কেমন বাজি পাওয়া যাচ্ছে, খোঁজ ক্রেতাদের। পুরুলিয়ায়। ছবি: সুজিত মাহাতো।
পরিবেশবান্ধব ‘সবুজ’ বাজি পোড়ানো যাবে কালীপুজো ও দীপাবলিতে, নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু সে বাজি মিলবে কোথা থেকে, তা নিয়ে ধন্দে পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া জেলার বহু বিক্রেতা। কিছু বিক্রেতার আবার দাবি, তেমন বাজির সন্ধান তাঁরা পেয়েছেন। শীঘ্রই পসরা সাজাবেন। তবে মঙ্গলবার পর্যন্ত দুই জেলাতেই বাজি কেনাবেচার ছবি বিশেষ দেখা যায়নি। পুলিশ জানায়, নিষিদ্ধ বাজি কেনাবেচা নজরে রাখতে টহল চলছে।
‘বাঁকুড়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ়’-এর সাধারণ সম্পাদক মধুসূদন দরিপা বলেন, ‘‘সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশের পরে, দোকান খোলার বিষয়ে ব্যবসায়ীদের তরফে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। কিছু ব্যবসায়ী পরিবেশবান্ধব বাজি কিনেছেন বলেও জানাচ্ছেন। তবে তা কতটা বিশ্বাসযোগ্য, আমাদের জানা নেই।’’ বাঁকুড়া শহরের বাজি ব্যবসায়ী কানাই রক্ষিতের দাবি, “একটি সংস্থা থেকে পরিবেশবান্ধব বাজি আগেই তুলে রেখেছিলাম। তার প্যাকেটে ‘পরিবেশবান্ধব’ বলে ছাড়পত্রও রয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ শোনার পরে পসরা সাজানোর প্রস্তুতি নিচ্ছি।’’
বিষ্ণুপুরের ব্যবসায়ী ব্যবসায়ী গদাধর দে বলেন, ‘‘হাইকোর্টের নির্দেশ শোনার পরে, আতশবাজি বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছি। প্রস্তুতকারী সংস্থাকে বাজি ফিরিয়েও দিয়েছি। সুপ্রিম কোর্ট পরিবেশবান্ধব বাজি বিক্রিতে ছাড় দিচ্ছে। কিন্তু এ রাজ্যে কোথায় এমন বাজি তৈরি হয়, জানা নেই।’’ বিষ্ণুপুরের আর এক ব্যবসায়ী অলোক রক্ষিতের বক্তব্য, “বজবজ ও চম্পাহাটি থেকে আতশবাজি আমদানি করি। সেখানকার সংস্থার কাছে পরিবেশবান্ধব বাজি নিয়ে খোঁজ করে সদুত্তর পাইনি।’’
হাইকোর্টের রায়ের পরে, পুলিশ বাজি বিক্রি বন্ধে প্রচার চালাচ্ছিল পুরুলিয়ার নানা এলাকায়। পুরুলিয়া শহরের চকবাজারের বিক্রেতা মহম্মদ শওকতের দাবি, ‘‘প্রথমে জানানো হল, সবুজ বাজি বিক্রি করা যাবে। তা যতটুকু পাওয়া গেল, আনলাম। পরে জানানো হল, তা-ও বিক্রি করা যাবে না। এখন আবার শুনছি, সবুজ বাজি বিক্রি করা যাবে। যতটুকু রয়েছে, বিক্রি করব।’’ আর এক বিক্রেতা বিজয় গুপ্তের বক্তব্য, ‘‘সবুজ বাজির দাম বেশি। ক্রেতাদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে।’’ রঘুনাথপুর নতুন বাজারের বিক্রেতা দেবরঞ্জন হালদার, ঝালদার বিকাশ চৌরাশিয়া বলেন, ‘‘নতুন নির্দেশের পরে, এত অল্প সময়ের মধ্যে পাইকারি বাজার থেকে সবুজ বাজি আনা সম্ভব নয়। তাই ঠিক করেছি, এ বার বাজি বেচবই না।’’
এ দিন বিষ্ণুপুরে সবুজ বাজির খোঁজ করতে দেখা যায় পলি খান, মিতা পাঠক, তনুশ্রী মাইতির মতো অনেককে। তাঁরা বলেন, “বাচ্চারা বায়না করছে। বিভিন্ন দোকানে ঘুরেও সবুজ বাজি কিছু পেলাম না।’’ পুরুলিয়া শহরের নামোপাড়ার বাসিন্দা গণেশ কর্মকার বলেন, ‘‘বাড়ির বাচ্চারা তো এত কিছু বোঝে না। তারা আবদার করছে।’’
সবুজ বাজির নামে সাধারণ বাজি যে পুড়বে না, সে নিশ্চয়তা কোথায়— প্রশ্ন পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের পুরুলিয়া জেলা সম্পাদক নয়ন মুখোপাধ্যায়ের। তাঁর দাবি, ‘‘ক্রেতারা বাজির প্যাকেটে সবুজ বা গ্রিন কথাটি লেখা থাকলেই হয়তো কিনে নেবেন। কিন্তু সেটি যে সবুজ বাজি, জেলায় তা পরীক্ষার পরিকাঠামো কোথায়!’’
পুরুলিয়া জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘বাজিতে নিষেধের প্রচার আর হচ্ছে না। তবে দোকানে নজর রাখা হচ্ছে।’’ এ দিন মানবাজার ১ ব্লক অফিসের উদ্যোগে বিভিন্ন দোকানে অভিযান হয়। তবে বিশেষ কিছু মেলেনি বলে প্রশাসন সূত্রে জানা যায়। বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার বলেন, “জেলার সীমানায় নাকা-তল্লাশি হচ্ছে। নিষিদ্ধ বাজি রুখতে নজরদারি চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy