জ়িনতকে বাগে আনার সব চেষ্টা ব্যর্থ! —প্রতীকী চিত্র।
যে রাস্তা ধরে ওড়িশা থেকে এসেছিল জ়িনত, হয়তো সেই রাস্তা সে ভুলে গিয়েছে। সেই কারণেই ওড়িশা ফিরে যেতে পারছে না বাঘিনি। এমনটাই দাবি প্রাণী বিশেষজ্ঞদের একাংশের। তাঁদের মত, বন্যপ্রাণীরা তাদের হাঁটাচলার পথে জায়গায় জায়গায় প্রস্রাব করে। যাতে ভবিষ্যতে প্রস্রাবের গন্ধ শুঁকে তারা আবার নিজেদের আস্তানায় ফিরে যেতে পারে। হয়তো জ়িনতও তা-ই করেছিল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে প্রস্রাবের গন্ধ বাতাসে মিলিয়ে যাওয়ায় তার ফিরে যেতে সমস্যা হচ্ছে।
বাঁকুড়া সম্মিলনী কলেজের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক বিশ্বরঞ্জন ধুয়ার বক্তব্য, এ রাজ্যে আসার পর থেকেই জ়িনত নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে চলেছে। কিন্তু কোনও জঙ্গলকেই সে নিরাপদ বলে মনে করছে না। তাই বিভ্রান্ত হয়ে ছুটে বেড়াচ্ছে এক জঙ্গল থেকে অন্য জঙ্গলে। এ দিকে সময় যত যাচ্ছে, ততই বাঘিনির স্বেচ্ছায় ওড়িশার সিমলিপালে ফিরে যাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে বলেই মনে করছেন তিনি। তাঁর যুক্তি, ‘‘খাবারেরর সন্ধানে হোক বা নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে বন্যপ্রাণী নতুন এলাকায় গেলে সে যে করিডোর ব্যবহার করে, সেই করিডোরের বিভিন্ন জায়গায় সে প্রস্রাব করে করে এগোতে থাকে। যাতে নতুন এলাকা পছন্দ না হলে আবার প্রস্রাবের গন্ধ শুঁকে সে পুরনো জায়গায় ফিরে যেতে পারে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রস্রাবের গন্ধ মিলিয়ে গেলে ফিরে যাওয়ার রাস্তা চিনতে সমস্যায় পড়ে বন্যপ্রাণী। এক সপ্তাহ কেটে যাওয়ায় বাঘিনি জ়িনতের ক্ষেত্রেও তেমনটা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে চাইলেও জ়িনতের স্বেচ্ছায় সিমলিপালে ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনা ক্রমশ কমে আসছে।’’
খাঁচা পেতে বাঘিনিকে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর বৃহস্পতিবার হুলা পার্টিকে কাজে লাগিয়ে জ়িনতকে জালবন্দি করার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু বন দফতরের সে চেষ্টাও কাজে আসেনি। এ দিকে বৃহস্পতিবার রাতেই বাঘিনি বান্দোয়ানের ভাঁড়ারি পাহাড় ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছে পুরুলিয়ার মানবাজার ২ নম্বর ব্লকের পাইসাগোড়ার জঙ্গলে। শুক্রবার সকাল থেকে পাইসাগোড়ার জঙ্গলে জ়িনতকে ধরতে তৎপরতাও দেখা গিয়েছিল। কিন্তু তা-ও ফলপ্রসূ হয়নি।
গত ১৫ নভেম্বর মহারাষ্ট্রের তাডোবা-আন্ধারি ব্যাঘ্র প্রকল্প থেকে তিন বছরের জ়িনতকে ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ জেলার সিমলিপাল ব্যাঘ্র প্রকল্পে (টাইগার রিজ়ার্ভ, সংক্ষেপে বা এসটিআর) আনা হয়েছিল। কয়েক দিন ঘেরাটোপে রেখে পর্যবেক্ষণের পরে রেডিয়ো কলার পরিয়ে ২৪ নভেম্বর তাকে সিমলিপাল ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গলে ছাড়া হয়েছিল। তার পরেই ঝাড়খণ্ডের দিকে হাঁটা দেয় জ়িনত। কয়েক দিন ঝাড়খণ্ডে ঘুরে চাকুলিয়া রেঞ্জের রাজাবাসার জঙ্গল পেরিয়ে চিয়াবান্ধি এলাকা থেকে ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়ি থানার অন্তর্গত কাটুচুয়া জঙ্গলে ঢুকে পড়ে সে। তার পর ঝাড়গ্রাম থেকে বাঘিনি ঢুকে পড়ে পুরুলিয়ায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy