তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। —ফাইল চিত্র
‘‘সিউড়ি থেকে ট্রেন বন্ধ হলে আন্দোলন হবে। প্রয়োজনে ট্রেন বন্ধ করে দেব।’’—জেলা সদর সিউড়ি থেকে হাওড়াগামী ট্রেন বন্ধ করা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দিলেন তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল।
সিউড়ি-হাওড়া ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস আর সিউড়ি ঢুকবে না। বদলে এক্সপ্রেস ট্রেনটি হাওড়া থেকে সাঁইথিয়া হয়ে রাধিকাপুর যাবে। দিন কয়েক ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন খবর ছড়িয়ে পড়ায় ক্ষোভ ছড়িয়ে ছিল জেলা সদরের বাসিন্দাদের মধ্যে। শুক্রবার পূর্বরেলের তরফে নোটিফিকেশন জারি করে সেই খবরের সত্যতা স্বীকার করার পরেই তীব্র প্রতিক্রিয়া মিলল তৃণমূল জেলা সভাপতির তরফে।
পূর্বরেল সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক বছর আগে হাওড়া-সিউড়ি এক্সপ্রেসের পথচলা শুরু হয়েছিল, সেই এক্সপ্রেস ট্রেনটির রুট পরিবর্তন করা হয়েছে। নতুন রুট চালু হবে আগামী ১ মার্চ থেকে। নতুন রুট ঘোষণায় সাঁইথিয়া স্টেশন থেকে সিউড়িকে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। অর্থাৎ, এই ট্রেনটি আর সিউড়ি স্টেশনে আসবে না। বরং সিউড়ি
স্টেশনকে বিচ্ছিন্ন করে ট্রেনটিকে রাধিকাপুর পর্যন্ত বিস্তৃত করা হয়েছে। ট্রেনটি নতুন নাম হচ্ছে হাওড়া-রাধিকাপুর এক্সপ্রেস। আগামী রবিবার ট্রেনটি হাওড়া থেকে ছাড়বে সকাল ৮টা ৩৫ মিনিটে। শুক্রবার বিকেলে আমোদপুরে রেল বন্ধ নিয়ে সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরে অনুব্রতর প্রতিক্রিয়া, ‘‘অত্যন্ত খারাপ করেছে মোদী সরকার। আমি বোলপুরের সাংসদ অসিত মালকে বলেছি রেলমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে। ট্রেন না চললে আন্দোলন হবে।’’
ক্ষুব্ধ অনুব্রতর সংযোজন, ‘‘বিজেপিকে প্রশ্ন করুন। মানুষের চলার পথটাও কী ওরা কেড়ে নেবেন?’’
জেলা সদর উপেক্ষিত। জেলা সদরের যাত্রীদের এমন দাবি, দীর্ঘ দিনের। যাত্রীদের কথায়, ‘‘জেলা সদরের সঙ্গে সকালে দশটার মধ্য কলকাতা পৌঁছনো এবং সন্ধ্যায় কাজ সেরে ফেরার মতো একটা ট্রেন চেয়েছিলাম আমরা। সেখানে অতিরিক্ত ট্রেন না দিয়ে কলকাতাগামী মোট তিনটি ট্রেনের একটাকে তুলেই নিল। এটা কেমন বিচার?’’ সিউড়ি স্টেশনের ম্যানেজার ধীরাজ সিং বলেন, ‘‘সোশ্যাল মিডিয়ায় দিন কয়েক ধরে বিষয়টি চাউড় হলেও কোনও তথ্য ছিল না। সিউড়ি-হাওড়া ইন্টারসিটি ট্রেনটি আর সিউড়ি আসবে না। এ ব্যাপারে আজই চিঠি পেয়েছি।’’
বীরভূমের জেলা সদর সিউড়ি থেকে হাওড়া যাওয়ার মাত্র তিনটি ট্রেন ছিল। সকাল ৬টা বেজে ২০ মিনিট নাগাদ ময়ূরাক্ষী ফাস্ট প্যাসেঞ্জার ও দুপুর হুল এক্সপ্রেস অণ্ডাল হয়ে এবং বিকেল সাড়ে পাঁচটায় ইন্টারসিটি এক্সপ্রেসটি সাঁইথিয়া, বোলপুর হয়ে হাওড়ায় যেত। তবে বিকেলের ওই ট্রেনটিতে তেমন প্যাসেঞ্জার ছিল না। ক্রমাগত লোকসানে চলছিল। জানুয়ারিতে সিউড়ি স্টেশন পরিদর্শনে আসা পূর্বরেলের জেনারেল ম্যানেজার সুনীত শর্মার কাছে জেলা সদরের বাসিন্দা এবং নিত্যযাত্রীদের দাবি ছিল, জেলা সদরের স্টেশনটিকে সাজতে ব্যবস্থা নিয়েছে রেল, সেটা ভাল কথা। কিন্তু যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের বিষয়টিকে দেখার চেষ্টা করুক রেল। কারণ, সার্ধশতবর্ষ প্রাচীন সিউড়ি স্টেশনটি ও জেলাসদরের বাসিন্দারাই সবচেয়ে অবহেলিত। কলকাতায় সকাল সকাল পৌঁছনোর মতো এবং কলকাতায় কাজ সেরে সন্ধ্যায় ফেরার মতো ট্রেন দিন। প্রয়োজনে বিকালের ইন্টারসিটি এক্সপ্রেসকে সকালে সিউড়ি থেকে হাওড়া এবং সন্ধ্যায় হাওড়া থেকে চালাক রেল। সেই দাবি তো পূরণ হলই না। উল্টে একটা ট্রেন কমে যাওয়ায় হতাশ জয়ন্ত বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শৌভিক সিংহের মতো শহরের আরও অনেক বাসিন্দা। যাঁরা রেল পরিষেবার ভাল করার দাবিতে দীর্ঘ দিন ধরে চেষ্টা চালাচ্ছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy