—প্রতীকী চিত্র।
রবিবার রাত পর্যন্ত প্রার্থিতালিকা ঘোষণা করেনি শাসকদল। সেখানে বিক্ষিপ্ত ভাবে কিছু ব্লক বাদ দিলে জেলার বেশির ভাগ ব্লকে শনিবার পর্যন্ত ভাল সংখ্যায় মনোনয়নপত্র ও ‘ডিসিআর’ তোলার কাজ সেরেছে বিজেপি। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, ‘বুথ স্বশক্তিকরণ’ কর্মসূচিতে অনেক বুথে নতুন কমিটি গড়তে বেগ পেতে হয়েছিল বিজেপি নেতৃত্বকে। সেখানে নির্বাচন ঘোষণার পরেই মনোনয়নপত্র তুলতে এমন তৎপরতা চোখে পড়ার মতো।
মনোনয়নপত্র তোলায় বিশেষত পাড়া ও রঘুনাথপুর ২ ব্লক এগিয়ে রয়েছে। দলের জেলা কমিটির সদস্য বৃন্দাবন মণ্ডলের দাবি, শনিবারের মধ্যে পাড়া পঞ্চায়েত সমিতির বেশির ভাগ আসন ও পঞ্চায়েতের একশোর মতো আসনে মনোনয়নপত্র ও ‘ডিসিআর’ তোলা হয়েছে। বিজেপির হাতে থাকা জেলার একমাত্র পঞ্চায়েত সমিতি, রঘুনাথপুর ২-এর প্রাক্তন মণ্ডল সভাপতি তথা বিজেপির জেলার সহ-সভাপতি অসীম চট্টোপাধ্যায়ও জানান, পঞ্চায়েতে ষাটের মতো আসনে ও পঞ্চায়েত সমিতিতে আটটি আসনে মনোনয়নপত্র ও ‘ডিসিআর’ তোলা হয়েছে। বলরামপুরেও ভাল সংখ্যক আসনে ‘ডিসিআর’ তোলার কাজ হয়েছে, দাবি ওই বিধানসভায় দলের আহ্বায়ক গোপাল কাটারুকা। তাঁর কথায়, “ব্লকের সমস্ত আসনে প্রার্থী দেওয়া হবে। তার প্রস্তুতি নির্বাচন ঘোষণার পরেই শুরু হয়েছে।” তবে ঝালদা ১, ঝালদা ২, বাঘমুণ্ডির মতো ব্লকগুলিতে তুলনায় কিছুটা পিছিয়ে আছে বিজেপি। কেন? ওই সব এলাকার দলীয় নেতৃত্বের দাবি, তাড়াহুড়ো করতে গেলে ভুলভ্রান্তি হলে মনোনয়ন বাতিল হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই ধীরে-সুস্থে এগোনো হচ্ছে।
গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে মনোনয়ন-পর্ব শুরুর পরে থেকে জেলার বিভিন্ন ব্লকে শাসকদলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগে সরব হয়েছিলেন বিরোধীরা। কাশীপুরে মনোনয়ন তোলার সময়ে সিপিএমের মিছিলে ‘তৃণমূলের’ লোকজন হামলা চালিয়েছিল বলে দাবি। ঘটনায় মাথা ফেটেছিল দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বাসুদেব আচারিয়ার। অন্য ব্লকেও মনোনয়নপত্র তুলতে গিয়ে বাধা-বিপত্তির মুখে পড়তে হয়েছিল কর্মীদের, অভিযোগ ছিল বিজেপিরও।
বিজেপি সূত্রে খবর, অতীতের অভিজ্ঞতা মনে রেখে এ বারে মনোনয়ন-পর্বের শুরু থেকে তৎপরতা শুরু করেছেন দলের নেতা-কর্মীরা। দ্রুত মনোনয়নের কাজ শেষ করা অন্যতম লক্ষ্য জানিয়ে রঘুনাথপুর ১-এর বিজেপি নেতা মণিদীপ্ত অগ্নিহোত্রী বলেন, “গত পঞ্চায়েত আমাদের শিক্ষা দিয়েছে। মনোনয়নপত্র তুলতে গিয়ে বাধা পেয়ে ফিরতে হয়েছিল অনেক প্রার্থীকে। তা ছাড়া, ‘ডিসিআর’ তোলার পরেও ব্লক কার্যালয়ের ভেতরে তৃণমূল-আশ্রিত দুষ্কৃতীরা সেই ফর্ম ছিঁড়ে দেওয়ায় কিছু আসনে প্রার্থী দেওয়া সম্ভব হয়নি। এ বারে তাই কয়েক দিনের মধ্যেই মনোনয়ন শেষ করতে চাইছি আমরা।” সূত্রের খবর, বুধবারের মধ্যে পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির সমস্ত আসনে মনোনয়ন জমা দেওয়ার কাজ শেষ করার লক্ষ্যে এগোচ্ছে গেরুয়া শিবির।
তবে জেলাপরিষদের আসনগুলিতে এখনও প্রার্থিতালিকা ঘোষণা করে উঠতে পারেনি বিজেপি নেতৃত্ব। দলের রাজ্য নেতা বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী বলেন, “প্রার্থিতালিকা জেলা থেকে রাজ্যে পাঠানো হয়েছে। দ্রুত রাজ্য থেকে তা ঘোষণা করা হবে।”
এ দিকে, তৃণমূলের মতো বিজেপিতেও এক আসনের জন্য একাধিক দাবিদার উঠে আসছে বলে খবর সূত্রের। শুধু জেলাপরিষদ নয়, কিছু ক্ষেত্রে পঞ্চায়েত সমিতির আসনেও একই ছবি দেখা যাচ্ছে। ‘প্রার্থী যেই হোক। দলকে জেতান। পদ্ম ফোটান’, সমাজমাধ্যমে এমন ‘পোস্ট’ করতে দেখা যাচ্ছে বিজেপির নেতাদের।
একটি আসনের জন্য একাধিক দাবিদারের বিষয়টি মেনে বিদ্যাসাগরের ব্যাখ্যা, “এটা শুভ লক্ষণ। দলের সংগঠন বেড়েছে জেলায়। গত পঞ্চায়েতের চেয়ে এ বারে জেলায় সাংগঠনিক ভাবে আমরা আরও শক্তিশালী হয়েছি বলেই একাধিক নেতা-কর্মী প্রার্থী হওয়ার দাবি জানাচ্ছেন।” তবে তাঁর দাবি, “এ নিয়ে কোনও সমস্যা হবে না। যেই প্রার্থী হন, তাঁকে জেতাতে কাজ করবেন অন্যেরা।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy