জেলাশাসককে আবেদন এক দুর্গতের। নানুরের সুন্দরপুরে। নিজস্ব চিত্র।
শুধু ঘর গৃহস্থালিই নয়, বন্যায় ভেসে গিয়েছে কারও জবকার্ড বা রেশনকার্ড। আবার কারও বা জমির দলিল পরচা। এর ফলে বিভিন্ন সরকারি পরিষেবা, বিশেষত পুনর্বাসনের জন্য অনুদান পাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে নানুরের সুন্দরপুর গ্রামে। সেই সমস্যা দূর করতে মঙ্গলবার সুন্দরপুরে গিয়ে বন্যাদুর্গতদের দুয়ারে সরকারের ধাঁচে শিবির করে ওই সব নথিপত্র তৈরির আশ্বাস দিলেন জেলাশাসক বিধান রায়।
এই আশ্বাসে হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন শ্যামল মাঝি, চন্দন ঘোষরা। তাঁদের কথায়, ‘‘দের সব ভেসে গিয়েছে। তাই খুব চিন্তায় ছিলাম। সেটা দূর হল জেলাশাসকের আশ্বাসে।’’
গত বৃহস্পতিবার অজয় নদের বাঁধ ভেঙে নানুরের ১০-১২টি গ্রাম বন্যাকবলিত হয়ে পড়ে। কার্যত ধ্বংসস্তূপের চেহারা নেয় সুন্দরপুর। অন্য গ্রামগুলির পরিস্থিতি ক্রমশ স্বাভাবিক হতে শুরু করলেও সুন্দরপুরের বাসিন্দারা এখনও বাঁধের উপরে ত্রিপলের তাঁবুতে পড়ে রয়েছেন। গ্রামটি পুনর্নির্মাণের জন্য জেলা এবং ব্লক সমস্ত দফতরের আধিকারিককে নিয়ে এ দিন সুন্দরপুরে যান জেলাশাসক। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে পুনর্নির্মাণের রূপরেখা তৈরি করেন। গ্রামবাসীদের সঙ্গেও কথা বলেন। তাঁরা সাময়িক ভাবে কাছেপিঠে কোথাও অস্থায়ী আশ্রয় গড়ে দিলে যেতে চান কি না জানতে চান।
জেলাশাসককে কাছে পেয়ে গ্রামবাসীরা তাঁর কাছে গ্রামে ফেরানোর দাবি জানান। যত দ্রুত সম্ভব ওই দাবিপূরণের আশ্বাস দেন তিনি। এ দিন বন্যাদুর্গতদের গদি, চার্জার লাইট, জামাকাপড় সহ বিভিন্ন ত্রাণসামগ্রী দেওয়া হয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে। বিধানবাবু বলেন, ‘‘১০০ দিনের প্রকল্পে কর্মসংস্থানের পাশাপাশি পশুপালন, মাছচাষ এবং কৃষিতে জোর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’
প্রশাসনের পাশাপাশি এই গ্রামের দুর্গতদের জন্য সাহায্য আসছে নানা দিক থেকে। বন্যার জল নামার সঙ্গে সঙ্গেই গ্রামে বাড়ছে রোগ ছড়ানোর আশঙ্কা। রোগ প্রতিরোধের জন্য সুন্দরপুরে মঙ্গলবার বিনামূল্যে স্বাস্থ্যপরীক্ষা শিবির করে স্থানীয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। গ্রামবাসীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার পাশাপাশি বিনামূল্যে প্রয়োজনীয় ওষুধও দেওয়া হয়। চিকিৎসক হিসেবে হাজির ছিলেন শেখ আনোয়ার, আজফার আলি মণ্ডল, আতিয়ার রহমা, শেখ ইউসুফ, বৃন্দাবন কর্মকার প্রমুখ। আয়োজক সংস্থার সম্পাদক বাপি শেখ জানান, বন্যার পরে বিভিন্ন রোগ ছড়িয়ে পড়ে। তা প্রতিরোধ করতেই এই উদ্যোগ।
এ দিনই সুন্দরপুরের বাসিন্দাদের চাল, ডাল, আনাজ-সহ বিভিন্ন ধরণের খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিয়েছে তৃণমূলের প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা শাখা। বাচ্চাদের জন্য চকোলেট, বিস্কুট, হরলিক্স ও গুঁড়ো দুধও দেওয়া হয়। হাজির ছিলেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান প্রলয় নায়েক, তৃণমূলের প্রাথমিক শিক্ষা সমিতির জেলা সভাপতি অরিন্দম বসু, সম্পাদক সুদীপ মাহাত প্রমুখ। তাঁরা বলেন, ‘‘এই গ্রামের ছোটদের পড়াশোনার বিষয়টিও আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy