিয়ে। সরকারি নির্দেশ মতো জেলার বিভিন্ন জায়গায় শপিং মল, হোটেল-রেস্তরাঁ, সড়ক পরিবহণ ইতিমধ্যেই চালু হয়েছে। শান্তিনিকেতনে ইদানিংকালে সপ্তাহান্তের ভিড় বাড়ত এই খোয়াই হাটকে কেন্দ্র করেই। প্রকৃতির কোলে বেড়ে ওঠা সোনাঝুরি গাছের নীচে লাল মাটিতে এই হাট প্রথমদিকে প্রতি সপ্তাহের শনিবার বসত। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ওই দিন হাটে জামা কাপড় থেকে অলংকার, ঘর সাজানোর বিভিন্ন সামগ্রী সহ নানান জিনিসের পসরা সাজিয়ে বসতেন। প্রথমে স্থানীয়রাই কেনাকাটি করতেন। আস্তে আস্তে প্রচার বাড়ায় কলকাতা ও সংলগ্ন ক্রেতার ভিড় বেড়েছিল। হাটের প্রসারও বেড়েছিল। সম্প্রতি প্রতিদিনই হাট বসছিল। হাট দেখতে বিদেশের পর্যটকেরাও আসতেন।
রোজ বসলেও শনি-রবিবার সবচেয়ে বেশি ভিড় লক্ষ্য করা যায় ওই হাটে। কিন্তু করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে জেলা প্রশাসনের নির্দেশ মতো গত ১৫ মার্চ একটি নির্দেশিকা জারি করে সোনাঝুরির হাটটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এখনও পর্যন্ত ওই হাটটি খোলেনি। দীর্ঘ তিন মাসের কাছাকাছি হাটটি বন্ধ থাকায় সমস্যায় পড়েছেন হাটের সঙ্গে যুক্ত শিল্পী ও ব্যবসায়ীরা। তাঁরা চাইছেন দ্রুত যাতে হাটটি খোলার ব্যবস্থা করা হয়। হাটে বসা বাউল শিল্পী তরুণ ক্ষ্যাপা বাউল, আনন্দ গোপাল দাস বাউলরা বলেন, ‘‘খোয়াইয়ের হাটে আসা পর্যটকদের গান শুনিয়ে খুশি করে যা টাকা পাই তাতেই কোনও রকমে সংসার চলে, কিন্তু করোনার কারণে সেই হাটও কয়েক মাস ধরে বন্ধ থাকায় আমাদের রুজি রোজগার বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় অনেককে অনাহারের মধ্যেও দিন কাটাতে হচ্ছে। আমরা চাই প্রশাসনের তরফ থেকে হাটটি খোলার ব্যাপারে উদ্যোগ নিলে ভাল হয়।’’ হাটে বসা ব্যবসায়ীরাও চাইছেন হাটটি যাতে পুনরায় খোলার ব্যবস্থা করা হয়। হাট কমিটির সম্পাদক শেখ কওসার বলেন, ‘‘আমরা পারস্পরিক দূরত্ববিধি মানব। দরকারে হাটের পরিধি বাড়বে, কিন্তু আমাদের পেটে টান পড়েছে। সংসার চলছে না এভাবে হাট বন্ধ থাকায়।’’
এই বিষয়ে রূপপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান রণেন্দ্রনাথ সরকার বলেন, ‘‘এই নিয়ে আমরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বসে কবে হাট খোলা হবে তা খুব তাড়াতাড়ি ঠিক করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy