‘মন কি বাত’-এর ১০০ তম পর্ব। ছবি সংগৃহীত।
ভারতীয় সংবিধানে আদিবাসীদের কী কী অধিকার দেওয়া রয়েছে, তা প্রসার করতেই সাঁওতালি ভাষায়, অলচিকি হরফে সংবিধান অনুবাদ করেছিলেন। আর সেই কাজ করেই গত বছর মে মাসে ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন পুরুলিয়ার সিধো-কানহো-বীরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাঁওতালি বিভাগের অধ্যাপক শ্রীপতি টুডু। আগামী রবিবার ‘মন কি বাত’-এর শততম পর্বের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সামনাসামনি আলাপচারিতার ডাক পেয়ে দিল্লি গিয়েছেন বছর বত্রিশের শ্রীপতি। আজ, বুধবার থেকে ওই অনুষ্ঠানের রেকর্ডিং শুরু হচ্ছে।
সে বার ‘মন কি বাত’-এ মোদী শ্রীপতিকে উল্লেখ করে জানিয়েছিলেন, দেশে অনেকেই নিজেদের ভাষা শক্তিশালী করার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।
মোদী বলেছিলেন, ‘‘আমাদের সংবিধান প্রতিটি নাগরিককে তাঁর অধিকার ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন করে। তাই প্রতিটি নাগরিকের এ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকা প্রয়োজন। তাই তিনি সাঁওতাল সমাজের জন্য তাঁদের নিজস্ব লিপিতে সংবিধানের অনুবাদ করে উপহার রূপে দিয়েছেন। আমি শ্রীপতিজির ভাবনা ও প্রচেষ্টার প্রশংসা করছি।’’
বাঁকুড়া জেলার খাতড়ার মুড়াগ্রামের বাসিন্দা শ্রীপতির নিজের মাতৃভাষার প্রতি টান শৈশব থেকেই। স্বপ্ন ছিল, মাতৃভাষায় লেখাপড়া শিখে স্বাবলম্বী হবেন। বাঁকুড়ার ঝিলিমিলি হাই স্কুল থেকে সাঁওতালি মাধ্যমে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে পণ্ডিত রঘুনাথ মুর্মু স্মৃতি মহাবিদ্যালয় থেকে স্নাতক, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কথা-সাহিত্যে স্নাতকোত্তর। এরপরে সাঁওতালি শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন বাঘমুণ্ডির ধসকা স্কুলে। সেখান থেকে ঝাড়গ্রামের নয়াগ্রাম পণ্ডিত রঘুনাথ মুর্মু সরকারি কলেজে শিক্ষকতা, তারপরে ২০১৬ সালে পুরুলিয়ার সিধো-কানহো-বীরসা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাঁওতালি ভাষার শিক্ষক হিসেবে যোগদান। পাশাপাশি কলকাতার ইনস্টিটিউট অব ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যান্ড রিসার্চের (আইএলএসআর) সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন।
২০২১ সালে সাঁওতালিতে সংবিধান লেখা শেষ করেন শ্রীপতি। দিল্লির একটি প্রকাশনা সংস্থা তা প্রকাশ করেন। সে বার সংবিধানের অনুবাদ রাষ্ট্রপতি, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর দফতরে পাঠিয়েছিলেন।
এ দিন দিল্লি থেকে শ্রীপতি বলেন, ‘‘গতবার মন কি বাত অনুষ্ঠানের প্রতিনিধি পুরুলিয়ায় গিয়ে আমার বক্তব্য ‘রেকর্ড’ করে এনেছিলেন। কিছু দিন আগে প্রসার ভারতী থেকে আমাকে ফোন করে অনুষ্ঠানের শততম পর্বের জন্য দিল্লিতে আসার আমন্ত্রণ জানানো হয়। সোমবারই দিল্লিতে এসেছি। বুধবার থেরে শনিবার পর্যন্ত অনুষ্ঠান চলবে। সেখানে বইটি প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়ার ইচ্ছা রয়েছে।’’
তিনি জানান, যদি সুযোগ আসে, তাহলে নোটের উপরে অন্যান্য ভাষার সঙ্গে যাতে অলচিকিতেও টাকার মান লেখা থাকে, তা প্রধানমন্ত্রীকে জানাবেন। দূরদর্শনে শুধু সাঁওতালি মাধ্যমের একটি চ্যানেলেরও দাবি জানানোর ইচ্ছা রয়েছে তাঁর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy