মারমুখী: ব্যবসায়ীকে জুতোপেটা।নিজস্ব চিত্র
মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলেকে চোর অপবাদে বাঁশ দিয়ে পেটাচ্ছিলেন এক ব্যবসায়ী ও তার ছেলে। চোখের সামনে তা দেখে ওই ব্যবসায়ীকে পাল্টা জুতোপেটা করলেন প্রহৃত কিশোরের মা। জনরোষ থেকে বাঁচাতে পুলিশ এসে দ্রুত ওই ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। রামপুরহাট পুরশহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সোমবার সকালের ঘটনা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রহৃত কিশোরের বাড়ি রামপুরহাটের গুগ গ্রামে। বছর পনেরোর ছেলেকে নিয়ে রামপুরহাটের ব্যাঙ্ক রোড এলাকার এক ব্যাঙ্কে টাকা তুলতে এসেছিলেন তাঁর মা ক্ষমারানী দাস। ওই বধূ জানান, ছেলেকে রাস্তার ধারে একটা দোকানের সামনে বসিয়ে হাতে মোবাইল দিয়ে ব্যাঙ্কে ঢুকেছিলেন। লিঙ্ক না থাকায় কাজে দেরি হচ্ছিল। সব মিলিয়ে আধ ঘণ্টা ব্যাঙ্কে ছিলেন। পুলিশের কাছে ওই বধূ জানিয়েছেন, ব্যাঙ্কের কাজ মিটিয়ে বেরিয়ে ছেলের দেখা পাননি। তখনই নজরে আসে রাস্তার সামনে চিৎকার, চেঁচামেচি হচ্ছে।
ক্ষমরানীদেবীর কথায়, ‘‘সামনে এগিয়ে দেখি আমার ছেলেকেই বেধড়ক মারছে। আর মাথার ঠিক রাখতে পারিনি। জুতোপেটা করি।’’ আশপাশে লোকজন থাকলেও শুরুতে কেউ মারধরে বাধা দেননি বলেও দাবি। ছেলের প্রকৃত পরিচয় পেয়ে সম্বিত ফেরে এলাকার কয়েক জনের। এর পরেই টহলদার পুলিশ খবর পেয়ে ওই ব্যবসায়ীকে জনরোষের হাত থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। ‘‘ছেলের মানসিক বিকাশ আর পাঁচ জনের মতো নয়। তাকেই কেউ চোর সন্দেহে মারধর করতে পারে ভাবিনি’’— বলছেন ওই বধূ।
প্রহৃত কিশোর। নিজস্ব চিত্র
চোর হোক আর ছেলেধরা— সন্দেহের বশে মারধর আগেও হয়েছে রামপুরহাটে। ২৯ জুলাই ছেলেধরা সন্ধেহে এক কিশোরকে মারধর করা হয় শহরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কালীশাঁড়া পাড়া এলাকায়। মাস দেড়েক আগে রামপুরহাট ভাঁড়শালা পাড়া এলাকায় কেপমার সন্দেহে দুই জন মহিলাকে বাস থেকে নামিয়ে মারধর করা হয়। এ দিন সকালে যে ওয়ার্ডে গণপিটুনির ঘটনা ঘটে, সেই ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলর শুভাশিস চৌধুরী বলেন, ‘‘এই ধরণের ঘটনা বরদাস্ত করা হবে না। ওয়ার্ডে এই ধরণের ঘটনা কেন ঘটল খোঁজ নিয়ে দেখব।’’ দোষী ব্যক্তির উপযুক্ত শাস্তিরও দাবি করেছেন তিনি। তবে এই ঘটনায় কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি।
পর পর এমন ঘটনায় উদ্বেগে রামপুরহাট পুলিশও। সন্দেহজনক কিছু মনে হলে আইন হাতে না নিয়ে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে মহকুমা পুলিশের তরফে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy