নিজস্ব চিত্র
শিক্ষক নিয়োগে ‘দুর্নীতি’র অভিযোগে ধৃত মডেল-অভিনেত্রী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের দু’টি ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হওয়া প্রায় ৫০ কোটি টাকার মালিক কে, তা নিয়ে এখনও ধন্দে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতার হওয়ার পর দাবি করেছেন, ওই টাকার পাহাড় তাঁর নয়। অর্পিতাও একই দাবি করেছেন। পার্থ আর অর্পিতার সেই ‘টাকা আমার নয়’ উক্তি দিয়ে একটি ব্যানার তৈরি করে শিক্ষাক্ষেত্রে ‘কেলেঙ্কারি’র প্রতিবাদ করলেন বোলপুরের এক টোটোচালক।
বীরভূমের বোলপুরের রাস্তায় টোটো চালান সুকেশ চক্রবর্তী। তাঁর টোটোর পিছনের সাঁটানো রয়েছে একটি ব্যানার। ওই ব্যানারে পার্থ এবং অর্পিতা— দু’জনের ছবি রয়েছে। দু’জনেরই মুখের পাশে বসানো ‘বাব্ল’-এ উক্তি হিসাবে রয়েছে, ‘এ টাকা তো আমার নয়’। ঠিক তার নীচেই লেখা, ‘এ ভগবান, এ টাকা কি তোমার?’। এসএসসি ‘দুর্নীতি’-কাণ্ডে প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ ও তাঁর ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতার গ্রেফতারি এবং বিপুল টাকা উদ্ধারের ঘটনা পরম্পরায় হকচকিয়ে গিয়েছেন সুকেশও। তাঁর কথায়, ‘‘যে ভাবে সাধারণ মানুষের টাকা লুট করে নয়ছয় করা হয়েছে, তা বিশ্বাস করতে পারছি না!’’
দুর্নীতির অভিযোগে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর নাম জড়িয়ে যাওয়ার পর সমাজের সর্বস্তরেই প্রতিবাদ, রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখা গিয়েছে। জোকা ইএসআই হাসপাতালে পার্থকে নিশানা করে জুতো ছুড়তে দেখা গিয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার আমতলার বাসিন্দা শুভ্রা ঘড়ুইকে। সাম্প্রতিক ঘটনাক্রমে শুভ্রার মতো তিনিও যে খানিক ক্রুদ্ধ, তা ভাবভঙ্গিমায় বুঝিয়ে দিতে চাইছেন সুকেশ। তিনি বলেন, ‘‘এত কিছুর পরেও পার্থ আর অর্পিতা দু’জনেই অস্বীকার করছেন। বলছেন, ওই টাকা নাকি তাঁদের নয়! এই ঘটনাকে ব্যঙ্গ করব না তো আর কী করব! এটা আমার প্রতীকী প্রতিবাদ বলতে পারেন।’’ সুকেশের টোটোয় যাঁরা উঠছেন, ওই ব্যানার তো তাঁদের চোখে পড়ছেই। রাস্তায় চলাফেরার সময়েও অনেকের চোখে পড়ছে তা। সুকেশ বলছেন, ‘‘অনেকে দেখে হাসাহাসি করছেন। কেউ কেউ আবার এগিয়ে এসে আমায় বাহবাও দিয়ে যাচ্ছেন। আমার মনে হয়, প্রত্যেকেরই এ বার সরব হওয়া উচিত।’’
শুধু কলকাতায় নয়, বীরভূমের বোলপুর-শান্তিনিকেতন এলাকায় পার্থ ও অর্পিতার নামে একাধিক সম্পত্তির হদিস মিলেছে বলে দাবি করেছেন ইডির তদন্তকারীরা। সেগুলির মধ্যে সব চেয়ে বেশি আলোচনায় রয়েছে শান্তিনিকেতনের ‘অপা’ নামে বাড়িটি। ইডির দাবি, ‘অপা’ থেকে একাধিক নথি বাজেয়াপ্ত হয়েছে ইতিমধ্যেই। বাড়িটি যে পার্থ-অর্পিতা যৌথ ভাবে কিনেছেন, তারও প্রমাণও মিলেছে। এ ছাড়া সোনাঝুরি এলাকার দু’টি বাড়ি— ‘লাবণ্য’ এবং ‘তিতলি’তে পার্থ-অর্পিতার যাতায়াত ছিল বলে জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা। এ সব নিয়ে গোটা রাজ্যের পাশাপাশি বোলপুর-শান্তিনিকেতনও যে সমান ভাবে আলোড়িত, তা সুকেশের প্রতিবাদেই স্পষ্ট।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy