Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
খাতড়া-পিড়রগাড়ি রাস্তা

মোরাম উঠে ডোবার চেহারা

যা আশঙ্কা ছিল, তাই হয়েছে। পিচরাস্তার খানাখন্দ ভরাট করা হয়েছিল মোরাম ফেলে। কিন্তু বছর না ঘুরতেই সেই মোরাম উঠে গিয়েছে রাস্তার হতশ্রী দশা ফের ফুটে উঠেছে। এখন বর্ষায় রাস্তার একপাশে কোনও ভাবে পিচ মাটি কামড়ে রয়ে গিয়েছে।

জামবনি গ্রামের কাছে রাস্তার গর্তে জমা জল। —নিজস্ব চিত্র

জামবনি গ্রামের কাছে রাস্তার গর্তে জমা জল। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
খাতড়া শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৬ ০০:৫৬
Share: Save:

যা আশঙ্কা ছিল, তাই হয়েছে।

পিচরাস্তার খানাখন্দ ভরাট করা হয়েছিল মোরাম ফেলে। কিন্তু বছর না ঘুরতেই সেই মোরাম উঠে গিয়েছে রাস্তার হতশ্রী দশা ফের ফুটে উঠেছে। এখন বর্ষায় রাস্তার একপাশে কোনও ভাবে পিচ মাটি কামড়ে রয়ে গিয়েছে। বাকি অংশ বৃষ্টির জলে টইটুম্বুর। খাতড়া থেকে পি়ড়রগাড়ি মোড় যাওয়ার প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তার এই হাল।

বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, দীর্ঘদিন ধরেই রাস্তাটি সংস্কারের অভাবে নষ্ট হচ্ছে। জায়গায় জায়গায় পিচ উঠে গিয়ে গর্ত তৈরি হয়েছিল। ওই পথ চলতে বাসিন্দারা নাকাল হচ্ছিলেন। তা নিয়ে নানা মহলে কথা উঠছিল। শেষে গত বছর দুর্গাপুজোর আগে মোরাম দিয়ে সেই সমস্ত গর্ত বোজানো হয়। তখনই বাসিন্দাদের একাংশ আশঙ্কা করেছিলেন, মোরাম উঠে গিয়ে ফের গর্ত বেরিয়ে এসে একই দশা হবে। তাঁরা স্থানী ভাবে সংস্কারের দাবি তুলেছিলেন। মোরাম ফেলার পরে কয়েক মাস যেতে না যেতেই তা উঠে ফের আগের বেহাল চেহারায় ফিরে এসেছে রাস্তা। এখন বৃষ্টিতে খানাখন্দে জল জমে আরও বিপজ্জনক অবস্থা হয়েছে। অবিলম্বে রাস্তাটির পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের দাবিতে সরব হয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা।

খাতড়া থেকে কাঁকড়াদাড়া, গোপালপুর, পিড়রগাড়ি মোড় হয়ে রাস্তাটি সোজা চলে গিয়েছে সারেঙ্গা পর্যন্ত। সম্প্রতি ওই রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে দেখা গেল, কাঁকড়াদাড়া, গোপালপুর, কুকরাকন্দর, তুষটিকরি, সারেসকোল, জামবনি প্রভৃতি এলাকায় রাস্তা কার্যত ভেঙে পড়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, বছরখানেক ধরেই রাস্তাটির এই চেহারা। মাঝে মধ্যেই রাস্তার ওই অবস্থার জন্য দুর্ঘটনাও ঘটে বলে অভিযোগ। খাতড়া ব্লকের কাঁকড়াদাড়া, গোপালপুর, জাতাপুর, সারেঙ্গা ব্লকের সারেসকোল, জামবনি ও সিমলাপাল ব্লকের পার্শ্বলা পঞ্চায়েত এলাকা মিলেয়ে প্রায় ২৫টি গ্রামের মানুষজন প্রতিদিন ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করেন। কিন্তু রাস্তা সংস্কারে প্রশাসনের হেলদোল নেই বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। তাঁদের দাবি, মোরাম ফেলে কোনও রকমে জোড়াতাপ্পি দিয়ে রাস্তা মেরামতি করা হয়েছিল। কিন্তু ভারী গাড়ি যাতায়াতের ফলে সেই মোরাম উঠে যায়।

গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা সহদেব দুলে বলেন, “এই রাস্তায় আগে সারেঙ্গা হয়ে মেদিনীপুর, লালগড় যাওয়ার ৮-১০টি বাস চলত। কিন্তু রাস্তার এই দশা দেখে দূরপাল্লার অনেক বাস একে একে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এখন সারাদিনে ছ’টি বাস চলে।” সারেঙ্গার বরাগাড়ি কলেজের ছাত্রী প্রিয়াঙ্কা দুলে, রাজন সর্দারদের ক্ষোভ, “রাস্তা খারাপ হওয়ায় কলেজে যেতে দেরি হয়ে যায়। ক্লাসে সময়মতো ঢোকা যায় না। এতে পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে।’’ গাড়ি চালকদের অভিযোগ, বেহাল রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে হামেশাই গাড়ি বিকল হয়ে পড়ছে।

এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ মেনে নিয়েছেন তৃণমূলের সারেঙ্গা ব্লক কার্যকরী সভাপতি তথা পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য সুব্রতকুমার মিশ্র। তিনি বলেন, “পিড়রগাড়ি মোড় থেকে খাতড়া যাওয়ার রাস্তা অনেক জায়গায় বেহাল হয়ে পড়েছে। রাস্তা সংস্কারের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে আবেদন করা হয়েছে।” বাঁকুড়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি অরূপ চক্রবর্তীর আশ্বাস, “জঙ্গলমহলের বেশ কয়েকটি রাস্তা সংস্কারের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ওই রাস্তাটিরও সংস্কার করা হবে।”

অন্য বিষয়গুলি:

road distress
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE