Advertisement
১৮ ডিসেম্বর ২০২৪
Anubrata Mondal

জেল হেফাজতে রয়েছেন অনুব্রত, আবার শিল্পের দাবিতে পোস্টার দেখা গেল বীরভূমের সেই শিবপুরে

সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়ে আপাতত জেল হেফাজতে তৃণমূলের বীরভূম জেলার সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। ঘটনাচক্রে ঠিক এই সময়েই জমি অধিগ্রহণ বিরোধী পোস্টারে ছয়লাপ হয়ে গেল বীরভূমের বোলপুরের শিবপুর এলাকা।

শিবপুরে মিলেছে এই পোস্টার।

শিবপুরে মিলেছে এই পোস্টার। — নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বোলপুর শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৫:৪৬
Share: Save:

গরু পাচার-কাণ্ডে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়ে আপাতত জেল হেফাজতে রয়েছেন তৃণমূলের বীরভূম জেলার সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। ঘটনাচক্রে ঠিক এই সময়েই অধিগৃহীত জমিতে কর্মসংস্থানমূলক শিল্প গড়ার দাবিতে পোস্টার দেওয়া হল বীরভূমের বোলপুরের শিবপুর এলাকায়। বৃহস্পতিবার সেখানে এমন বহু পোস্টার পাওয়া গিয়েছে। আর এ নিয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে তৃণমূলের চাপানউতর শুরু হয়েছে।

বোলপুরের শিবপুর এলাকায় প্রায় ৩০০ একর জমির উপর গড়ে উঠেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের প্রকল্প ‘গীতবিতান’। সেই সঙ্গে গড়ে উঠেছে বিশ্ব বাংলা বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিশ্ব বাংলা ক্ষুদ্র বাজার। ওই এলাকাতেই বৃহস্পতিবার বেশ কিছু পোস্টার দেখতে পাওয়া যায়। তাতে লেখা রয়েছে, ‘আমাদের চাষজমির উপর চোর-ডাকাতের প্রোমোটারি উন্নয়ন মানছি না, মানব না।’ পাশাপাশি, ওই জমিতে শিল্প গড়া এবং সেখানে কর্মসংস্থানের দাবি তোলা হয়েছে পোস্টারগুলিতে। ‘শিবপুর জমিহারা কৃষক সংগ্রাম মঞ্চ’-এর তরফে ওই পোস্টার দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার ওই এলাকায় পোস্টার দেওয়ার ঘটনা ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতর। ওই আন্দোলনের নেতা রিপন মির্জা বলেন, ‘‘হাই কোর্ট স্থগিতাদেশ দিয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও সেই নির্দেশ না মেনে অনুব্রত মণ্ডলের নির্দেশে এবং তৃণমূলের নির্দেশে কাজ চলছিল। আমরা বিষয়টি জানানোর পরেও প্রশাসন চুপ। আমাদের স্পষ্ট দাবি, এখানে কর্মসংস্থানমূলক শিল্প হোক। না হলে আমাদের তিন ফসলি জমি ফিরিয়ে দেওয়া হোক।’’

বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলের বীরভূম জেলার মুখপাত্র, মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সকলের আন্দোলন করার অধিকার রয়েছে। ওঁরাও আন্দোলন চালিয়ে যান। এতে কোনও সমস্যা নেই। আইন আইনের পথে চলবে।’’

বাম আমলে বোলপুরের শিবপুর মৌজায় শিল্পের নামে ৩০০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল। সেই জমিতে ‘গীতবিতান’ আবাসন প্রকল্প এবং বিশ্ব বাংলা বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু এ নিয়ে জমিদাতাদের একাংশ আন্দোলন শুরু করেন। ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে সভার আয়োজন করেন বিক্ষুব্ধ জমিদাতারা। তাতে যোগ দেওয়ার জন্য রওনা দেন আব্দুল মান্নান এবং বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যেরা। কিন্তু পাল্টা জমায়েত করে তৃণমূলও। দু’পক্ষের সংঘর্ষও বাধে। অভিযোগ, মঞ্চ ভেঙে দেন তৃণমূল কর্মীরা। আরও অভিযোগ ওঠে, গুলি চালানোর। পাল্টা তৃণমূলের অভিযোগ, আন্দোলনকারীদের মারে জখম হন তঁদের এক কর্মীও। এর মধ্যেই খবর পেয়ে ওই দিন বিকেলে শিবপুর পৌঁছন অনুব্রত। তৎকালীন ডিএসপি কাশীনাথ মিস্ত্রিকে ডেকে নিজের হাতের ঘড়ি দেখিয়ে বলেন, “ক’টা বাজে? ৪.১৫ মিনিট। ৭টা পর্যন্ত সময় দিলাম। ৯টার মধ্যে আমি ঢুকে যাব। এক জনেরও বাড়ি-ঘর রাখব না। তাণ্ডবলীলা খেলে দেব। ভয়ঙ্কর খেলে দেব। আর যারা মেরেছে তাঁদের গ্রেফতার করুন। কোনও কাহিনি শুনব না।’’ এর পর একটু থেমে ফের বলেন, ‘‘এখানে উন্নয়ন হচ্ছে। কে মান্নান, কে সিপিএমের নেতা জানি না। হাত-পা ভেঙে দেব।’’ ঘটনাচক্রে অনুব্রত সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হওয়ার কিছু দিনের মধ্যে শিবপুরে আবারও মাথাচাড়া দিল ওই আন্দোলন।

অন্য বিষয়গুলি:

Anubrata Mondal Bolpur Land Acquisitions
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy