মাড়গ্রামের পলিটেকনিক কলেজ। নিজস্ব চিত্র
বছর তিনেক আগে চালু হয়েছে কলেজ। কলকাতা, পুরুলিয়া, আসানসোল, মেমারি, সিউড়ি সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের পড়ুয়ারা কলেজে ভর্তিও হয়েছে। ইতিমধ্যে কলেজ থেকে তিন বছরের কোর্স শেষ করেছে পড়ুয়ারা। কলেজে নতুন বিভাগ চালু হয়েছে। বৃদ্ধি পেয়েছে পড়ুয়ার সংখ্যা। অথচ, কলেজ শুরুর প্রথম দিন থেকে হস্টেল না থাকার জন্য অসুবিধা হচ্ছে পড়ুয়াদের। পড়ুয়াদের কলেজ ক্যাম্পাসের বাইরে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করতে হচ্ছে। এতে পড়াশোনার সার্বিক খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে পড়ুয়াদের অভিযোগ। অবস্থাটা মাড়গ্রাম থানার পাবুইদিঘি গ্রামে অবস্থিত হাজি মহম্মদ সেরাফত মণ্ডল গর্ভমেন্ট পলিটেকনিক কলেজের।
কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু উন্নয়ন মন্ত্রকের আর্থিক সহযোগিতায় ‘মাইনরিটি সেক্টোরাল ডেভলপমেন্ট প্রজেক্ট’ সংক্ষেপে এমএসডিপি প্রকল্পে ২০১৫ সালে মাড়গ্রাম থানার পাবুইদিঘি গ্রামে ১২ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে পলিটেকনিক কলেজ নির্মাণ হয়। কলেজের প্রশাসনিক ভবন, শিক্ষাভবন ছাড়াও হাতেকলমে শিক্ষার জন্য ওয়ার্কশপ তৈরি হয়। ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে পলিটেকনিক কলেজটিতে সিভিল এবং সার্ভে এই দুটি বিষয়ে ৬০ জন করে মোট ১২০ জন পড়ুয়া ভর্তি হয়। কিন্তু, হস্টেল নির্মাণ না হওয়ার জন্য কলেজ শুরুর প্রথম দিন থেকে পড়ুয়াদের ক্যাম্পাস থেকে দু’তিন কিলোমিটার দূরে হাঁসন মোড়ে কিংবা ১৩ কিলোমিটার দূরে রামপুরহাটে থেকে পড়ুয়াদের থেকে যাতায়াত করে পড়াশোনা করতে হচ্ছে।
২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে ইলেক্ট্রিক্যাল বিভাগে পড়াশোনা চালু হয়েছে। বর্তমানে পড়ুয়ার সংখ্যা ৪০০। কলেজ হস্টেল ছাড়া স্টাফ কোয়ার্টার গড়ে না ওঠার জন্য পড়ুয়াদের মতো কলেজের স্টাফদেরও বাইরে থেকে যাতায়াত করতে হচ্ছে। অথচ, কলেজ ক্যাম্পাসের মধ্যে স্টাফ কোয়ার্টার সহ গার্লস হস্টেল নির্মাণের জন্য এক একর জায়গা আছে। আবার কলেজ ক্যাম্পাসের বাইরে দুটি বয়েজ হস্টেল নির্মাণের জন্য তিন একর জায়গা আছে। কলেজ সূত্রে জানা যায়, দুটি বয়েজ এবং গার্লস হস্টেল সহ স্টাফ কোয়ার্টার নির্মাণের জন্য সমস্ত জায়গা স্থানীয় ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর থেকে পরিমাপ করে কলেজ কর্তৃপক্ষকে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হস্টেল নির্মাণের কথা থাকলেও কলেজ শুরুর পরে আর তা কার্যকর হয়নি।
এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কলেজ থেকে ২ কিলোমিটার দূরে হাঁসন মোড়ে কলেজ পড়ুয়াদের অনেকে বাড়ি ভাড়া নিয়ে আট দশটি মেসে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করে আছে। অনেকে ১৩ কিলোমিটার দূরে রামপুরহাটে ঘরভাড়া নিয়ে মেস করে কলেজ যাতায়াত করছে। এ বছরই কলেজ থেকে সার্ভে বিভাগে পাশ করেছে আসানসোলের রণজিৎ দে চৌধুরী। রণজিৎ রামপুরহাটে ঘরভাড়া নিয়ে থাকত। তাঁর কথায়, ‘‘হস্টেলের অভাবে রামপুরহাটে মেসে থাকতে মাসে সাড়ে চার হাজার টাকা খরচ হত। রামপুরহাট থেকে কলেজ যাতায়াত করতেও প্রতি মাসে হাজার টাকা খরচ হত।’’ সিউড়ির মেঘনা
চট্টোপাধ্যায় পাবুইদিঘির ওই পলিটেকনিক কলেজে ইলেক্ট্রিক্যাল ট্রেড নিয়ে পড়াশোনা করে। মেঘনাও জানায়, হস্টেলের অভাবে বাইরে মেস করে থাকতে হচ্ছে।
কলেজ সূত্রে জানা যায় বর্তমানেস ঐ কলেজে ১০৪ জন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পড়ুয়া পড়াশুনা করে। হোষ্টেলের সুবিধা থাকলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ভুক্ত পড়ুয়ারা সরকারী সুবিধা পেত। হোষ্টেল অভাবে ঐ সমস্ত পড়ুয়ারা সরকারী সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। হস্টেল নির্মাণ প্রসঙ্গে পাবুইদিঘির ওই পলিটেকনিক কলেজের অধ্যক্ষ মহম্মদ আবদুল আয়াজ জানান, কলেজে হস্টেল নির্মাণের জন্য জায়গা পড়ে আছে। হস্টেল তৈরি করতে এলাকার সাংসদ থেকে মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় সকলেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সম্প্রতি জেলা সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতর এবং জেলাশাসকের কাছেও বিষয়টি জানানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy