ভিডিয়োয় রুবি। নিজস্ব চিত্র
নিজের হাতেই মেরেছেন পাঁচ বছরের শিবমকে—মূল অভিযুক্ত রুবি বিবির ‘স্বীকারোক্তি’র এমনই এক ভিডিয়ো বৃহস্পতিবার সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার পত্রিকা।
শান্তিনিকেতনের মোলডাঙার বাসিন্দা শিবমকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন রুবি। ছড়িয়ে পড়া ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, গ্রেফতারির পরে রুবিকে যখন পুলিশের গাড়িতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, তখনই তিনি খুনের কথা স্বীকার করে নেন। রুবির পাশে বসা এক মহিলা পুলিশকর্মী প্রশ্ন করেন রুবিকে, “তুই ওদেরকে (নিহত শিশু শিবমের বাবার সেলুনের কর্মীর কথা বলা হয়েছে) রেপ কেস করেছিস?’’ রুবি বলেন, ‘‘ওই বাচ্চাটাকে সঞ্জীব আমার কাছে এনে দিয়েছিল।’’ এক পুরুষ পুলিশকর্মী বলে ওঠেন, ‘‘সঞ্জীব এনে দিয়েছিল, তা মারার কী দরকার ছিল বাচ্চাটাকে?’’ রুবি কিছু একটা বলার চেষ্টা করছিলেন। তখন এক মহিলা পুলিশখর্মীর প্রশ্ন, ‘‘বাচ্চাটাকে কে আগলাল, তুই আগলালি তার মানে!’’ রুবি বলে, ‘‘আমি আগলাইনি। সঞ্জীব বাড়িতে রেখে গিয়েছিল, ও ছিল সঙ্গে, ওই নিয়ে গিয়েছিল।’’ ফের এক পুরুষকণ্ঠ বলেন, ‘‘বাচ্চাটাকে রাত্রিবেলায় ছেড়ে দিলেই পারতে...।’’ রুবিকে বলতে শোনা যায়, ‘‘তা করতে করতে...’’। মহিলা পুলিশকর্মী প্রশ্ন করেন, ‘‘তা করতে করতে মেরে দিয়েছিস! কী করে মারলি?’ রুবির জবাব, ‘হাতে করে!’’
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার দুপুরে প্রতিবেশী রুবি বিবির (খাতুন) বাড়ির অ্যাসবেস্টাসের ছাদ থেকে বস্তাবন্দি ছোট্ট শিবমের দেহ উদ্ধার হয়। সেই থেকে কেন এমন নিষ্ঠুর ভাবে শিবমকে মারা হল, সেই প্রশ্নই ঘুরছিল মোলডাঙা জুড়ে। হত্যাকাণ্ডের পিছনে পুরনো আক্রোশ রয়েছে বলে দাবি করেছেন এলাকার বাসিন্দারা। সেই সূত্রেই তাঁদের দাবি, ভিডিয়োয় যে ‘সঞ্জীব’-এর কথা শোনা যাচ্ছে, সেই যুবক আদতে মোলডাঙারই বাসিন্দা ‘সন্দীপ’।
কে এই সন্দীপ? কেন এলাকার বাসিন্দাদের এমন ধারণা?
এলাকাবাসীর দাবি, স্বামীর সঙ্গে অশান্তির কারণে সন্তানকে নিয়ে কিছুদিন আগে রুবি বাপের বাড়ি চলে আসেন। এর পরে শিবমের বাবা শম্ভু ঠাকুরের সেলুনের কর্মী রঞ্জিত বাউরির সঙ্গে পরিচয় হয় রুবির। দু’জনের মধ্যে ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। রঞ্জিতের দাদা হলেন সন্দীপ। দু’জনের ‘ঘনিষ্ঠতা’ দেখে রুবির সঙ্গে রঞ্জিতের বিয়ের প্রস্তাব তোলা হয়। কিন্তু, সন্দীপ ও তাঁর পরিবারের লোকজন বিয়েতে রাজি হননি। অভিযোগে, মীমাংসার জন্য রুবির পরিবার মোটা টাকা দাবি করে সঞ্জীবদের কাছে। তাতে রাজি না হওয়ায় রঞ্জিতকে ধর্ষণের মিথ্যা মামলায় রুবি ফাঁসিয়ে দেন বলেও অভিযোগ। বর্তমানে রঞ্জিত জেলে রয়েছেন।
রুবির এই কাজ মেনে নিতে পারেননি শিবমের বাবা শম্ভু। তাঁর সঙ্গে এই নিয়ে বিবাদ বাধে রুবির। এলাকাবাসীর দাবি, তখন থেকেই রুবির আক্রোশ ছিল শিবমের পরিবারের উপরে। রঞ্জিতের মতোই এখন তাঁর দাদা সন্দীপকে শিবম-খুনে রুবি ফাঁসিয়ে দিতে চাইছেন বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। সফিক মণ্ডল, প্রশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়রা বলেন, “এই ছেলেটিকে ফাঁসানো হচ্ছে। রুবির সঙ্গে অশান্তির পর থেকে সন্দীপদের সঙ্গে ওর কোনও যোগ ছিল না। এখন নিজে এই কাণ্ড ঘটিয়ে বাঁচার জন্য মিথ্যা অভিযোগ আনছে।” সন্দীপ বলেন, “ভাইয়ের সঙ্গে ওই মেয়ের আমরা বিয়ে দিতে চাইনি বলেই আজ আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে। গ্রামবাসীরাই বলবেন, কে ঠিক আর কে ভুল বলছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy