বিশ্বভারতীর তিন পড়ুয়াকে বহিষ্কারের প্রতিবারে রামপুরহাটে বাম ছাত্র-যুবদের বিক্ষোভ। বুধবার। নিজস্ব চিত্র
বিশ্বভারতীর তিন ছাত্রছাত্রীকে বহিষ্কারের প্রতিবাদে ক্রমেই আন্দোলন তীব্র হচ্ছে রাজ্যে। নিন্দায় সরব হচ্ছেন রাজ্যের শিক্ষক ও পড়ুয়া মহলের বড় অংশও। যাদবপুর, উত্তরবঙ্গ, কল্যাণী, প্রেসিডেন্সি-সহ একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও অধ্যাপক সংগঠনের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্তের বিরোধিতা ও পড়ুয়াদের পাশে থাকার বার্তা দেওয়া হয়েছে।
বহিষ্কারে সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বুধবার রাজ্য জুড়ে ধিক্কার দিবস ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন এসএফআইয়ের সদস্যেরা। সংগঠনের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় আঞ্চলিক কমিটির পক্ষ থেকে মঙ্গলবারই ছাত্রছাত্রীদের কাছে বিশ্বভারতীর উইপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বই বয়কটের আবেদন করা হয়েছিল। এ দিন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের পড়ুয়ারা তাঁদের সিলেবাসে থাকা বিদ্যুৎবাবুর বই বয়কটের কথা বিভাগীয় প্রধান ইমন কল্যাণ লাহিড়ীকে ই-মেল করে জানিয়েছেন। একই ভাবে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেবাসের অন্তর্ভুক্ত কিংবা সহায়ক পুস্তক হিসেবে বিদ্যুৎবাবুর সমস্ত বই বয়কটের ডাক দিয়েছে সেখানকার এসএফআই ইউনিট।
এ দিন প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন গেটে এসএফআইয়ের বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের ডাকে অবস্থান-বিক্ষোভ হয়। বীরভূম জেলা জুড়েও একই কর্মসূচি পালিক হয়েছে। রামপুরহাট শহরে বুধবার বিকেলে এসএফআই এবং ডিওয়াইএফের যৌথ উদ্যোগে ব্যানার হাতে শহর পরিক্রমা ও পথসভার আয়োজন করা হয়েছিল। আজ, বৃহস্পতিবার সকালে বোলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনেও তারা প্রতিবাদ সভার ডাক দিয়েছে। ছাত্র সংগঠন পিডিএসএফের পক্ষ থেকে এ দিন শ্যামবাজার পাঁচমাথার মোড়ে আয়োজিত হয় পথসভা। যাদবপুর বিশ্বিবদ্যালয়ের চার নম্বর গেটের সামনে প্রতিবাদ সভা করে এআইএসএ। বরখাস্ত তিন পড়ুয়ার অন্যতম, রূপা চক্রবর্তীর বাড়ির এলাকা অর্থাৎ বাঁকুড়ার শালতোড়া ব্লকেও রাস্তায় বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন স্থানীয় এসএফআই প্রতিনিধিরা।
বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা করেছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (জুটা)। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায়ের অভিযোগ, সঙ্ঘ-পরিবারের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য বিশ্বভারতীর উপাচার্য শিক্ষক ও পড়ুয়াদের স্বার্থ-বিরোধী একের পর এক সিদ্ধান্ত নিয়ে চলেছেন। অন্যায় ভাবে শিক্ষকদের শো-কজ কিংবা সাসপেন্ড করার মতো পদক্ষেপ ফ্যাসিস্ট কায়দায় উপাচার্য নিয়ে চলেছেন। পার্থপ্রতিমবাবু বলেন, ‘‘আমরা মনে করি ছাত্রদের বহিষ্কারের এই সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র প্রতিহিংসামূলক আচরণের বহিঃপ্রকাশ নয়, এর মধ্যে প্রতিবাদী আন্দোলন ও স্বাধীন মুক্ত চিন্তার স্বরকে ধ্বংস করার গভীর ষড়যন্ত্রও রয়েছে। অবিলম্বে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত বাতিল করে শিক্ষার্থীর অধিকার ফিরিয়ে দেবার দাবি জানাচ্ছি।”
রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির শিক্ষক সংগঠন আবুটা-র সাধারণ সম্পাদক গৌতম মাইতি বলেন, ‘‘রবীন্দ্র আদর্শ অনুসারী বিশ্বভারতী কোনও জেলখানা নয়। একটি স্বশাসিত সংস্থা। উপাচার্য তা বিস্মৃত হয়ে জেলারের মত আচরণ করছেন!’’ এই সব অভিযোগ প্রসঙ্গে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে, বিশ্বভারতী ক্যাম্পাসে এখনও পর্যন্ত বহিষ্কারের বিরুদ্ধে কোনও প্রতিবাদ কর্মসূচি চোখে পড়েনি। পড়ুয়াদের সূত্রে জানা যাচ্ছে, তাঁরা সব দিক গুছিয়ে বড় আকারে আন্দোলনে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy