সিউড়ি ডিআরডিসি হলে শিক্ষকদের বৈঠক। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র
মঙ্গলবার থেকে শুরু হবে এ বছরের মাধ্যমিক। তার পরেই হবে উচ্চমাধ্যমিক। পরীক্ষার্থীরা যাতে জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা এবং উচ্চমাধ্যমিক সুষ্ঠু ভাবে দিতে পারে তার জন্য প্রয়োজনীয় সব রকম প্রস্তুতি নিয়েছে প্রশাসন। সেই প্রস্তুতি কেমন হল, কোথাও কোনও ত্রুটি বিচ্যুতি রয়েছে কি না, যে বিষয়ে শুক্রবার পর্যালোচনা বৈঠক হল সিউড়ির ডিআরডিসি হলে। জেলার যে স্কুলে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক কেন্দ্র হচ্ছে, সেই সব স্কুলের প্রধান শিক্ষক শিক্ষিকা, জেলা শিক্ষা দফতরের কর্তা, পুলিশ ও প্রশাসনের আধিকারিক ও পরীক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত সকলেই উপস্থিত ছিলেন। পর্যালোচনা বৈঠক থেকে যে সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি উঠে এল—
ছাত্র থেকে বেশি ছাত্রী
গত কয়েক বছর ধরেই একটা ধারা লক্ষ্য করা যাচ্ছে বীরভূমে। সেটা হল পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্রীর সংখ্যা বেশি থাকছে। এ বারও ব্যতিক্রম হচ্ছে না। এ বার জেলা থেকে মোট ৪১ হাজার ৬৩০ জন পরীক্ষার্থী মাধ্যমিকে বসছে। ছাত্রের সংখ্যা যেখানে ১৭ হাজার ৯০ জন, সেখানে ছাত্রীর সংখ্যা ২৪ হাজার ৫৪১ জন। অর্থাৎ, ৭ হাজার ৪৫১ জন বেশি ছাত্রী এ বার মাধ্যমিক দিচ্ছে। শিক্ষকদের একাংশের মতে, মেয়েদের মধ্যে স্কুলছুটের সংখ্যা কমছে। বিশেষ করে কন্যাশ্রীর মতো প্রকল্প চালুর ফলে মাঝপথে পড়া ছেড়ে দেওয়ার সংখ্যা অনেকটা কমে এসেছে। তা ছাড়া প্রত্যন্ত এলাকায় পড়ার সুযোগ তৈরি হওয়াও এর একটা কারণ। জেলা জুড়েই বেশ কিছু জুনিয়র হাইস্কুল মাধ্যমিকে উন্নীত হয়েছে। ফলে, বাড়ির কাছের স্কুলেই মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়ার সুযোগ পাচ্ছে মেয়েরা। প্রতি বছর ছাত্রীদের সংখ্যা বৃদ্ধি সেই কারণেই।
মানতে হবে নিয়ম
গত বারে মোবাইল নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে কারও প্রবেশাধিকার ছিল না। পরীক্ষা শেষের আগে শিক্ষকদেরও মোবাইল জমা রাখতে হয়েছিল নির্দিষ্ট কক্ষে। তার পরেও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশ্নপত্র ছড়িয়ে পড়ার অভিযোগ উঠেছিল রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। বীরভূমেও অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটেছিল বলে জানাচ্ছেন প্রশাসনের কর্তারাই। তাই এ বার রাজ্য প্রশাসনের নির্দেশে বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করতে সচেষ্ট প্রশাসন। পরীক্ষার্থী হোক বা হল পরিদর্শক, কেউ-ই পরীক্ষা কেন্দ্রে মোবাইল নিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন না। অফিসার ইন চার্জ (মূলত এআই বা এসআই), সেন্টার সেক্রেটারি (স্কুলের প্রধান শিক্ষক), ভেনু সুপারভাইজার, অ্যাডিশনাল ভেনু সুপারভাইজার এবং ভেনু সেক্রেটারি এই পদমর্যাদা সম্পন্ন ব্যক্তি মোবাইল নিজের কাছে রাখতে পারবেন। কিন্তু, সেটাও পর্যদের সঙ্গে পুলিশ প্রশাসনে সঙ্গে যোগাযোগ রাখার জন্য বা অফিসিয়াল প্রয়োজনে অন্য কারও সঙ্গে কথা বলতে বা বার্তা আদানপ্রদান করতে পারবেন না তাঁরা। এ অন্যথা হলে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে। পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশের সময় তল্লাশির মুখে পড়তে হবে। পরীক্ষার হলে ব্যাগ নিয়ে প্রবেশ করা যাবে না। পরীক্ষা কেন্দ্রে ২০০ মিটারের মধ্যে জারি থাকছে ১৪৪ ধারা।
ভিডিয়োগ্রাফির ব্যবস্থা
জেলায় টোকাটুকি বেশি হয়, এমন পরীক্ষা কেন্দ্রগুলিকে সংবেদনশীল পরীক্ষা কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেগুলিতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করতে হবে। ওই সব পরীক্ষাকেন্দ্রে যাঁরা ঢুকবেন, বিশেষত পরীক্ষার্থীদের তল্লাশি করা হবে। বাইরে থেকে ভিডিওগ্রাফি করার ব্যবস্থা থাকবে। কিন্তু, কোনও ফোটোগ্রাফার বা ভিডিওগ্রাফার বা সংবাদমাধ্যমের কর্মী পরীক্ষা হলে ঢুকতে পারবেন না। পুলিশ, প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন থাকবে। তার পরেও কারও আচরণ
সন্দেহজনক মনে হলে সেটা জানাতে হবে স্থানীয় থানাকে। এ ছাড়া জেলার যে কোনও কেন্দ্রে অবাঞ্ছিত ঘটনা বা সমস্যায় সরাসরি পুলিশ কন্ট্রোল রুমে ৯০৮৩২৬৯৮৪১ নম্বরে ফোন করা যেতে পারে।
পরীক্ষাকেন্দ্র ও পরীক্ষার্থী
জেলা জুড়ে মোট পরীক্ষাকেন্দ্র ১২২টি। তার মধ্যে মুখ্য পরীক্ষাকেন্দ্র ৩৫টি। বোলপুর মহকুমায় মোট পরীক্ষাকেন্দ্র ২৯টি, সিউড়ি মহকুমায় ৪৯টি এবং রামপুরহাটে পরীক্ষাকেন্দ্রের সংখ্যা ৪৪টি। মোট মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ৪১ হাজার ৬৩০ জন। বোলপুর মহকুমা থেকে পরীক্ষা দেবে ৯ হাজার ৭৯৫ জন পরীক্ষার্থী, সিউড়ি থেকে ১৪ হাজার ৩২৫ জন, রামপুরহাট মহকুমায় পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১৭ হাজার ৫১০ জন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy