জরাজীর্ণ: ভেঙেছে সেতুর লোহার কাঠামো। মল্লারপুরের ওভারব্রিজে। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম
নীচে রেলপথ। ওভারব্রিজের জায়গায় জায়গায় লোহার পাত সরে গিয়েছে দীর্ঘদিন। সেখান দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে চলছে নিত্য যাতায়াত। অভিযোগ, আতঙ্কে দিন কাটছে মল্লারপুরবাসীর।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, রানিগঞ্জ–মোরগ্রাম জাতীয় সড়কে মল্লারপুর ওভারব্রিজের বেশ কয়েকটি লোহার পাত সরে গিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এই অবস্থা থাকলেও জাতীয় সড়কের দেখভালের দায়িত্বে থাকা কর্তৃপক্ষ এখনও পর্যন্ত কোনও সদর্থক ভূমিকা গ্রহণ করেননি বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। তাঁদের বক্তব্য, ব্যস্ত এই সেতুর উপর দিয়ে রোজ কয়েক হাজার গাড়ি চলাচল করে। সেতুর নীচেই রয়েছে রেল লাইন। তাই আরও বেশি বিপদের আশঙ্কা রয়েছে বলে দাবি স্থানীয়দের। অবিলম্বে ওই সমস্ত লোহার পাত বদলেরও দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন এই অবস্থায় সেতুর উপর দিয়ে ভারী যান চলাচল করছে। এর ফলে সেতুর ঢালাইয়ের একটি অংশের সঙ্গে অন্য অংশের সংযোগস্থলগুলির রাবার উঠে গিয়েছে । ফলে সেতুর সংযোগস্থলগুলিতে ছোট ছোট ফাটল দেখা দিয়েছে। বাসিন্দাদের আশঙ্কা, অবিলম্বে লোহার পাতগুলি যদি বদল করা না হয় তাহলে ক্রমশ সংযোগস্থলগুলির ঢালাইয়ের অংশ ভাঙতে শুরু করবে।
রানিগঞ্জ–মোরগ্রাম জাতীয় সড়কের মল্লারপুর ওভারব্রিজে এই ধরনের ১৩টি সংযোগস্থল আছে। ওই সংযোগস্থলগুলিকে পূর্ত দফতরের(সড়ক ) কারিগরি ভাষায় ‘এক্সপ্যানশন জয়েন্ট’ বলা হয় । পূর্ত দফতরের(সড়ক ) বিভাগের বাস্তকাররা জানান, সাধারণত একটি সেতুর উপর ঢালাইয়ের এক অংশের সঙ্গে অন্য অংশ সংযোগের জন্য এই ‘এক্স্যানশন জয়েন্টে’র দরকার পড়ে। রবার গার্ড ও লোহার পাত ব্যবহার করে দুই রকমভাবে জয়েন্ট করা হয়। রানিগঞ্জ–মোরগ্রাম জাতীয় সড়কে মল্লারপুর ওভারব্রিজে লোহার পাত দিয়ে জয়েন্ট রয়েছে। দীর্ঘদিন ব্যবহারের পর ওই লোহার পাতগুলি সরে যায় বা খারাপ হয়ে যায়। সেগুলি বদল না করলে সংযোগস্থল সংলগ্ন ঢালাই ক্রমশ ভাঙতে শুরু করে বলে পূর্ত দফতরের(সড়ক) বিভাগের বাস্তুকাররা জানান।
মল্লারপুর ওভারব্রিজের ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে ইতিমধ্যে লোহার পাতগুলি সরে সরে গিয়েছে। সংযোগস্থল অংশে ঢালাই ভাঙতেও শুরু করেছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দা তথা বীরভূম জেলা পরিষদের সদস্য ধীরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ময়ূরেশ্বর ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি থাকাকালীন জেলা পরিষদে পূর্ত বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলাম। জাতীয় সড়কের উপর মল্লারপুর সেতুর বিপজ্জনক অবস্থা নিয়ে জেলা পরিষদের বৈঠকে একাধিকবার আলোচনা হয়েছে। জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায় চৌধূরী জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। সেতুর হাল পরিদর্শনও করেছেন তিনি, কিন্তু এখনও পর্যন্ত সেতুর মেরামতি হয়নি।
মল্লারপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েত অঞ্চলের প্রাক্তন উপপ্রধান জগন্নাথ ঘোষ, এলাকার ব্যবসায়ী প্রভাস মণ্ডলরা বলেন, ‘‘দু’বছর যাবত সেতুর সংযোগকারী স্থানগুলির রবার উঠে গিয়েছে। ফলে সেতুর উপর দিয়ে দ্রুত গতিতে গাড়ি যাতায়াত করলে ভয় হয়।’’ এই অবস্থা নজর এড়ায়নি জাতীয় সড়কের দায়িত্বপ্রাপ্ত বাস্তকারদেরও। রানিগঞ্জ–মোরগ্রাম জাতীয় সড়কের নির্বাহী বাস্তুকার নিশিকান্ত সিংহ জানান, শুধু মল্লারপুর নয়, জাতীয় সড়কের উপর ন’টি সেতুর সংস্কারের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সাড়ে সাত কোটি টাকার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। আশা করা যায় আগামী মাসের মধ্যে কাজগুলির জন্য দরপত্র আহ্বান শুরু হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy