Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

চেয়েও কেন কাজ নেই, ক্ষুব্ধ ডিএম

ব্লকে-ব্লকে ঘুরে পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদারের কড়া নির্দেশ দিয়েছিলেন, ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে গতি আনতে হবে। কিন্তু বাস্তব বলছে অন্য কথা।

কড়া: অযোধ্যা পাহাড়ে হেতাডি গ্রামে জেলাশাসক। নিজস্ব চিত্র

কড়া: অযোধ্যা পাহাড়ে হেতাডি গ্রামে জেলাশাসক। নিজস্ব চিত্র

প্রশান্ত পাল
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০১৯ ০০:৩২
Share: Save:

শেষ কবে একশো দিনের কাজ পেয়েছেন—জেলাশাসকের প্রশ্নের উত্তরে শুকুরমণি সিং মুড়া, গিরিবালা সিং মুড়া, হিমানি মুড়া, সত্য মুড়ার মতো শ্রমিকেরা বললেন, ‘‘মনে নেই।’’ জব কার্ড দেখে জেলাশাসক জানলেন, ওই শ্রমিকদের কেউ শেষ বার কাজ পেয়েছিলেন ২০১২ সালে। কেউ ২০১৩ সালে বা তার পরের বছর।

ব্লকে-ব্লকে ঘুরে পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদারের কড়া নির্দেশ দিয়েছিলেন, ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে গতি আনতে হবে। কিন্তু বাস্তব বলছে অন্য কথা।

সোমবার অযোধ্যা পাহাড়ের বেশ কিছু গ্রাম পরিদর্শন করেন জেলাশাসক। ছিলেন প্রশাসনের বেশ কয়েকজন আধিকারিকও। ১০০ দিনের কাজ কোথায়, কেমন চলছে তার খোঁজ করেন জেলাশাসক। ১০০ দিনের কাজ চলছে এমন কয়েকটি গ্রামের নাম তাঁকে বলা হয়। জেলাশাসককে সোনাহারা গ্রামের কাছে একটি ‘হাপা’ দেখাতে নিয়ে যান আধিকারিকেরা। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখা যায়, কেউ কাজ করছেন না। পরের গন্তব্য হেঁসাডি গ্রামে।

ওই গ্রামের পিছনের দিকে একটি জায়গায় কাজ চলছে বলে জানানো হয়েছিল জেলাশাসককে। সে জায়গায় গাড়ি যায় না। খাল পেরিয়ে সেখানে পৌঁছে দেখা যায় উদ্যানপালন দফতরের একটি প্রকল্পে কমবেশি জনা দশেক মহিলা কাজ করছেন। জেলাশাসক আধিকারিকদের থেকে জানতে চান, প্রকল্পের হাল এমন কেন। কেন মানুষকে কাজ দেওয়া যাচ্ছে না? পাহাড়ে কি কাজের অভাব? নিরুত্তর ছিলেন আধিকারিকেরা।

১০০ দিনের কাজ ভাল হয়েছে, এমন গ্রামে যেতে চেয়েছিলেন রাহুলবাবু। সঙ্গে থাকা আধিকারিকেরা তাঁকে গুঁদলিডি গ্রামে নিয়ে যান। সেখানে গেলে দেখা যায়, একটি প্রকল্পে কাজ করছেন জনা দশেক শ্রমিক। জেলাশাসক তাঁদের থেকে জানতে চান, এই প্রকল্পের আগে শেষ কবে ১০০ দিনের প্রকল্পে কাজ পেয়েছেন তাঁরা। শুকুরমণি, গিরিবালা, হিমানি, সত্য-সহ অন্য শ্রমিকেরা জানান, শেষ তাঁরা কবে কাজ পেয়েছিলেন, তা ‘মনে নেই’। শ্রমিকদের জব-কার্ড দেখাতে বলা হয়। দেখা যায়, তাঁদের কেউ শেষ বার কাজ পেয়েছিলেন ২০১২ সালে। কেউ ২০১৩ বা ২০১৪-য়।

এ কথা জেনে দৃশ্যতই অবাক হন জেলাশাসক। বলেন, ‘‘না এলে জানতেই পারতাম না অনেকে তিন-চার বছর পরে কাজ পাচ্ছেন। কাজ চেয়েও মানুষ পাচ্ছেন না, এটা চলতে পারে না।’’

এ দিন পাহাড়ের বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন রাহুলবাবু। অনেকেই ক্ষোভের সঙ্গে তাঁকে বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন কোনও কাজ পাইনি। কাজ না পেলে খাব কী!’’ ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের হাল দেখে স্থানীয় পঞ্চায়েত ও ব্লক প্রশাসনের কর্তাদের পাহাড়ে ‘পড়ে থেকে’ ওই প্রকল্পে কী কী কাজ করা যায়, তার খোঁজ নিতে নির্দেশ দেন জেলাশাসক।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে জেলার কাজের গড় ৩৭ দিন। অযোধ্যা গ্রাম পঞ্চায়েতে কাজের গড় ৩৬.৯ দিন।

অন্য বিষয়গুলি:

District Magistrate 100 Days Work
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy