Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

মুশকিল আসান ‘কন্যাশ্রী বড়দি’

এ দিন সমীক্ষায় উঠে আসা জেলার কিশোরীদের স্বাস্থ্য সম্পর্কিত নানা বিষয় তুলে ধরেন জেলাশাসক। বলেন, ‘‘রক্তাল্পতায় ভোগে অনেক মেয়ে। খতিয়ে দেখা গিয়েছে, কিশোরী অবস্থায় পুষ্টি না পাওয়া। ঠিক এই জায়গায় আমরা কন্যাশ্রী ক্লাবের মেয়েদের পরিবর্তনের দূত হিসেবে দেখতে চাইছি।’’

প্রশান্ত পাল
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৯ ০০:৪০
Share: Save:

শুধু নিজেদের নয়, সমাজের ভবিষ্যতও গড়ে তুলবে কন্যাশ্রী মেয়েরা। আগামী ১৪ অগস্ট কন্যাশ্রী দিবস। তার আগে, রবিবার পুরুলিয়ার রবীন্দ্রভবনে একটি প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করেছিল জেলা প্রশাসন। যোগ দিয়েছিল পুরুলিয়ার ২৭৪টি কন্যাশ্রী ক্লাবের প্রতিনিধিরা। প্রশিক্ষণের মঞ্চে জেলাশাসক রাহুল মজুমদার কিছু বিষয়ে পুরুলিয়ার পিছিয়ে থাকার খতিয়ান দিয়ে ছাত্রীদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘তোমরাই পারবে জেলাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে।’’

এ দিন সমীক্ষায় উঠে আসা জেলার কিশোরীদের স্বাস্থ্য সম্পর্কিত নানা বিষয় তুলে ধরেন জেলাশাসক। বলেন, ‘‘রক্তাল্পতায় ভোগে অনেক মেয়ে। খতিয়ে দেখা গিয়েছে, কিশোরী অবস্থায় পুষ্টি না পাওয়া। ঠিক এই জায়গায় আমরা কন্যাশ্রী ক্লাবের মেয়েদের পরিবর্তনের দূত হিসেবে দেখতে চাইছি।’’ মহকুমাশাসক (রঘুনাথপুর) আকাঙ্ক্ষা ভাস্কর জানান, দেশে কম উচ্চতা ও কম ওজনের শিশু জন্মগ্রহণ করে ৩৮.৪ শতাংশ। এ রাজ্যে সেটা ৩২.৫ শতাংশ। কিন্তু পুরুলিয়ার বেলায় কম উচ্চতা ও ওজনের শিশু ৪৫.৫ শতাংশ। তিনি বলেন, ‘‘এখানে ৫৬ শতাংশ কিশোরীই রক্তাল্পতায় ভোগে। আর ৪৭ শতাংশ কিশোরী অপুষ্ট।’’ জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়ও মনে করেন, এই ছবিটার বদল করতে পারে কন্যাশ্রীরা।

জেলাশাসক জানান, রেশনে কার কতটা প্রাপ্য, সেই নিয়ে সচেতনতা গড়ে তুলবে কন্যাশ্রীরা। তারাই সবাইকে ওয়াকিবহাল করবে, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে সকালের ও দুপুরের কী কী খাবার পাওয়ার কথা। সম্প্রতি জেলার একটি স্কুলে গিয়ে শৌচাগারের অবস্থা জেনে চোখ কপালে ওঠার অবস্থা হয়েছিল জেলাশাসকের। এ দিন বক্তব্যে সে কথা বলেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘শতাব্দী প্রাচীন স্কুলে শৌচাগারের অবস্থা জানতে চেয়েছিলাম। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলেন, শৌচাগার ব্যবহার করার মতো নয়। প্রয়োজনে মেয়েরা বাড়ি চলে যায়। স্বাস্থ্যবিধির প্রাথমিক বিষয়টাই যদি এতটা অবহেলিত হয়, তা হলে তো এগনোই যাবে না।’’ তিনি জানান, জেলার ৭১টি মাধ্যমিক ও ২৫৬টি উচ্চমাধ্যমিক স্কুলে শৌচাগারের অবস্থা সরজমিন খতিয়ে দেখা হবে। দেখা হবে, ওই সমস্ত স্কুলের শৌচাগার ব্যবহার করার মতো অবস্থায় রয়েছে কি না। এই মর্মে ১০ অগস্টের মধ্যে বিডিওরা ছবি-সহ রিপোর্ট দেবেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা চাই প্রকৃত ছবিটা উঠে আসুক।’’

জেলা প্রশাসন চাইছে, কন্যাশ্রীদের দিয়ে মেয়েদের গার্হস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে। ঠিক করা হয়েছে, প্রতিটি কন্যাশ্রী ক্লাবে এক জন করে কন্যাশ্রী বড়দি থাকবে। জেলাশাসক বলেন, ‘‘অভিজ্ঞতায় দেখা গিয়েছে, কিশোরীরা সমাজে নানা ভাবে লাঞ্ছনার শিকার হয়। সে কথা অনেক সময়েই পরিবারেও আলোচনা করতে পারে না। কিন্তু সহপাঠীদের বলতে পারে।’’ তিনি জানান, প্রতি ব্লকে মাসে এক দিন বৈঠক হবে বলে ঠিক হয়েছে। কন্যাশ্রী বড়দিদের সঙ্গে পুলিশের প্রতিনিধি ও ব্লকের মহিলা উন্নয়ন আধিকারিক বসবেন। আলোচনা হবে নানা সমস্যা নিয়ে। কারও সাহায্য দরকার হলে করা হবে।

এ ভাবেই একটু একটু করে কন্যারা পুরুলিয়াকে আরও সুন্দর করে গুছিয়ে তুলবে বলে আশা প্রশাসনের।

অন্য বিষয়গুলি:

Kanyashree Day Workshop
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy