গতিহীন: রাতেও যানজটে থমকে পথ। আমোদপুরে। নিজস্ব চিত্র
পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতির অফিস, পুলিশ ফাঁড়ি, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, বাজার রয়েছে সেখানে। কিন্তু আমোদপুরে নেই কোনও বাসস্ট্যান্ড। বিভিন্ন জায়গায় বাস দাঁড় করিয়ে যাত্রীরা ওঠানামা করছেন। তার জেরে হচ্ছে যানজট। দুর্ভোগে স্থানীয় বাসিন্দারা।
প্রশাসনিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সাঁইথিয়ার ওই জনপদকে কার্যত দ্বিখণ্ডিত করেছে হাওড়া-রামপুরহাট রেলপথ। আমোদপুর-কাটোয়া রেলপথও মিশেছে আমোদপুর স্টেশনে। অন্য দিকে চৌরঙ্গি মোড়ে যোগচিহ্নের মতো আমোদপুরকে কার্যত চার ভাগে ভাগ করে দিয়েছে সিউড়ি-কাটোয়া ও বোলপুর-রাজগ্রাম সড়ক। বেশ কিছু আমোদপুরগামী সড়ক এসে জুড়েছে ওই দুই সড়কে।
এলাকাবাসী জানান, ওই সড়ক দু’টিতে দিনে প্রায় পঞ্চাশটি বেসরকারি বাস বিভিন্ন রুটে চলাচল করে। চলে সরকারি বাস, অন্য যানবাহনও। চিনিকলের সুবাদে একসময় খ্যাতি ছিল আমোদপুরের। সেই সময় থেকেই আমোদপুরে গড়ে ওঠে বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান।
আমোদপুরে রয়েছে পুলিশ ফাঁড়ি, সাঁইথিয়া পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস, কুচুইঘাটা ও ঈশ্বরপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। দিনে কয়েক হাজার মানুষ আমোদপুরে যাতায়াত করেন। অভিযোগ, বাসস্ট্যান্ড না থাকায় সমস্যায় পড়েন সকলে। রেলসেতু, চৌরঙ্গি মোড় সহ বিভিন্ন জায়গায় বাস দাঁড় করানোয় যানজট হয়।
সব থেকে সমস্যায় পড়ে স্কুলপড়ুয়ারা। এলাকায় কয়েকটি প্রাথমিক স্কুলের পাশাপাশি রয়েছে জয়দুর্গা উচ্চ বিদ্যালয়, জয়দুর্গা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় এবং রামকৃষ্ণ উচ্চ বিদ্যালয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই তিনটি স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৩ হাজার। পড়ুয়াদের ৮০ শতাংশ সাইকেলে স্কুলে যাতায়াত করে। অভিযোগ, প্রায় প্রতি দিনই তাদের যানজটের কবলে পড়তে হয়। প্রায় দিনই দেরি হয়ে যায় তাদের।
স্থানীয় একটি বেসরকারি স্কুলের তরফে সজল চট্টোপাধ্যায়, অভিভাবক মিলন দাস বলেন, ‘‘সব থেকে বেশি আশঙ্কা হয় ছোট ছেলেমেয়েদের নিয়ে। হেঁটে আসা ওই সব পড়ুয়াদেরও বিপদের ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে আসতে হয়৷’’
স্থানীয় ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক রাজেন্দ্রনাথ দত্ত বলেন, ‘‘যেখানে সেখানে বাস দাঁড় করানোয় যানজটের জেরে ব্যবসারও ক্ষতি হয়।’’ একই বক্তব্য বীরভূম ডিস্ট্রিক্ট বাস ও মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক আব্দুল আজিমেরও। তিনি বলেন, ‘‘অনেক বার প্রশাসনের কাছে আমোদপুরে বাসস্ট্যান্ড তৈরি করার দাবি জানিয়েছি। লাভ হয়নি। বাধ্য হয়ে রাস্তায় বাস দাঁড় করিয়ে যাত্রী ওঠানামা করাতে হয়। কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে আমাদের কর্মীদের জনরোষের শিকার হতে হয়।’’
আমোদপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জীবনানন্দ বাগদি বলেন, ‘‘এত দিন জায়গার অভাবে আমোদপুরে বাসস্ট্যান্ড তৈরি করা যায়নি। সম্প্রতি চৌরঙ্গি মোড়ের কাছে একটি সরকারি জায়গা চিহ্নিত করে জেলা পরিষদের কাছে বাসস্ট্যান্ড নির্মাণের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।’’
জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘আমোদপুরে বাসস্ট্যান্ড নির্মাণের দাবি যুক্তিসম্মত। যত দ্রুত সম্ভব ওই প্রস্তাব খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy