শুভেন্দু, সৌমিত্র, সুদীপ। নিজস্ব চিত্র
দুয়ারে সরকার শিবির শুরুর আগের দিন সোমবার, পুরুলিয়ায় গিয়ে ওই কর্মসূচিতে রাজ্য সরকারের পাট্টা দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি তুললেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
এ বার শিবিরে যে দু’টি নতুন প্রকল্প যুক্ত হয়েছে, তার অন্যতম পাট্টা বিলি। শুভেন্দুর দাবি, ‘‘পাট্টা দেওয়ার আগে জমি যাচাই করতে হয়। কোথাও শ্মশান, কোথাও কবরস্থান, কোথাও দেবোত্তর জমি রয়েছে। এক্ষেত্রে কি তা হয়েছে? নিয়ম অনুযায়ী পাট্টা দেওয়ার আগে খাস জমির তালিকা ব্লকে ব্লকে টাঙানো উচিত। অভিযোগ থাকলে নিষ্পত্তির জন্য ১৫ দিন সময় দিতে হবে। কিন্তু দুয়ারে সরকারের শিবিরে পাট্টা দেওয়া শুরু হচ্ছে! এতে অশান্তি বাধবে। এই ধাপ্পাবাজির আমরা বিরোধিতা করছি।’’ ফের কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পগুলিকে ‘বিক্রি করে’ পঞ্চায়েত ভোট জিততে কাজে লাগানো হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলেন শুভেন্দু। যদিও সে দাবি মানেননি তৃণমূল নেতৃত্ব।
এ দিন পুরুলিয়া শহরের নামোপাড়ায় জগদ্ধাত্রী পুজোর সূচনা করতে এসে শুভেন্দু দাবি করেন, দুয়ারে সরকার কর্মসূচিতে হাতে গোনা কয়েকটি প্রকল্প বাদ দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পগুলিকেই নাম বদলে চালানো হচ্ছে। তাঁর অভিযোগ, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটের বাজনা বাজছে। খসড়া প্রার্থী তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। তার আগে মানুষকে পরিষেবা পাইয়ে দিতে ওই কর্মসূচিতে তৃণমূল সরকার ফের কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পগুলিকে ‘বিক্রি করে’ পঞ্চায়েত ভোট জিততে চাইছে।’’
তাঁর দাবি, ‘‘আগের দুয়ারে সরকারের শিবিরের বার্ধক্যভাতা, বিধবা ভাতা, মানবিক ইত্যাদি প্রকল্পে যে আবেদন নেওয়া হয়েছিল তা গ্রহণ করা হয়নি, আর যুক্তি দিয়ে বাতিলও করা হয়নি। অথচ ফের নতুন আবেদন নেওয়া হবে।’’ শুভেন্দুর দাবি, রাজ্যে পরিকাঠামো উন্নয়ন হচ্ছে না। রক্ষণাবেক্ষণও হচ্ছে না। কিছু টাকা দিয়ে ভোটের জন্য প্রভাবিত করা হচ্ছে। এটা বিপজ্জনক।’’ যদিও পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়ার দাবি, ‘‘দুয়ারে সরকারের কর্মসূচিতে জঙ্গলমহল থেকে পাহাড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ উপকৃত হয়েছেন। রাজ্য সরকারের মানুষের কাছে পৌঁছনোর এই প্রয়াসেও বিজেপি রাজনীতি খোঁজার চেষ্টা করছে। লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প স্কচ অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে। নিয়ম মেনে খাস জমি পাট্টা দেওয়া হয়। সবতে রাজনীতি খোঁজ ঠিক নয়।’’
রবিবার দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব জুরিডিকাল সায়েন্সস (এনইউজেএস)-এর সমাবর্তন অনুষ্ঠানে দেশের গণতন্ত্র রক্ষায় বিচারব্যবস্থার কাছে আর্জি জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন দেশের সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি উদয় উমেশ ললিত। মুখ্যমন্ত্রীর ওই মন্তব্যের সমালোচনা করে শুভেন্দু এ দিন অভিযোগ করেন, ‘‘তাঁর চুরি, দুর্নীতি সামনে এসেছে। তাঁর অনেক নেতা জেলে গিয়েছেন, বাকিরা জেলা যাওয়ার পথে। সেক্ষেত্রে তিনি বিচার ব্যবস্থাকে সরাসরি প্রভাবিত করার জন্য কালকে ওই সব কথা বলেছেন। গত বছর নন্দীগ্রামের মামলা হাই কোর্টের এক বিচারপতির কাছ থেকে কেড়ে নিতে হবে বলে তিনি কী বলেছিলেন, মনে নেই? এক বিচারপতিকে অপমান করার জন্য পাঁচ লক্ষ টাকা জরিমানা হিসেবে কলকাতা বার কাউন্সিলে দিতে বাধ্য হয়েছে। ওঁর মুখ থেকে জ্ঞান কে শুনবে? বুঝতে পারছি, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রক কেন এই মহিলাকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেয়নি। কালকে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির সামনে যে ভাবে আমাদের দেশ, সংবিধান, ভারত সরকারকে অপমান করেছেন, তা কোনও ভারতীয়র পক্ষের সম্ভব নয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষেই সম্ভব। আমার সন্দেহ আছে, তিনি মনে-প্রাণে ভারতীয় কি না।’’
পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেনের দাবি, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভারতীয় কি না, তার জবাব বাংলার মানুষ ২০২১-এর বিধানসভা ভোটেই দিয়েছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy