গাছের পরিচর্যা। —নিজস্ব চিত্র।
লালমাটিতে আঙুর ফলিয়ে সাফল্য মিলেছে আগেই। স্বাদের নিরিখে বাঁকুড়ার আম ছাপিয়ে গিয়েছে মালদা, মুর্শিদাবাদকেও। এ বারে কমলালেবু! বাঁকুড়ার মাটিতে এই ফল ফলবে কি না তা জানতে চারা লাগিয়েছিল উদ্যানপালন দফতর। অবশেষে তাতে সাফল্য মিলল। দফতর জানাচ্ছে, এখন অপেক্ষা শুধু এই ফলের চাষ ছড়িয়ে দেওয়ার।
জেলা উদ্যানপালন দফতরের ফিল্ড অফিসার সঞ্জয় সেনগুপ্ত জানান, বছর চারেক আগে নাগপুর থেকে আট হাজার কমলালেবুর চারা জেলায় নিয়ে এসে দফতরের তালড্যাংরা ফার্ম হাউসে চাষ শুরু হয়েছিল। সেখান থেকে তিন হাজার চারা দেওয়া হয়েছিল বাঁকুড়ার দামোদরপুর এলাকার বড় চাষি সিদ্ধার্থ সেনের ফার্ম হাউসে। ২০ বিঘা জমিতে কমলালেবু চাষ শুরু করেন সিদ্ধার্থবাবু। এ বছরই তাঁর জমির গাছ গুলিতে প্রচুর ফল ধরেছে। সিদ্ধার্থবাবুর কথায়, “বানিজ্যিক ভাবেই আমি কমলালেবু চাষ শুরু করেছিলাম। গত নভেম্বরে ফল এসেছে। প্রাথমিক পর্যায়ে এর স্বাদও বেশ মিষ্টি। আশা করছি বাজার ধরতে অসুবিধে হবে না।”
সঞ্জয়বাবু জানান, কমলালেবু গাছ ফল দেওয়া শুরু করে চার বছর পর থেকে। এক বিঘা জমিতে সর্বাধিক ৬৫টি চারা লাগানো যেতে পারে। গাছ পিছু ফলন হয় কমবেশি ৪০ কিলোগ্রাম। তিনি বলেন, ‘‘এই চাষে আলু বা ধানের তুলনায় কয়েক গুন বেশি লাভ পাবেন চাষিরা।’’
গতানুগতিক ধান আর আলুর বাইরে বাঁকুড়ার চাষিদের বিকল্প চাষে উৎসাহ দেওয়ার জন্য প্রশানিক মহলে তোড়জোড় অনেক দিন ধরেই চলে আসছে। উদ্যানপালন দফতরের পাশাপাশি পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদও উদ্যোগী হয়েছে। একশো দিন কাজের প্রকল্পে জেলায় বিকল্প চাষ করে চাষিদের স্থায়ী রোজগারের বন্দোবস্ত করার চেষ্টা করেছে প্রশাসন। ইতিমধ্যেই এই প্রকল্পে জেলার বিভিন্ন ব্লকে কয়েকশো আম বাগান গড়ে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি বছরভর সেই আম বাগান দেখভাল করে ভাল আয় করে। জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু বলেন, “কলা, আম, বর্ষাতি পেঁয়াজের মতো নানা কিসিমের চাষ হয়ে আসছে। এ বারে পরীক্ষামূলক ভাবে কমলালেবু চাষ শুরু হয়েছে। চাষিদের মধ্যে এই চাষ ছড়িয়ে দিতে উদ্যোগী হব।’’
সঞ্জয়বাবু জানান, জেলার দু’জন শিল্পপতিও নিজেদের কয়েকশো বিঘা জমিতে কমলালেবু চাষ করতে আগ্রহ জানিয়ে লিখিত ভাবে উদ্যানপালন দফতরে আবেদন করেছেন। রাজ্যের একাধিক রপ্তানি সংস্থাও বাঁকুড়ার কমলালেবু কিনতে আগ্রহ দেখিয়েছে। ইতিমধ্যেই সিদ্ধার্থবাবুর বাগান দেখে গিয়েছেন ওই সংস্থার লোকজন। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ নাগাদই সিদ্ধার্থবাবুর ফলন ঘরে উঠে যাওয়ার কথা। তার পরেই রপ্তানি সংস্থাগুলির সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা তাঁর।
রাজ্যের অ্যাগ্রো-ইন্ডাস্ট্রি কর্পরেশনের ভাইস চেয়ারম্যান তথা রাজ্য উদ্যানপালন দফতরের প্রাক্তন উপদেষ্টা শুভাশিস বটব্যাল বলেন, “জেলায় কমলালেবু চাষ সফল। এ বারে বানিজ্যিক ভাবে বড় আকারে কমলালেবু চাষ করতে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে তার জন্য আমরা আলোচনায় বসব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy