Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

আবর্জনায় থমকে কংসাবতী

আঁকে বাঁকে চলেছে নদী। তাতে হাঁটু সমান জল। আর সেই জলে ভেসে চলেছে পলিথিন, খাবারের মোড়ক, প্লাস্টিকের গ্লাস, থার্মোকলের থালা-বাটি, মদের বোতল।

শুখা দামোদর নদে মাছে খোঁজে। ছবি তুলেছেন অভিজিৎ সিংহ

শুখা দামোদর নদে মাছে খোঁজে। ছবি তুলেছেন অভিজিৎ সিংহ

নিজস্ব সংবাদদাতা
রাইপুর শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০১৬ ০৬:৩৬
Share: Save:

আঁকে বাঁকে চলেছে নদী। তাতে হাঁটু সমান জল। আর সেই জলে ভেসে চলেছে পলিথিন, খাবারের মোড়ক, প্লাস্টিকের গ্লাস, থার্মোকলের থালা-বাটি, মদের বোতল।

বাঁকুড়ার রাইপুরে কংসাবতী নদীর চেহারা এখন এ রকমই। সম্প্রতি নদীর চরে গিয়ে দেখা গেল, জায়গায় জায়গায় কচুরিপানা। তাতে ঠেকে জমছে আবর্জনা। কোনও রকমে জলের স্রোত চলেছে তার মধ্যে দিয়েই। সেই দূষিত জলেই চলছে কাপড় কাচা থেকে শুরু করে স্নান করা। বাঁকুড়া-ঝাড়গ্রাম রাজ্য সড়কের সেতুর নীচে, রজকপাড়ার ঘাটের সামনে আবর্জনা প্রায় স্তূপ হয়ে জমে রয়েছে।

ভরা বর্ষায় টইটম্বুর থাকলেও চলতি গ্রীষ্মে কংসাবতী প্রায় খটখটে শুকনো। গরমে জলসঙ্কট দেখা দিয়েছে এলাকায়। রোজকার কাজের জন্য কংসাবতীর সরু জলের ধারার উপরই এখন ভরসা করে রয়েছেন নদীর তীরের রাইপুর, চিলতোড়, দুবনালা, বানপুর, সিদি, ফুলবেড়িয়া গ্রামের বাসিন্দারা। রাইপুরের সবুজবাজার, রজকপাড়া, থানাগোড়া, ঘোষালপাড়া, হাঁড়িপাড়া, পোদ্দারপাড়া-সহ বেশ কয়েকটি এলাকার মানুষ নদীতে স্নান করেন, কাপড় কাচেন। গৃহপালিত পশুদের গা-ধোয়ানো হয় নদীর জলে।

রাইপুরের ধোবাপাড়ার বাসিন্দা সন্ধ্যা রজক, গোপাল রজকরা বলেন, “আমাদের বাড়িতে নলকূপ নেই। সারা বছর নদীর জলেই কাপড় কাচা, স্নান— সব করি। গরমে নদীতে জল একেবারে শুকিয়ে এসেছে। তার উপরে ময়লা ফেলায় সেই জল ঘোলাটে হয়ে গিয়েছে। কিন্তু কী করব! তার মধ্যেই স্নান করতে হয়।” প্রশাসনের দাবি, এই দূষণের দায় স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের। এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ গৃহস্থালির দৈনন্দিন বর্জ্য নদীতে ফেলতে শুরু করেছেন। কিন্তু রাইপুরের মথুর রজক, রবি রজকদের ক্ষোভ, “সচেতনতার অভাব তো রয়েইছে, তবে প্রশাসনও দূষণ ঠেকাতে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।’’

বিডিও (রাইপুর) দীপঙ্কর দাস বলেন, “এলাকায় কঠিন ও তরল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র গড়ে তোলা হচ্ছে। রোজ বাড়ি বাড়ি গিয়ে আবর্জনা সংগ্রহ করা হবে। তার পরে ওই কেন্দ্রে তরল বর্জ্য গলিয়ে দেওয়া হবে। কঠিন বর্জ্য নষ্ট করে দেওয়া হবে।’’ বিডিও জানান, এলাকা থেকে দৈনন্দিন আবর্জনা সংগ্রহ করে কেন্দ্রে নিয়ে আসার জন্য পঞ্চায়েত তিনটি ছোট গাড়ির ব্যবস্থা করছে। ওই কেন্দ্রটি চালু হলেই নদীতে আবর্জনা ফেলার প্রবণতা কমে যাবে বলে তিনি আশাবাদী।

তবে সেই কাজ যে অচিরে হওয়ার নয় তা প্রশাসনের আধিকারিকেরা মেনে নিয়েছেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Kangsabati River pollution
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE