সতর্ক: টাটানগরের ঘটনার পরে লাঠি ও ‘মেটাল ডিটেক্টর’ নিয়ে পুরুলিয়া স্টেশনে রেল পুলিশের কর্মীরা। শুক্রবার। ছবি: সুজিত মাহাতো
তিন বছরের শিশুকন্যাকে ধর্ষণ করে, খুন করে মাথা কেটে ফেলার ঘটনায় তোলপাড় পড়ে গিয়েছে। ঝাড়খণ্ডের টাটানগর স্টেশন থেকে অপহরণ করা হয়েছিল তাকে। গত ২৪ জুলাই রাতে সেই অভিযোগ পাওয়ার পরেই সিসিটিভি ফুটেজ দেখে দু’জনকে গ্রেফতার করে রেলপুলিশ। ওই শিশুর মাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ফুসলিয়ে, মেয়ে-সহ পুরুলিয়া স্টেশন থেকেই ট্রেনে চাপিয়ে টাটানগরে নিয়ে গিয়েছিল মনু মণ্ডল নামে এক অভিযুক্ত। ঘটনার পরে প্রশ্ন উঠেছে, কতটা নিরাপদ পুরুলিয়া স্টেশন?
রেলপুলিশের দাবি, যথেষ্ট। ক্লোজ়ড সার্কিট ক্যামেরায় সর্বক্ষণ চলে নজরদারি। কিন্তু কয়েক বছর আগেও ছবিটা ছিল অন্য রকমের। এই ঘটনার পরে জেলার অনেকের মনে পড়ে যাচ্ছে ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরের কথা। বাড়ি ফেরার ট্রেন দেরিতে চলছিল। রাচীর এক তরুণী পুরুলিয়া স্টেশনের ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে অপেক্ষা করছিলেন। তখনই এক যুবক এসে তাঁর সঙ্গে আলাপ জমায়।
অভিযোগ, সেই যুবক ভুল বুঝিয়ে তাঁকে প্ল্যাটফর্মের বাইরে শৌচাগারে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। সে রাতেই স্টেশন চত্বরে আর এক যুবক তাঁকে ধর্ষণ করে বলেও অভিযোগ করেছিলেন ওই তরুণী।
নজর: কন্ট্রোল রুমে সিসিটিভিতে চোখ। নিজস্ব চিত্র
ঘটনার পরে ওই শৌচালয় চালানোর দায়িত্বে থাকা অভিযুক্ত যুবককে গ্রেফতার করে রেলপুলিশ। তাকে জেরা করে গ্রেফতার করা হয় আরও এক জনকে। কিন্তু সেই সময়ে স্টেশনের নিরাপত্তার হাঁড়ির হালটাও সামনে চলে এসেছিল ঘটনার সূত্র ধরে। তখন স্টেশনে হাতে গোনা কিছু সিসিক্যামেরা ছিল। ঘটনার পরে খোঁজ করতে গিয়ে দেখা যায়, মাসখানেকেরও বেশি সময় সেগুলি বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে। এখন ছবিটা আমূল বদলেছে বলে দাবি রেলপুলিশের।
ওই ঘটনার পরেই ঢেলে সাজানো হয়েছিল পুরুলিয়া স্টেশনের নিরাপত্তা। বাড়ানো হয়েছিল রক্ষী। চারটি প্ল্যাটফর্মে এখন মোট ৫৩টি সিসিক্যামেরা রয়েছে। সচল অবস্থায়। কন্ট্রোল রুম থেকে ২৪ ঘণ্টা নজর রাখা হয় ক্যামেরার ফুটেজে। আর চলে নিয়মিত টহল। আরপিএফের ওসি সঞ্জয় হাজরা জানান, স্টেশন চত্বরে কারও গতিবিধি সন্দেহজনক ঠেকলেই পুলিশ গিয়ে হাজির হয়। ২০১৮-১৯ সালে এমন ভাবে ১৮ জনকে উদ্ধার করে বাড়িও ফিরিয়েছে রেলপুলিশ। তবে রেলপুলিশের বক্তব্য, নিরাপত্তার ক্ষেত্রে যাত্রীদেরও সজাগ থাকা জরুরি।
শুক্রবার পুরুলিয়া স্টেশনে আরপিএফের উদ্যোগে একটি সচেতনতা কর্মসূচি হয়েছে। স্টেশন চত্বরেই একটি মহিলা পরিচালিত বারোয়ারি দুর্গাপুজো হয়। ওই পুজো কমিটির লোকজন ছিলেন কর্মসূচিতে। ছিলেন চাইল্ড লাইনের প্রতিনিধিরা। যাত্রীদের বলা হয়, সন্দেহজনক কিছু দেখলেই নির্দ্বিধায় যে কোনও দরকারে ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে রেলপুলিশের সহায়তাকেন্দ্রে যোগাযোগ করতে। ২ এবং ৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মের মাঝে আরপিএফ এবং জিআরপির পোস্ট রয়েছে। দরকারে সেখানেও যেতে বলা হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy