লোকালয় থেকে হাতি তাড়াতে এ বার বন দফতরের অস্ত্র ধামসা-মাদল। সঙ্গে মাইকের মাধ্যমে বাঘ, সিংহের হিংস্র গর্জন আর হরবোলাদের রকমারি আওয়াজ তো আছেই।
লোকালয় থেকে হাতিকে এলাকাছাড়া করতে আগুনের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। অথচ হাতি তাড়ানোর কাজে মশাল ছিল বন দফতরের অন্যতম হাতিয়ার। কিন্তু নিষিদ্ধ হওয়ার পরে সেই মশাল আর ব্যবহার করা যায় না। তাই লোকালয় থেকে হাতি তাড়াতে এ বার বিকল্প রাস্তা খুঁজে নিল পুরুলিয়ার বাঘমুণ্ডি বন দফতর। বাঘ-সিংহের হিংস্র গর্জনকে খুব জোর বাজিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি ধামসা-মাদল বাজিয়ে হাতিকে ভয় দেখাতে চাইছেন বনকর্মীরা।
ডিএফও (পুরুলিয়া) রামপ্রসাদ বাদানা বলেন, ‘‘পরীক্ষামূলক ভাবে বাঘমুণ্ডি বনাঞ্চল এলাকায় ওই পদ্ধতি শুরু হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে আমরা সাফল্যও পেয়েছি। এরপর ধাপে ধাপে জেলার অন্য বনাঞ্চল এলাকাতেও ওই পদ্ধতি শুরু করা হবে।’’
কী ভাবে চলছে কাজ? বাঘমুণ্ডির রেঞ্জ অফিস সূত্রে খবর, তৈরি করা হয়েছে ছোট ছোট দল। হুলা পার্টির নতুন নামকরণ করা হয়েছে ‘র্যাপিড রেসপন্স টিম’। বাঘমুণ্ডির রেঞ্জ অফিসার মনোজকুমার মল্ল বলেন, ‘‘হাতি যতই ক্ষমতাশালী হোক না কেন বাঘ-সিংহকে তারা সমীহ করে। আর মৌমাছির ভোঁ ভোঁ আওয়াজ বুনো হাতিদের কাছে খুবই বিরক্তিকর। সেই সঙ্গে ধামসা-মাদল আর টিন পেটানোর শব্দও থাকছে। আমরা সেটাকে কাজে লাগিয়েই হাতি তাড়ানোর ওই নতুন পদ্ধতি কাজে লাগাচ্ছি। আশা করছি সাফল্য আসবে।’’
রবিবার রাতে ঝাড়খণ্ড থেকে সুবর্ণরেখা নদী পেরিয়ে আটটি হাতির একটি দল বাঘমুণ্ডি বনাঞ্চল এলাকায় ঢুকে পড়ে। সোমবার রাতে সম্পূর্ণ নতুন ওই পদ্ধতি ব্যবহার করেই দলটিকে ঝাড়খণ্ডের পথ ধরানো গিয়েছে বলে দাবি বাঘমুণ্ডি বন দফতরের। কিন্তু বিদ্যুতের তারের বেড়া দিয়েও যাদের গতিবিধি খুব একটা ঠেকানো যায়নি কিংবা রাতের পর রাত বিনিদ্র রজনী কাটিয়েও যাদের উপদ্রব থেকে বাঁচানো যায়নি উৎপাদিত ফসল, দলমার বুনো দাঁতালদের এলাকাছাড়া করতে নতুন ওই পদ্ধতি কি কাজে আসবে? তা নিয়েই চর্চা চলছে বাঘমুণ্ডির গ্রামে গ্রামে।