Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
Encroachers Eviction in Rampurhat

রামপুরহাটে তুলকালাম ‘দখলদার’ উচ্ছেদ অভিযান ঘিরে! ‘ছেলেমেয়েদের কী খাওয়াব’, প্রশ্ন ব্যবসায়ীদের

রামপুরহাট শহরে ফুটপাথে দখলদার উচ্ছেদ অভিযান ঘিরে তুলকালাম। বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন রামপুরহাটের ১৭ এবং ৩ নম্বর ওয়ার্ডের অস্থায়ী ব্যবসায়ীরা।

(বাঁ দিকে) কান্নায় ভেঙে পড়েছেন রামপুরহাটের এক অস্থায়ী ব্যবসায়ী। বুলডোজ়ার দিয়ে চলছে উচ্ছেদ অভিযান (ডান দিকে)

(বাঁ দিকে) কান্নায় ভেঙে পড়েছেন রামপুরহাটের এক অস্থায়ী ব্যবসায়ী। বুলডোজ়ার দিয়ে চলছে উচ্ছেদ অভিযান (ডান দিকে) —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
রামপুরহাট শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০২৪ ১০:০৪
Share: Save:

রামপুরহাট শহরে ফুটপাথে দখলদার উচ্ছেদ অভিযান ঘিরে তুলকালাম। বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন রামপুরহাটের ১৭ এবং ৩ নম্বর ওয়ার্ডের অস্থায়ী ব্যবসায়ীরা। দোকান ভেঙে দেওয়ায় কয়েক জন ব্যবসায়ী কান্নায় ভেঙে পড়েন। তাঁদের প্রশ্ন, কেন আগাম নোটিস দিয়ে দখলমুক্তি অভিযানে এল না পুলিশ? যদিও প্রশাসনের দাবি, বুধবারই ওই ব্যবসায়ীদের ওখান থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তার জন্য মাইক নিয়ে প্রচারও চালানো হয়। কিন্তু তাঁরা না সরার কারণেই এই পদক্ষেপ।

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ রামপুরহাটে ফুড পার্কে বুলডোজ়ার নিয়ে জবরদখল উচ্ছেদে নামে স্থানীয় প্রশাসন। রামপুরহাট পুরসভার ১৭ এবং তিন নম্বর ওয়ার্ডে এই উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন রামপুরহাটের মহকুমা শাসক সৌরভ পাণ্ডে, রামপুরহাট পুরসভার চেয়ারম্যান সৌমেন ভকত এবং রামপুরহাট থানার আইসি-সহ পুলিশবাহিনী। স্থানীয় সূত্রে খবর, প্রশাসনের তরফে ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে উচ্ছেদ অভিযানে যাওয়ার সময়ই ওই ওয়ার্ডের সিপিএম কাউন্সিলর এবং কয়েক জন ব্যবসায়ীর সঙ্গে বচসা বাধে পুলিশের। ধাক্কাধাক্কিও হয়। বিক্ষুব্ধদের দাবি, কোনও আগাম নোটিস না দিয়েই পুলিশ উচ্ছেদ অভিযান চালাচ্ছে। যদিও পুলিশি তৎপরতায় পরিস্থিতি এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে।

স্থানীয় এক ব্যবসায়ী আতিমা বিবির কথায়, ‘‘আমাদের কোনও নোটিস দেওয়া হয়নি। আমাকে দোকান থেকে জিনিসপত্রও বার করতে দেয়নি। তার আগেই ভেঙে দিল। ছোট দোকানগুলো ভাঙছে। কিন্তু বড় দোকানগুলোতে কিছু করা হচ্ছে না। আমরা গরিব মানুষ। আমি কোথায় গিয়ে ব্যবসা করব? ছেলেমেয়েদের মুখে কী ভাবে খাবার তুলে দেব? কালকে রাতে শুনেছিলাম ভাঙবে। একটু তো সময় দিতে হবে।’’

অন্য এক ব্যবসায়ী চাঁদু খানের দাবি, ‘‘কাল রাত ৮টার সময় মাইক দিয়ে প্রচার চালানো হয়। বলা হয় সাতটার মধ্যে দোকান সরিয়ে নিতে হবে। সরকারের জমি সরকার ফেরত নেবে। তাতে কিছু বলার নেই। শুধু চেয়েছিলাম একটু সময় দিক। যাতে মালগুলো সরাতে পারি। কিন্তু সেটুকুও সময় দিল না। অন্য অনেক জায়গায় দোকান ভাঙা হল না। সবার দোকান যদি না ভাঙা হয়, তা হলে আমি বাজারের মাঝখানে পাকা দোকান করব। আমার তিন লক্ষের ঋণ আছে। সেগুলো কি সরকার মেটাবে?’’

অন্য দিকে, রামপুরহাটের মহকুমা শাসক সৌরভ বলেন, ‘‘যেগুলো স্থায়ী নির্মাণ, তাদের নোটিস দেওয়া হয়েছে। যেগুলো অস্থায়ী নির্মাণ, বাঁশ বা টিনের চাল দিয়ে তৈরি, সেগুলোর জন্য মাইক দিয়ে প্রচার চালানো হয়। আপাতত ওই অস্থায়ী নির্মাণগুলো সরাচ্ছি। স্থায়ী নির্মাণও প্রক্রিয়া মেনে সরানো হবে পরে। অনেকটাই কাজ এগিয়েছে। কোথায় কোথায় আরও বেআইনি দখল রয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। রামপুরহাটের সঙ্গে তারাপীঠ এবং নলহাটিতেও এই অভিযান চলবে। আমরা আগেও কিছু কাজ করেছি। অনেক বার বলা সত্ত্বেও কেউ নির্মাণ সরাননি। তাই এই পদক্ষেপ।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE