প্রচার: মানবাজার পোস্ট অফিস মোড়ে বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র
হাত পা নেড়ে এক জন অন্য জনকে বলছে— ‘‘এইচআইভি আক্রান্ত রোগীদের সঙ্গে খোলামেলা মেশা করা যায়। বুকে জড়িয়ে ধরলে বা করমর্দন করলেও ভয়ের কিছু নেই। রক্তের মাধ্যমে বা অসুরক্ষিত যৌন জীবনযাপন থেকে এই রোগ ছড়ায়।’’ অন্য জন তখন ঘাড় নেড়ে যাচ্ছিল। আর তাদের কথোপকথন হাঁ করে শুনছেন ভিড় করা মানুষজন।
যারা কথা বলছে, তারা অবশ্য মানুষ নয়, পুতুল। পুতুল নাচের মাধ্যমেই এডস এবং এইচআইভি সম্পর্কে সচেতনতার পাঠ দেওয়া শুরু করেছে পুরুলিয়া জেলা স্বাস্থ্য দফতর। বৃহস্পতিবার সকালে মানবাজার থানার পোস্ট অফিস মোড়ে এমনই পুতুল নাচের আসর দেখতে জমে গিয়েছিল ভিড়।
রাজ্যের অন্যান্য জেলার মতো পুরুলিয়াতেও স্বাস্থ্য দফতর এডস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে নানা মাধ্যমে প্রচার চালাচ্ছে। তবুও এডস বা এইচআইভি আক্রান্ত রোগীদের সামাজিক হেনস্থার শিকার হতে হয়। এমনও হয়েছে, এডস আক্রান্ত পরিবারের ছায়া পর্যন্ত মাড়াতে চাননি পড়শিরা। অথচ ওই রোগীদের সঙ্গে মেলামেশায় যে রোগ ছড়ায় না, তা অনেকেই জানেন না। সেই বার্তা আরও ছড়িয়ে দিতে এ বার পুতুল নাটককে মাধ্যম করা হয়েছে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, ৩০ নভেম্বর থেকে জেলার সাতটি ব্লক ও জেলা সদরে পুতুল নাচের মাধ্যমে এডস সচেতনতার কর্মসুচি নেওয়া হয়েছে। পুরুলিয়া পুরসভা, কাশীপুর, হুড়া, পুঞ্চা, মানবাজার ১ ও ২ , বরাবাজার ও বলরামপুর ব্লক এলাকায় এই প্রচার চালানোর কথা রয়েছে।
‘অগ্রগামী পুতুল থিয়েটার’ নামে পুতুল নাচের পরিচালক কার্তিকচন্দ্র গিরি আদতে পূর্ব মেদিনীপুরের মারিশদার বাসিন্দা। তিনি জানান, রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের নানা প্রকল্পের প্রচারে পুতুল নাটকের জুড়ি মেলা ভার। পুরুলিয়ায় এইচআইভি সচেতনতা প্রচারে জেলার বিভিন্ন এলাকায় গত কয়েক দিন ধরে তিনি দল
নিয়ে ঘুরছেন।
তাঁর কথায়, ‘‘দীর্ঘ ৪০ বছরের অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি, বিনোদনের মাধ্যম যতই বদলাক, পুতুল নাচের আকর্যণ ক্ষমতা এতটুকুও কমেনি। তাই পুতুলের মুখে কোনও কিছু প্রচার করলে তা আরও বেশি লোকের কাছে পৌঁছয়।’’
ওই দলের অন্যতম সদস্য এইচআইভি-র কাউন্সিলর বিধানচন্দ্র গড়াই বলেন, ‘‘আমরা দেখেছি, এখনও বিভিন্ন এলাকায় এডস রোগীদের সম্পর্কে কুপ্রচারের অভাব নেই। তাই আমরা বিভিন্ন হাট-বাজারে পুতুল নাচের প্রদর্শনী করে ওই কুপ্রচারের জবাব দিচ্ছি। এ ছাড়া আমাদের প্রদর্শনী গাড়ি থেকে প্রচারপত্রের সঙ্গে বিনামূল্যে কন্ডোম বিলি করা হচ্ছে।’’
প্রচারপত্রে পুরুলিয়া সদর হাসপাতাল-সহ জেলার ১৪টি ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ঠিকানা রয়েছে। সেখানে এডস সন্দেহে গোপনে পরীক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে। এলাকায় এই রোগের চিকিৎসা করা হয়, বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
মানবাজারের বিএমওএইচ রামকৃষ্ণ হেমব্রম বলেন, ‘‘জেলার বিভিন্ন জনবহুল এলাকায় পুতুল নাচের মাধ্যমে এডস সচেতনতা প্রচার চলছে। এতে আমরা ভাল সাড়া পাচ্ছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy