Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

স্থায়িত্ব মাত্র তিন মিনিট, আঁধার নামল দুই গ্রামে

ঝড়ের স্থায়িত্ব ছিল বড় জোর তিন মিনিট। আর তার মধ্যেই লন্ডভন্ড হয়ে গেল এলাকা। ভেঙে পড়ল বহু গাছ, একাধিক বিদ্যুতের খুঁটি। উড়ে গেল বেশ কিছু বসতবাড়ির খড় ও টিনের চাল। খড়ের চাল চাপা পড়ে আহত হলেন এক বধূ। ক্ষতিগ্রস্ত হল মাঠে থাকা খরার ধানও!

ঝড়ে উল্টে গিয়েছে বিদ্যুতের খুঁটি। দুবরাজপুরের গ্রামে ছবিটি তুলেছেন দয়াল সেনগুপ্ত।

ঝড়ে উল্টে গিয়েছে বিদ্যুতের খুঁটি। দুবরাজপুরের গ্রামে ছবিটি তুলেছেন দয়াল সেনগুপ্ত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুবরাজপুর শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০১৫ ০৩:১২
Share: Save:

ঝড়ের স্থায়িত্ব ছিল বড় জোর তিন মিনিট। আর তার মধ্যেই লন্ডভন্ড হয়ে গেল এলাকা। ভেঙে পড়ল বহু গাছ, একাধিক বিদ্যুতের খুঁটি। উড়ে গেল বেশ কিছু বসতবাড়ির খড় ও টিনের চাল। খড়ের চাল চাপা পড়ে আহত হলেন এক বধূ। ক্ষতিগ্রস্ত হল মাঠে থাকা খরার ধানও!

শনিবার বিকালের সামান্য সময়ের ওই প্রবল ঝড়ে এমনই ক্ষয়ক্ষতি হয়ে গল দুবরাজপুরের পদুমা ও সাহাপুর পঞ্চায়েতের অন্তর্গত শিবরাওতাড়া ও যাত্রা নামের দু’টি গ্রামে। দুবরাজপুরের বিডিও সুশান্তকুমার বালা বলেন, ‘‘খবর পেয়েছি। তবে, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ঠিক কতটা, তা জেনে সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ করব।’’

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার বিকালে হঠাৎ-ই আকাশ কালো হয়ে এসেছিল। ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয় বিকাল সাড়ে ৪টে নাগাদ। দুবরাজপুরের বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টি হলেও সেখানে ঝড়ের বা দমকা হওয়ার দাপট তেমন ছিল না। কিন্তু, পদুমার শিবরাওতাড়া গ্রাম ও কাছাকাছি থাকা সাহাপুরের যাত্রা গ্রামের বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, মিনিট তিনেকের একটা দমকা হাওয়াতেই সব লন্ডভন্ড করে দিল। বিশেষ করে শাবরাওতাড়া গ্রামের দাসপাড়া ও মাঝিপাড়ায় গোটা পাঁচেক বাড়ি দু’-তিনটি গোয়ালঘর পড়ে যায়। বেশ কয়েকটি গাছ ও বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙেও ক্ষতিগ্রস্ত হয় বাড়ি। ছায়া দাস নামে এম বধূ সেই সময় গোয়ালঘরে আশ্রয় নিয়েছিলেন। হাওয়ায় গোয়ালঘরটি হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে। তাতেই জখম হয়ে সিউড়ি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই বধূ। বধূর মাথায় ও পায়ে মারাত্মক আঘাত লেগেছে বলে জানিয়েছেন ওই বধূর শ্বশুর কালো দাস। বাড়ির টিনের চাল উড়ে গিয়েছে ছায়াদেবীদের। প্রতিবেশী মোহন সরেন, সুখি সরেনদের বাড়ির উপর গাছ পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাড়িটি। খড়ের চাল উড়ে গিয়েছে অন্যান্য পড়শিদের। অন্য দিকে, যাত্রা গ্রামের সিধু বাগদি নামে এক বধূ বাড়িতে ছিলেন। ঝড়ে তাঁর চালাটি উড়িয়ে নিয়ে যায়। ভয়ে শিশুটিকে নিয়ে জড়োসড়ো হয়েছিলেন। কোনও রকমে পড়শিরা মা-মেয়েকে উদ্ধার করে।

অন্য দিকে, ওই ঝড়ে একই গ্রামের রবিলাল মালেদের বাড়ির চালাও ভেঙে পড়ে। স্ত্রী কল্যাণী মাল নাতি-নাতনিদের নিয়ে বাড়িতেই ছিলেন। বরাত জোরে বেঁচে গিয়েছেন। একাধিক বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে দু’টি গ্রামই। রবিবার সকালে বিদ্যুৎ দফতর কাজে নামে। দু’টি পঞ্চায়েতে সূত্রে জানা গিয়েছে, অন্তত বারোটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এবং সব থেকে চিন্তা খেতের ধান নিয়ে। কারণ, ওই অঞ্চলে চাষিরা যথেষ্ট পরিমাণ জমিতে খরার ধান লাগান। মাঠ থেকে তোলার সময় হয়ে এসেছে। কিন্তু, বেশ কিছু মাঠের ধান হাওয়ায় মাটিতে পড়ে গিয়েছে। জলে ভিজে যাওয়ায় সব ধান বাড়িতে নিয়ে আসা যাবে কিনা, সেই আশঙ্কাও তাই থাকছে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE